নর্থ মেসিডোনিয়ায় নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৫১
Published: 16th, March 2025 GMT
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের স্থলবেষ্টিত দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ার কোচানি শহরের একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাঞ্চে তোশকোভস্কি এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার স্থানীয় সময় রাত ২:৩৫ মিনিটে কোচানির একটি জনপ্রিয় নাইটক্লাবে পপ কনসার্ট চলাকালে হঠাৎ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কনসার্টে আসা তরুণদের ব্যবহৃত আতশবাজির কারণে ছাদে আগুন ধরে যায়, যা মুহূর্তের মধ্যেই পুরো ক্লাবে ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আতঙ্কিত মানুষজন প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছে এবং ক্লাবের ভেতরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেকেই ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়েন, অনেকে পুড়ে গুরুতর আহত হন।
ঘটনার পরপরই দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল ও শহরের প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমিয়ে নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান করছেন।
নর্থ মেসিডোনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তোশকোভস্কি জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। পুলিশ ও দমকল বাহিনী তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং ক্লাবটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নর্থ মেসিডোনিয়া সরকার শোক প্রকাশ করেছে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে, স্থানীয় জনগণ ও নিহতদের স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নাইটক্লাবের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।