এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব বাতিল, এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) বিভাগের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার সংস্থার পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। এ সময় তারা বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূইঁয়ার পদত্যাগের দাবি জানান। 

বেবিচক কর্মীরা এদিন সকাল ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংস্থার সদরদপ্তরের সামনের রাস্তা অবরোধ করে রাখায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছে কর্মীদের শান্ত করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা রাস্তা ছেড়ে সিভিল এভিয়েশন সদরদপ্তর এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং সংস্থার চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও দখলদার হঠাওসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দেখা করার আশ্বাস পেলে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে দাবি না মানা হলে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে কর্মচারীদের বিক্ষোভ ও দাবি প্রসঙ্গে বেবিচকের জনসংযোগ কর্মকর্তা কাওছার মাহমুদ সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে একটি নতুন বাহিনী গঠনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি এবং বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ