লিভারপুলকে হারিয়ে নিউক্যাসলের ৭০ বছরের আক্ষেপ ফুরাল
Published: 17th, March 2025 GMT
ইংল্যান্ডের প্রতিটা শহরেই একের অধিক ক্লাব আছে। তবে নিউক্যাসলই একমাত্র শহর যেখানে কেবল একটি ক্লাব। এই ক্লাবের ফুটবলাদের ভালোবেসে সমর্থকরা ‘টুন আর্মি’ ডাকে। সেই টুন আর্মিরা সবশেষ ৭০ বছর জেতেনি কোন ঘরোয়া শিরোপা। ২০২১ সালের আগস্টে সৌদি মালিকানার অধীনে ক্লাবটি গেলে, শিরোপা জেতাটা সময়ের ব্যাপার ছিল। তবে এরপরও সাড়ে তিন বছর লাগল। তবে এসবে সমর্থকদের থোড়াই কেয়ার। অবশেষে ইংল্যান্ডে কোন উল্লেখযোগ্য শিরোপা জিতল দলটি।
সুপার সানডেতে (১৬ মার্চ, ২০২৫) লিগ কাপের ফাইনালে লিভারপুলের মুখোমুখি হয়েছিল নিউক্যাসল। যেখানে ২-১ ব্যবধানে অল রেডদের হারিয়ে ১৯৫৫ সালের পর আবারও কোন ঘরোয়া আসরের শিরোপা উঁচিয়ে ধরল ম্যাগপাইরা।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দর্শকরা মাঠে ঢুকার মুহূর্তে স্কাই স্পোর্টস এক প্রবীন নিউক্যাসল সমর্থকের সাক্ষৎকার নিয়েছিল। সেখানে তাকে কেমন অনূভব করছেন জিজ্ঞেস করলে, তিনি আবেগী উত্তর দেন, “নার্ভাস.
আরো পড়ুন:
অ্যানফিল্ডে রূপকথার গল্প লিখল পিএসজি
অ্যানফিল্ডে জাদু দেখানোর অপেক্ষায় পিএসজি
সমর্থকরা ধরে নিয়েই এসেছে যে, লিভারপুলের কাছে তারা হারতেই পারে, তবে থেমে থাকা যাবে না। শিরোপা জিতুক বা হারুক, তাদের সমর্থন আজীবনই থাকবে। এটাই আসলে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সুপার ফর্মে থাকা লিভারপুলের সাথে নিউক্যাসলের।
১৯৫৫ সালে এফএ কাপ জেতার পর নিউক্যাসল আরেকটা শিরোপা জিতেছে বটে, তবে সেটা ইউরোপে। ১৯৬৯ সালে ফেয়ার্স কাপ জিতেছিল ম্যাগপাইরা। যা বর্তমানে ইউরোপা লিগ। এরপর আরও ৫ বার ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে, যার ৩টি এফএ কাপ ও ২টি লিগ কাপ। সবশেষ ২০২২/২৩ মৌসুমে একই প্রতিযোগিতায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে হেরে রানার্স আপ হয়েছিল তারা।
অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া লিভারপুল মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে বিধ্বস্ত। হেক্স ( একই মৌসুমে ৬ শিরোপা) জেতার মৌসুমে গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে তারা পিএসজির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেয়। এরপর গতরাতে লিগা কাপ খোয়ালো আর্নে স্লটের দল।
৬৫ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখেও গোলের জন্য লিভারপুল নিতে পারে কেবল সাতটি শট, এর দুটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে নিউক্যাসলের ১৭ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। ড্যান বার্নের ৪৫ মিনিটের গোলে প্রথমার্ধ শেষ করে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে। বিরতির পর ৫২ মিনিটে আলেক্সান্ডার ইসাকের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি।
আট মিনিট যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে নিউক্যাসলের জালে বল পাঠান ফ্রেদরিক চিয়েসা। শুরুতে অফসাইড দিলেও ভিএআরের সাহায্যে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি। তাতে জেগে ওঠে লিভারপুলের আশা। তবে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার বাকি সময়টায় গোলের আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি অল রেডরা।
তাতেই শেষ হয় নিউক্যাসলের ৫৬ বছরের আক্ষেপ। ওয়েম্বলিতে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী ছিল নিউক্যাসলের তিন প্রজন্ম। যারা প্রিয় ম্যাগপাইদের ঘরোয়া শিরোপা জিততে দেখেনি। নিউ ক্যাসলের হয়ে প্রথম গোল করা ড্যান বার্ন তো বলেই ফেললেন, “আমি আজ ঘুমাবো না, কারণ আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নে আছি।” টুনেও (নিউক্যাসল) কাল রাতে হয়ত কেউ ঘুমাতে পারেনি। তাদের মধুর স্বপ্ন যে চলছেই। সারা পৃথিবীতে আকাশ তার জাগাতে থাকলেও, উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের নিউক্যাসলে গতরাতের আকাশ নেমে এসেছিল মাটির কাছেই।
ঢাকা/নাভিদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় এক কৃষকের মরিচখেতে একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান তাঁর মরিচখেতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় ওই গ্রেনেড পান। বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপর বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশকে জানানো হয়।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মখলিছুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড সাদৃশ্য ওই বস্তু দেখতে পায়। এরপর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় থাকা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ঘটনাটি জানানো হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে লেফটেন্যান্ট আল হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে প্রথমে এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করার উদ্যোগ নেন তাঁরা। নিষ্ক্রিয় করার সময় গ্রেনেডটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। চারপাশের মাটি গর্ত হয়ে যায়।
সেনা কর্মকর্তা আল হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেনেডটি বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে ১০০ বছরের কমবেশি সময়ে সক্রিয় থাকে। তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর উচিত ছিল আগেই বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো। এটি বিস্ফোরিত হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হতে পারত।