আগুনে আটকে পড়াদের বাঁচাতে গিয়ে মারা গেলেন ২৫ বছর বয়সী ফুটবলার
Published: 17th, March 2025 GMT
নৈশ ক্লাবে ভয়াবহ আগুন লেগেছিল। ২৫ বছর বয়সী ফুটবলার আন্দ্রেজ লাজারভ নিজের জীবনের পরোয়া করেননি। নৈশ ক্লাবের ভেতরে আটকে পড়া জীবিতদের উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত লাজারভ আর বেঁচে ফিরতে পারেননি।
উত্তর মেসিডোনিয়ার কোচানিতে পালস ক্লাবে গতকাল এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। অফিশিয়ালদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানিয়েছে, এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৫৯, আহত আরও ১৫৫। লাজারভ উত্তর মেসিডোনিয়ার শীর্ষ লিগের ক্লাব এফসি স্কোপাইয়ের মিডফিল্ডার ছিলেন।
আরও পড়ুনসাকিব ‘মেগাস্টার’, আমি ওই পর্যায়ে যাইনি: বললেন হামজা২ ঘণ্টা আগেক্লাবটির পক্ষ থেকে নিজেদের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা শোকবার্তায় লেখা হয়, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি যে আমাদের ফুটবলার আন্দ্রেজ লাজারভ কোচানিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকারদের একজন। আগুনের শিখা থেকে বাকিদের বাঁচাতে গিয়ে লাজারভ তাঁর জীবন হারিয়েছেন। এই সাহসী কাজের সময় ধোঁয়ার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। চূড়ান্ত মুহূর্তে তাঁর এই সাহসিকতা ও মানবিকতা সব সময় স্মরণ রাখা হবে।’
মেসিডোনিয়ার অনূর্ধ্ব–১২ দলে খেলা লাজারভ গত সেপ্টেম্বরে স্কোপাইয়ে যোগ দেন। এর আগে খেলেন ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব এইচএনকে গোরিকায়। রাজধানী স্কোপাই থেকে ১০০ কিলোমিটার পুবের শহর কোচানির পালস ক্লাবে এ ঘটনায় অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা দ্রুত ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
মেসিডোনিয়ান হিপহপ ব্যান্ড ডিএনকের সেখানে কনসার্ট ছিল। হাজারখানেক মানুষ এই কনসার্ট দেখতে সেখানে জমায়েত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে মেইল অনলাইন। উত্তর মেসিডোনিয়ার বার্তা সংস্থা মিয়া.
অনলাইন মিডিয়া আউটলেট এসডিকের বরাত দিয়ে মেইল অনলাইন জানিয়েছে, কনসার্ট শুরু হয় মধ্যরাতে আর আগুন লেগেছে আনুমানিক স্থানীয় সময় রাত তিনটার দিকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ভয়াবহ আগুনের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
কনসার্টের ভেন্যুর ভেতরকার ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, মঞ্চে আতশবাজির জন্য পাইরোটেকনিকস ব্যবহার করা হয়, যা দাহ্য পদার্থ। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্যান্স টসকোভস্কি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আগুন লাগার সম্ভাব্য কারণ হতে পারে পাইরোটেকনিকস থেকে অগ্নিশিখা মঞ্চের সিলিংয়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যেটা খুবই দাহ্য পদার্থ দিয়ে বানানো। বিবিসির ভেরিফাই করা ফুটেজে দেখা গেছে, সিলিংয়ের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন কনসার্টের উপস্থিতরা। জীবন বাঁচাতে হুড়াহুড়ি ও দৌড়াদৌড়িও করছেন তাঁরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাজারভকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ফুটবলপ্রেমীরা। একজন লেখেন, ‘সত্যিকারের নায়ক।’ আরেকজন লেখেন, ‘সত্যিকারের নায়কেরা সাহসী হন।’ অন্য এক ফুটবলপ্রেমী লেখেন, ‘তুমি অন্যদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে মারা গিয়েছ। এটাই সাহসিকতার সংজ্ঞা।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কনস র ট
এছাড়াও পড়ুন:
একজন মার্করাম, একটি সেঞ্চুরি এবং ২৭ বছর পর একটি ট্রফি
কে বেশি ক্লান্ত—ক্রিকেট না দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রিকেটের ক্লান্তি দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিতে না পারার আর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লান্তি ক্রিকেটের কাছ থেকে বৈশ্বিক কোনো শিরোপা নিতে না পারার! অবশেষে ক্লান্তির সেই কবিতার ক্লাস শেষ হলো। ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে কিছু দিল অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট খেলাটিকে দায়মুক্ত করল তার কাছ থেকে একটি বিশ্বকাপ নিয়ে! ক্রিকেটকে দায়মুক্ত করা বা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতার একঘেয়ে ক্লান্তি ঘোচানোর নায়ক কে? লর্ডসে ২০২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ম্যাচটি বিশ্লেষণ করলে প্রশ্নটিকে অতীব সহজ মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। উত্তরটাও সবার এখন জানা। একবাক্যে সবাই বলবেন, নায়কের নাম এইডেন মার্করাম।
টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি—ক্রিকেটের যে সংস্করণের কথাই বলুন, দক্ষিণ আফ্রিকা খেলাটির অন্যতম পরাশক্তি। কিন্তু ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে হওয়া আইসিসি নকআউট ট্রফি (মিনি বিশ্বকাপ) ছাড়া আজকের আগপর্যন্ত কোনো বৈশ্বিক ট্রফি প্রোটিয়াদের ছিল না।
অবশেষে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মাথায় বিশ্বসেরার মুকুট উঠল, ক্রিকেট-তীর্থ নামে পরিচিত লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক মেইস বা গদা তুলে ধরেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই দলটির অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৭ বছর পর বড় কোনো টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকা বলতে গেলে একা হাতে শিরোপা জিতিয়েছেন মার্করাম। আরও স্পষ্ট করে বললে আসলে প্রোটিয়াদের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দিয়েছে মার্করামের ইতিবাচকতা, আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্ব নিয়ে খেলার দৃঢ়তা।
ঠিক ১১ বছর আগে মার্করাম নিজেকে ঠিক এ রকম তিনটি শব্দেই বর্ণনা করেছিলেন। সালটা ২০১৪, সেবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ছিলেন মার্করাম। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আইসিসির এক অনুষ্ঠানে মার্করামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল—নিজেকে তিনটি মাত্র শব্দে কীভাবে বোঝাবেন। উত্তর যেন মুখস্থ, এমনভাবেই ১৯ বছর বয়সী তরুণ মার্করামের উত্তর ছিল—ইতিবাচক, আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান।
সেঞ্চুরির পর মার্করাম