জিমেইল ব্যবহারকারীদের যে সতর্কবার্তা দিল এফবিআই
Published: 15th, March 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে ১৮০ কোটির বেশি জিমেইল ব্যবহারকারী সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছেন। মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই) সম্প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ‘মেডুসা’ র্যানসমওয়্যার নামে একটি হ্যাকিং গ্রুপ ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য চুরি করার পর জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ফাঁদ পেতেছে।
এফবিআই এবং ইউএস সাইবার সিকিউরিটি ইনফ্রাসট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিআইএসএ) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান এ হামলার শিকার হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
হ্যাকাররা সাধারণত ফিশিং ই–মেইল ও ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। সন্দেহজনক ই–মেইলে থাকা লিঙ্কে ক্লিক করলেই যন্ত্রে ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রবেশ করে। এ ছাড়া যেসব কম্পিউটার ও সফটওয়্যারে নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলোতেও সরাসরি আক্রমণ চালানো হয়। একবার প্রবেশ করতে পারলেই গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো লক করে দেওয়া হয় এবং গোপনে সেগুলোর কপি সংগ্রহ করা হয়। এরপর ব্যবহারকারীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না করলে ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করার হুমকি দেয় হ্যাকাররা।
এফবিআই এবং সিআইএসএ সাধারণ ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য জরুরি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। ব্যক্তিগত ই–মেইল সুরক্ষিত রাখতে দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা (টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) চালু করা প্রয়োজন। এতে লগইনের সময় ব্যবহারকারীকে একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা কোড প্রবেশ করাতে হয়। এতে হ্যাকারদের পক্ষে অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া কঠিন হয়। সফটওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতা দূর করতে সফটওয়্যার নির্মাতারা প্রায়ই নতুন আপডেট প্রকাশ করে, যা সাইবার হামলা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ নথি, ছবি বা সংবেদনশীল তথ্য একাধিক হার্ডড্রাইভ ও নিরাপদ ক্লাউড সার্ভারে ব্যাকআপ রাখা উচিত। কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনে তা প্রিন্ট করেও রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া সন্দেহজনক ই–মেইল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অচেনা বা সন্দেহজনক প্রেরকের কাছ থেকে আসা ই–মেইলে থাকা লিঙ্কে ক্লিক না করাই ভালো। অনেক সময় এ লিঙ্কে ক্লিক করলেই হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি। শুধু বিশ্বস্ত ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া উচিত। যেসব কর্মী অ্যাডমিন কন্ট্রোল বা বিশেষ অনুমতি পান, তাদের এ ক্ষেত্রে সীমিত ব্যবহার ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন। এতে হ্যাকাররা অ্যাডমিন অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারবে না। সাইবার হামলা থেকে রক্ষা পেতে প্রতিষ্ঠানগুলোর নেটওয়ার্ক সেগমেন্টেশন পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে কোনো একটি বিভাগ আক্রান্ত হলেও পুরো নেটওয়ার্ক বিপর্যস্ত হবে না।
মেডুসা ‘র্যানসমওয়্যার অ্যাস আ সার্ভিস’ মডেলে কাজ করে। অর্থাৎ তারা অপরাধীদের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করে এবং সেটি ব্যবহার করে বিভিন্ন হ্যাকার দল সাইবার হামলা চালায়। সফলভাবে মুক্তিপণ আদায় হলে হ্যাকাররা সেই অর্থ মেডুসা গ্রুপের সঙ্গে ভাগ করে নেয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪০টির বেশি হামলার তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অনেক প্রতিষ্ঠান মুক্তিপণ দিয়ে ঘটনাটি গোপন রেখেছে। ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেল অ্যাম্বুলেন্স সংস্থার ২০০ গিগাবাইট ডেটা চুরি করে ৪ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। যুক্তরাজ্যের এইচসিআরজি কেয়ার গ্রুপের ২ দশমিক ৩ টেরাবাইট (২৩০০ গিগাবাইট) তথ্য হাতিয়ে নিয়ে ২০ লাখ ডলার মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
সূত্র: দ্য ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সফটওয় য র ন টওয় র ক ব যবহ র র জন য প রব শ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বদলি নীতিমালা সংশোধনের দাবি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ দাবি করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে নীতিমালা ২০২৪ এর আওতাভুক্ত জেনারেল শিক্ষকদের নিজ বিষয় ও পদের অনুকূলে যেকোনো অধিদপ্তরে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে এ বদলির দাবি জানান তারা
বর্তমানে দেশে প্রায় ৩৮ হাজার ৩২২টি স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২ হাজার ৫৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৬ হাজার ৫১৬ টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে অন্তত ৪ হাজার।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শূন্যপদে বদলি নীতিমালা ২০২৪ প্রকাশিত হয়েছে। এ জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বদলি নীতিমালার মাধ্যমে জেনেছি, স্ব স্ব অধিদপ্তর স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু আমাদের প্রথম থেকেই দাবি ছিল অধিদপ্তর নির্বিশেষে শূন্যপদে বদলি চালু করা। স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি অধিদপ্তরের সাধারণ শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় তথ্য (ইনডেক্স) বদলি সিস্টেমের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করে সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের সমপদ/সমস্কেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যেকোনো অধিদপ্তরের প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সুযোগ দেওয়া অতীব জরুরি।
তারা বলেন, প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদরাসা ও কারিগরির জেনারেল শিক্ষকদের শুধু নিজস্ব অধিদপ্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বদলি করলে জেনারেল শিক্ষকদের সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হবে। কারণ মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের (মাত্র ১২ হাজারের মত) সংখ্যা স্কুল-কলেজের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ। মাদরাসা/কারিগরির জেনারেল শিক্ষকদের সঙ্গে এমন বৈষম্য বর্তমান বৈষম্যবিরোধী সরকারের নীতির পরিপন্থি।
বক্তারা আরও বলেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের শূন্যপদের বদলি নীতিমালা-২০২৪ সংশোধন করে সব বৈষম্য দূর করে মাদরাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল-কলেজে এবং স্কুল-কলেজ থেকে মাদরাসা ও কারিগরিতে যাওয়ার জন্য একই সফটওয়্যারের অথবা ইনডেক্স ট্রান্সফারিং মাধ্যমে দ্রুত বদলির ব্যবস্থা চালুর দাবি জানাচ্ছি।
মানবন্ধনে সংগঠনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহকারী শিক্ষক সাকিবুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মো. শরিফুল, মো. আজাদ, প্রভাষক হুসাইন আলী, মো. আজিজুল হক প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/মেহেদী