ইংল্যান্ডের প্রতিটা শহরেই একের অধিক ক্লাব আছে। তবে নিউক্যাসলই একমাত্র শহর যেখানে কেবল একটি ক্লাব। এই ক্লাবের ফুটবলাদের ভালোবেসে সমর্থকরা ‘টুন আর্মি’ ডাকে। সেই টুন আর্মিরা সবশেষ ৭০ বছর জেতেনি কোন ঘরোয়া শিরোপা। ২০২১ সালের আগস্টে সৌদি মালিকানার অধীনে ক্লাবটি গেলে, শিরোপা জেতাটা সময়ের ব্যাপার ছিল। তবে এরপরও সাড়ে তিন বছর লাগল। তবে এসবে সমর্থকদের থোড়াই কেয়ার। অবশেষে ইংল্যান্ডে কোন উল্লেখযোগ্য শিরোপা জিতল দলটি।

সুপার সানডেতে (১৬ মার্চ, ২০২৫) লিগ কাপের ফাইনালে লিভারপুলের মুখোমুখি হয়েছিল নিউক্যাসল। যেখানে ২-১ ব্যবধানে অল রেডদের হারিয়ে ১৯৫৫ সালের পর আবারও কোন ঘরোয়া আসরের শিরোপা উঁচিয়ে ধরল ম্যাগপাইরা।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দর্শকরা মাঠে ঢুকার মুহূর্তে স্কাই স্পোর্টস এক প্রবীন নিউক্যাসল সমর্থকের সাক্ষৎকার নিয়েছিল। সেখানে তাকে কেমন অনূভব করছেন জিজ্ঞেস করলে, তিনি আবেগী উত্তর দেন, “নার্ভাস.

..”। সাংবাদিক এবার বলেন, আপনাকে তো খুবই আবেগী মনে হচ্ছে! এর উত্তরে সেই সমর্থক বলেন, “৬০ বছর ধরে সমর্থন করছি, নিউক্যাসল আমার রক্তে।” এরপর চিরাচরিত নিয়মে সাংবাদিক জনপ্রিয় কথাগুলো আদায় করতে প্রশ্ন করলেন, আপনার কি মনে হয় ৭০ বছরের আক্ষেপ এবার ফুরোতে যাচ্ছে? সমর্থকের উত্তর দিলেন অনেক গভীরভাবে, “শিরোপা জয়ের ব্যাপরটা আমি গায়েই মাখাচ্ছি না, আমি শুধু জানি একটা ‘নবযুগের’ শুরু হতে যাচ্ছে।”

আরো পড়ুন:

অ্যানফিল্ডে রূপকথার গল্প লিখল পিএসজি

অ্যানফিল্ডে জাদু দেখানোর অপেক্ষায় পিএসজি

সমর্থকরা ধরে নিয়েই এসেছে যে, লিভারপুলের কাছে তারা হারতেই পারে, তবে থেমে থাকা যাবে না। শিরোপা জিতুক বা হারুক, তাদের সমর্থন আজীবনই থাকবে। এটাই আসলে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সুপার ফর্মে থাকা লিভারপুলের সাথে নিউক্যাসলের।

১৯৫৫ সালে এফএ কাপ জেতার পর নিউক্যাসল আরেকটা শিরোপা জিতেছে বটে, তবে সেটা ইউরোপে। ১৯৬৯ সালে ফেয়ার্স কাপ জিতেছিল ম্যাগপাইরা। যা বর্তমানে ইউরোপা লিগ। এরপর আরও ৫ বার ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে, যার ৩টি এফএ কাপ ও ২টি লিগ কাপ। সবশেষ ২০২২/২৩ মৌসুমে একই প্রতিযোগিতায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেরে রানার্স আপ হয়েছিল তারা।

অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া লিভারপুল মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে বিধ্বস্ত। হেক্স ( একই মৌসুমে ৬ শিরোপা) জেতার মৌসুমে গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে তারা পিএসজির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেয়। এরপর গতরাতে লিগা কাপ খোয়ালো আর্নে স্লটের দল।

৬৫ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখেও গোলের জন্য লিভারপুল নিতে পারে কেবল সাতটি শট, এর দুটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে নিউক্যাসলের ১৭ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। ড্যান বার্নের ৪৫ মিনিটের গোলে প্রথমার্ধ শেষ করে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে। বিরতির পর ৫২ মিনিটে আলেক্সান্ডার ইসাকের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি।

আট মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে নিউক্যাসলের জালে বল পাঠান ফ্রেদরিক চিয়েসা। শুরুতে অফসাইড দিলেও ভিএআরের সাহায্যে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। তাতে জেগে ওঠে লিভারপুলের আশা। তবে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার বাকি সময়টায় গোলের আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি অল রেডরা।

তাতেই শেষ হয় নিউক্যাসলের ৫৬ বছরের আক্ষেপ। ওয়েম্বলিতে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী ছিল নিউক্যাসলের তিন প্রজন্ম। যারা প্রিয় ম্যাগপাইদের ঘরোয়া শিরোপা জিততে দেখেনি। নিউ ক্যাসলের হয়ে প্রথম গোল করা ড্যান বার্ন তো বলেই ফেললেন, “আমি আজ ঘুমাবো না, কারণ আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নে আছি।” টুনেও (নিউক্যাসল) কাল রাতে হয়ত কেউ ঘুমাতে পারেনি। তাদের মধুর স্বপ্ন যে চলছেই। সারা পৃথিবীতে আকাশ তার জাগাতে থাকলেও, উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের নিউক্যাসলে গতরাতের আকাশ নেমে এসেছিল মাটির কাছেই।

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার