বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ নিয়ে রিট শুনতে বিব্রত বিচারপতি, নথি যাবে প্রধান বিচারপতির কাছে
Published: 17th, March 2025 GMT
‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে রিট শুনতে বিব্রতবোধের কথা জানিয়ে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
ওই অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আহসানুল করিম ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, অধ্যাদেশ নিয়ে রিট, বিচারক নিয়োগে কাউন্সিল বিষয়ে।
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ‘আমি এখানে পক্ষ। কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে সভায় ছিলাম। তাই আবেদনটি শুনতে পারছি না।’
রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেন আদালত।
এ সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আরজি জানান।
পরে আদালত বিব্রতবোধের কথা উল্লেখ করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন।
আইনজীবীরা বলছেন, বিষয়টি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি শুনানির জন্য যে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন, সেই বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন। এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়।
অধ্যাদেশের ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অধ্যাদেশটির কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নিরপরাধ দাবি হিটু শেখের, ভিন্ন কথা সাক্ষীদের
আলোচিত শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তৃতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে মাগুরায়। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এদিনও মামলার প্রধান আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ আদালত কক্ষে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন। কিন্তু আদালত সূত্র জানায়, সাক্ষীরা প্রত্যেকে হিটু শেখের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার ছিল এই মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ। সেদিনও শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হিটু শেখ নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন।
গতকাল কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হিটু শেখসহ ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, গত তিন কার্যদিবস টানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। গতকাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষীদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, আছিয়ার বোন হামিদা ছিলেন। এ নিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। এ মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আজ বুধবার মাগুরা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাক্ষ্য দেবেন। গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
গতকালও আদালত কক্ষে ঢোকার আগে হিটু শেখ ঘটনার জন্য তাঁর পুত্রবধূ আছিয়ার বোনকে দায়ী করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। হিটু শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমিসহ আমার দুই ছেলে বাড়িতে ছিলাম না। সকালে বাইরে যাওয়ার সময়ও আছিয়াকে সুস্থ দেখে গেছি। আছিয়ার বোন এ সময় একাই বাড়িতে ছিল। সাংবাদিকরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখেন। দোষী হলে যে শাস্তি হয়, মাথা পেতে নেব।
বোনের বাড়ি বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশু আছিয়া। ঢাকা সিমএমএইচে ১৩ মার্চ তার মৃত্যু হয়।