চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে তামান্না শারমিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

ভিডিওতে ১৭ মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেনকে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে জামিনে ছাড়িয়ে আনবেন বলে জানান স্ত্রী তামান্না শারমিন। তিনি বলেন, ‘আমার জামাই গতকাল (শনিবার) রাতে গ্রেপ্তার হয়েছে, এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মামলা যখন আছে, গ্রেপ্তার হবেই। আপনারা যারা ভাবতেছেন, আর কোনো দিন বের হবে না, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।’ প্রতিপক্ষকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এত দিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা শুরু। খেলা শুরু হবে এখন।’

শনিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার একটি শপিং মলে ঘোরাঘুরি করার সময় সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানা–পুলিশ। এর আগে তাকে ধরতে গত ৩০ জানুয়ারি পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। এর আগের দিন নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে ফেসবুক লাইভে এসে হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ হোসেন।

পুলিশ জানায়, গত জানুয়ারিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে বিবস্ত্র করে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। এরপর ‘ছোট সাজ্জাদ’ ও ‘বুড়ির নাতি’ হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। ফেসবুক লাইভে সাজ্জাদ বলেছিলেন, ‘ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাঁকে নগরের অক্সিজেনে ধরে এনে পেটানো হবে। প্রয়োজনে মরে যাব। কিন্তু হার মানব না।’ এ ছাড়া পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত, তাকে যাতে বদলি করা হয়।’ পরে এ ঘটনায় ওসি আরিফুর রহমান থানায় জিডি করেন। পরে তার অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য পুলিশকে দিতে পারলে তথ্যদাতাকে উপযুক্ত অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেন নগর পুলিশের কমিশনার।

জানা গেছে, গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসের শুরুতে জামিনে বের হন তিনি। সাজ্জাদ বায়েজিদ বোস্তামী থানাসংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো.

জামালের ছেলে। ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি। এতে পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া শাখা থেকে জানানো হয়, সাজ্জাদকে গতকাল শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে তেজগাঁও থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ফ সব ক নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

চারঘাটের নন্দনগাছীতে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।

এ সময় আন্দোলনকারীরা স্টেশন সংস্কার ও আন্তনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। বেলা একটার দিকে কর্মসূচি শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দাবির মধ্যে ছিল সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।

১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধে অংশ নেওয়া লোকজন ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে ট্রেন থামানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদীগামী একটি মেইল ট্রেন এলে স্টেশনে প্রবেশের আগেই জাতীয় পতাকা ও লাল পতাকা নিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন আন্দোলনকারী। তাঁরা ট্রেনের চালকের রুমে গিয়ে ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেন। তাঁরা কেউ রেললাইনে, কেউ ট্রেনের ছাদে উঠে আবার কেউ প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন। প্রায় ১০-১২ মিনিট পর ট্রেনটিকে যেতে দেওয়া হয়।

এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসে চিলাহাটি থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর ট্রেন বরেন্দ্র এক্সপ্রেস। নন্দনগাছী রেলস্টেশনে ট্রেনটির নির্ধারিত যাত্রাবিরতি নেই। তবে দাবি আদায়ের জন্য রেললাইনে সাধারণ লোকজন অবস্থান নেওয়ায় ট্রেন দুটি সেখানে থামতে বাধ্য হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ট্রেনটিকে আটকে থাকার পর আবু সাইদ চাঁদের সহযোগিতায় ট্রেনটি সেখান থেকে রাজশাহীর দিকে রওনা হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ