Samakal:
2025-09-18@05:29:10 GMT

সমাজে তাদের ভয়ের জীবন

Published: 15th, March 2025 GMT

সমাজে তাদের ভয়ের জীবন

‘বড় হয়ে আমি ডাক্তার হবো’– যে শিশুটি মাঝেমধ্যেই বলত এমন কথা, সে এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জামিনের পর থেকে পার্বতীপুরের এই শিশু ও তার পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। শিশুটি ঘর থেকে বের হতে পারে না, লেখাপড়াও বন্ধ । আশপাশের কারও কারও কটু কথা শুনতে হয়। ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবরের ঘটনা। তখন তার বয়স ছিল পাঁচ বছর। পার্বতীপুর উপজেলার জমিরহাট তকেয়াপাড়ায় এই কন্যাশিশুকে ১৮ ঘণ্টা আটকে রেখে ধর্ষণ করে তার খেলার সাথী রেশমার বাবা সাইফুল ইসলাম। ব্লেড দিয়ে শিশুটির প্রজনন অঙ্গ কেটে ফেলা হয়। সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয় ছোট্ট শরীরে। এদিকে, প্রজনন অঙ্গ কেটে ফেলায় পাঁচ বছর অনিয়ন্ত্রিত মূত্র সমস্যার কারণে সে চলাফেরা করতে পারেনি। পরে রাজধানীর বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, সমাজসেবীর সহায়তায় তার চিকিৎসা হলে বর্তমানে প্রায় আধঘণ্টা মূত্র আটকে রাখতে পারে। ৯ বছর ধরে সে ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে।  

ওই বছরের ২০ অক্টোবর তার বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় ঘটনাটি আলোচিত হয়। বিচারে সাইফুলের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। পরে সে আপিল করে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুর জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। দিনাজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দেওয়া এক আবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। 

এ প্রসঙ্গে উই ক্যান অ্যালায়েন্সের জাতীয় সমন্বয়ক জিনাত আরা হক সমকালকে বলেন, ‘কোন গ্রাউন্ড দেখিয়ে হাইকোর্ট থেকে এই আসামি জামিন পায়, তা বোধগম্য নয়। মেয়েটার নিরাপত্তা নিয়ে আমরা খুবই শঙ্কিত। আসামিরা এভাবে জামিন পেলে নারী নির্যাতন আরও বেড়ে যাবে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির সঙ্গে সমাজের মানুষের আচরণ স্বাভাবিক নয়। সমাজ কিংবা রাষ্ট্র কেউ তার নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ বিভিন্নভাবে এই পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হতো। এখন তো মেয়েটির ঘরের সামনে দিয়েই চলাচল করে আসামি। তাদের ঘরের পাশেই আসামির ঘর। 
শুধু এই শিশুই নয়, ধর্ষণ কিংবা শারীরিকভাবে সহিংসতার শিকার অসংখ্য শিশু ও নারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরও জামিন হচ্ছে। এতে ভুক্তভোগীরা আতঙ্কে আছেন। 
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেওয়া প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওয়ালিউর রহমান দোলন বলেন, শুধু ধর্ষণ মামলার আসামিই নয়, এসিড সহিংসতাসহ বিভিন্ন আলোচিত ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে বিভিন্ন উপায়ে আদালত থেকে জামিন পেয়ে যাচ্ছে। এটা সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। এ পরিস্থিতি আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধকে ম্লান করে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোর্টের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার। কোর্টের বাদীপক্ষকে এসব মামলার ব্যাপারে অত্যন্ত সাবধানী ও কঠোর মনোভাবাপন্ন হওয়া উচিত। 

আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের তথ্য অনুযায়ী ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলাগুলোর মধ্যে নিষ্পত্তি হয় সাত ভাগেরও কম। সাজা পায় স্বল্পসংখ্যক আসামি। আইনের ত্রুটি, ফরেনসিক পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা, প্রভাবশালীদের চাপ, অর্থের দাপট এবং সামাজিক কারণে কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও ধর্ষক ভীত হচ্ছে না। 
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান 

(এ্যানী) বলেন, ধর্ষণের অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। অনেক ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। অনেক ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করতে সাহস পায় না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থ বা পেশির দাপটে মামলা তুলে নেওয়া হয়। এতে আসামিরা পার পেয়ে যায়। এখনতো ধর্ষণের মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকেও জামিন দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে সমাজের পুরুষতান্ত্রিক ব্যবহার। পুরুষরা যাই করুক না কেন, সবকিছুতেই তারা পার পেয়ে যায়। আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র নারীর নিরাপত্তা দিতে পারে না। বর্তমানে কন্যাশিশু ও নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনোভাবেই যেন ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিন না পায়। এমনটি ঘটতে থাকলে আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা থাকবে না।

 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট

অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।  

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।  

আরো পড়ুন:

আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা

‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন। 

এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”  

হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”   

এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।  

সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।  

রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।  

এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।  

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ