প্রতারণার মাধ্যমে হজযাত্রীদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিমানবন্দর থানায় করা মামলার প্রধান আসামি রাজীব মাহমুদকে পুলিশ ১৫ দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশের দাবি, রাজীব বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক ওমরা হজযাত্রীর কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। 

১ মার্চ ‘প্রতারণা চক্রে’র মূলহোতা রাজীবসহ ১৬ জনের নামে ভুক্তভোগী যাত্রীদের পক্ষে মো.

আশরাফুল আলম বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, রাজীব দেশেই আছেন। রাজীবের পরিবারের বরাত দিয়ে মামলার বাদী আশরাফুল আলম বলেন, ‘বাটপার’ রাজীব দেশেই আত্মগোপন করে আছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় হতাশায় দিন কাটছে ভুক্তভোগী হজযাত্রীদের।

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের ভেতরে ‘বার্ডস আই হেলিকপ্টার অ্যান্ড হজ কাফেলা সার্ভিসেস’-এর মালিক রাজীব অফিস খুলে ওমরা হজযাত্রীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, দুই শতাধিক যাত্রীর কাছ থেকে এ অর্থ নেন তিনি। 

এ ব্যপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী রাজীব মাহমুদ বিদেশে পালিয়ে গেছেন। মামলা হওয়ার পর থেকে বিমানবন্দরের ওই অফিস তালাবদ্ধ রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, মামলার ১৬ আসামির মধ্যে রাজীবের স্ত্রীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, মামলা তদন্ত অব্যাহত আছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হজয ত র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ