শামসুল হুদা অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক। চার দশক ধরে তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু এবং প্রান্তিক মানুষের ভূমি অধিকারের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি ভূমি অধিকার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ২০১৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল ল্যান্ড কোয়ালিশনের (আইএলসি) আজীবন স্বীকৃতি লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সমকালের সহযোগী সম্পাদক শেখ রোকন ও জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মাহফুজুর রহমান মানিক।

সমকাল: জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত সেপ্টেম্বরে ভূমি ও কৃষি সংস্কারে একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন। সে কমিশন হয়নি। এটি কতটা জরুরি বলে আপনারা মনে করেন?

শামসুল হুদা: আমরা ভূমি ও কৃষি সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে যেমন সংবাদ সম্মেলন করেছি, তেমনি ৭০-৮০ হাজার মানুষের স্বাক্ষরসহ এ দাবি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দিয়েছি। তারপরও এটি না হওয়ার কারণে এটি স্পষ্ট– ভূমি ও কৃষি সংস্কার কমিশন গঠন তাদের অগ্রাধিকারে নেই। অগ্রাধিকার না থাকার কারণ, আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র এলিটবান্ধব। নিচের দিকের ৭০ শতাংশ মানুষের অগ্রাধিকার আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ কাঠামো ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকারে নেই। অন্তর্বর্তী সরকারে এ বিষয়ে সক্রিয় উপদেষ্টা থাকার পরও হয়নি।

সমকাল: জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আপনারাও ছিলেন। আপনাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে যে সরকার এসেছে, তারাও এটা করেনি?

শামসুল হুদা: আন্দোলনটি ছিল প্রধানত শিক্ষার্থীদের। সাধারণ মানুষ তাতে যুক্ত হয়। আমরাও নাগরিক সমাজের যারা সমাজ কাঠামো পরিবর্তনে বিশ্বাস করি, তারা এর সঙ্গে যুক্ত হই। এ আন্দোলনের ফসল হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও তারা ভূমি ও কৃষি সংস্কার কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয়নি। অথচ সে আন্দোলনের মূলে ছিল বৈষম্য নিরসন। বাস্তবে বৈষম্য নিরসনে এ সরকারের প্রতিশ্রুতি ফিকে হয়ে আসছে। ভূমি ও কৃষির দিক থেকে যে বৈষম্য বিদ্যমান, সেখানে সংস্কার কমিশন গঠন জরুরি ছিল। অন্য অনেক কমিশন হয়েছে। এ কমিশন না করাটা বিস্ময়কর। 

সমকাল: এতে কৃষকও নিশ্চয় লাভবান হতো…।

শামসুল হুদা: জীবন-জীবিকার জন্য গ্রামের মানুষ ভূমি ও কৃষির ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। তাদের কাজের জন্যই আমরা খেয়েপরে বেঁচে আছি। কৃষিতে আমরা প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্য আমাদের তেমন আমদানি করতে হয় না। যে ১০ শতাংশ আমদানি করতে হয়, তা নিয়েই আমাদের হিমশিম খেতে হয়। যদি ৫০ শতাংশ খাদ্য আমদানি করা লাগত, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যেত। এখানে অবদান কৃষকের। দেশের প্রান্তিক মানুষই এর জোগান দেয়। তারাই সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত শ্রেণি। এ অবহেলার কারণেই ভূমি ও কৃষি কমিশন গঠন গুরুত্ব পায়নি। বিগত অর্ধশত বছর ধরেই এমন অবহেলা আমরা দেখে আসছি। 

সমকাল: কমিশন কী করতে পারত?

শামসুল হুদা: কমিশন নানামুখী কাজ করতে পারত। কৃষি ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম তুলে আনতে পারত। আজকে কৃষি ব্যবস্থাপনায় যে অনিয়ম, দুর্নীতি তা তুলে ধরতে পারত। আজ আমাদের কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে। কমিশন সেখানে ভূমি সংস্কার সুপারিশ করতে পারত। কৃষিজমি রক্ষা করতে না পারলে আমাদের ওপর বিপদ নেমে আসবে। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের নামে; রাস্তাঘাট, ইটভাটা ইত্যাদির নামে কৃষিজমি ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের পাহাড় যেমন ধ্বংস হচ্ছে, তেমন কৃষিজমিও কমে যাচ্ছে। ইটভাটার কারণে টপ সয়েল নষ্ট হচ্ছে। এগুলো খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি তৈরি করছে। কমিশনের প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এলে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারত।

সমকাল: ২০২৩ সালে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার নামে একটা আইন হয়েছিল। এ নিয়ে আপনারা সমালোচনা করেছেন। এখানে সমস্যা কোথায়?

শামসুল হুদা: এ আইন ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার নামে হলেও এর দ্বারা দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হবে; সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়বে। যার ভূমির কোনো কাগজপত্র নেই, তাকে উচ্ছেদ করা হবে। এখানে বস্তির মানুষ উচ্ছেদ হবে; বাঁধের পাশে আশ্রয় নেওয়া মানুষ উচ্ছেদ হবে। খাসজমিতে যেসব নদীভাঙা পরিবার আশ্রয় নিচ্ছে, তারা উচ্ছেদ হবে। পাশাপাশি আদিবাসীদেরও উচ্ছেদের সুযোগ তৈরি হবে। অর্থাৎ ভূমির কাগজপত্র না থাকলেই বিপদ। আরও জরুরি বিষয়, সিভিল কোর্টে যেখানে জায়গা-জমির মামলা নিষ্পন্ন হয়, সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মোবাইল কোর্টকে। এটি এক অর্থে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। এতে দুর্নীতি প্রশ্রয় পাবে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা আমরা জানি। এখানে কোনো কৃষক নেই। উচ্চ শ্রেণির ব্যক্তিরা আছে। অথচ কৃষককে প্রতিনিয়ত নানা করের বোঝা সইতে হয়। আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীদেরও সেইভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

সমকাল: কেন?

শামসুল হুদা: আমরা যে উচ্চফলনশীল বীজ দেখছি, সেগুলো কাদের? বহুজাতিক কোম্পানি থেকে কেনা। অথচ আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীরা অনেক উচ্চফলনশীল বীজ উৎপাদন করলেও তাদের কদর নেই। এই যে পঞ্চব্রীহি ধান উৎপাদন করলেন আবেদ চৌধুরী। বছরে পাঁচবার ফলনের এ ধান রাষ্ট্র থেকে কেন গ্রহণ করা হচ্ছে না? বহুজাতিক কোম্পানির এজেন্টরাই তার বিরোধিতা করেছে। দেশি জাতের বীজ, অর্গানিক সার ইত্যাদির ব্যাপারে আমাদের উদ্যোগ নেই। এ ধরনের উদ্যোগকে প্রমোট করা জরুরি। গবাদি পশুতে আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। কোরবানির সময় আগে যেখানে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা গরুতে মাঠ ভরে যেত, এখন সেখানকার পশু ছাড়াই আমরা কোরবানি দিতে পারছি। গত ১০ বছরে এ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে।

সমকাল: আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিয়ে আপনারা সোচ্চার। তাদের বঞ্চনার মূল কারণ কী?

শামসুল হুদা: আদিবাসীদের ভূমি বঞ্চনার নানা কারণ আছে। আদিবাসী শব্দটি নিয়েই এক ধরনের ভুল ধারণা অনেকের মনে আছে– আদি বাসিন্দা বুঝি আদিবাসী। আসলে তা নয়। আদিবাসীরা ‘ইনডিজেনাস পিপল’। তাদের অধিকার নিশ্চিতে জাতিসংঘের বেশ কিছু কনভেনশন আছে। বাংলাদেশ কিন্তু অনুস্বাক্ষর করেছে সেগুলোতে। ১৯৭২ সালেই আইএলও কনভেনশন নম্বর-১০৭ অনুসমর্থন করে বাংলাদেশ। এ কনভেনশনে আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ভূমির মালিকানা ও অধিকার স্বীকৃত। এতে বলা হয়েছে, ‘আদিবাসীদের দলিল থাকুক বা না থাকুক, যে জমি ঐতিহ্যগতভাবে তারা ব্যবহার করে, সে জমি তাদের।’ কিন্তু এ কনভেনশনের আলোকে জাতীয় পর্যায়ে আইন বা নীতিমালা হয়নি এখনও। আন্তর্জাতিক সনদের বাস্তবায়ন না হওয়া এবং এসবের আলোকে আইন না থাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো তাদের ভূমি রক্ষা করতে পারছে না। যেহেতু বাংলাদেশ সরকার আইএলও কনভেনশন ১০৭-এ অনুস্বাক্ষর করেছে, সেহেতু আদিবাসীদের কাগজবিহীন সমষ্টিগত ভূমি মালিকানার বিষয়টি দেশের আইনে পরিণত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। 

সমকাল: তাদের জমির ব্যক্তিমালিকানার কাগজপত্র না থাকা কি সমস্যা?

শামসুল হুদা: আদিবাসীরা বংশপরম্পরায় যে জমি ব্যবহার করে, সেখানে গোষ্ঠীবদ্ধ সমাজ হিসেবে তারা সামষ্টিক মালিকানায় বিশ্বাস করে। তাদের জমির ব্যবস্থাপনা সামষ্টিকভাবে করা হয়। তাদের কৃষিজমি, জুমের জমিও তারা চাষের ক্ষেত্রে ভাগ করে নিয়ে সবাই মিলে চাষাবাদ করে। এই সামষ্টিক ব্যবস্থাপনার কারণে আদিবাসী নিজেদের কাছে জমির দলিল থাকে না। এটা নেই বলে তো তারা অধিকারবঞ্চিত হতে পারে না। তারা তো এই দেশের নাগরিক। দেশে দুই শ্রেণির আদিবাসী আছে। এক শ্রেণির আদিবাসী বাস করে পাহাড়ে, অন্য শ্রেণি সমতলে। সমতলের আদিবাসীরা দেশের অধিকাংশ জেলাতেই ছড়িয়ে আছে। আদিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ, বৈচিত্র্য রাষ্ট্রের শক্তি। 

সমকাল: কৃষিতে নারীরা যেভাবে অবদান রাখছে, সেভাবে কি তাদের স্বীকৃতি আছে?

শামসুল হুদা: অধিকারের দিক থেকে আমাদের নারীরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মতোই বঞ্চিত। এই তথ্য হয়তো আমরা জানি না যে, কৃষিতে ৭০ শতাংশই হচ্ছে নারীশ্রম। তার মানে, আমাদের টেবিলে যে খাবার আমরা পাই সেখানে ৭০ শতাংশই নারীর অবদান। তারা বীজ রোপণ থেকে শুরু করে ফসল কাটা পর্যন্ত প্রায় সব কাজ করে থাকে। বাজারেও কৃষিপণ্য বিক্রেতা হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। অনেক জায়গায় নারীরা দলভিত্তিক লিজ নিয়ে ফসল ফলায়। লিজ নিতে গেলে তাকে অর্থ দিতে হয়। কিন্তু নারীরা ঠিকমতো ব্যাংক ঋণও পায় না। কৃষকের জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী ও প্রান্তিক কৃষকের নির্দিষ্ট অংশ নিশ্চিত করলে এর সুফল যথাযথ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছবে। 

সমকাল: খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়েও অভিযোগ কম নয়…।

শামসুল হুদা: খাসজমি সরকার বরাদ্দ দেয়। এ জমি বন্দোবস্তের আলাদা নীতিমালা আছে। তাতে আছে, ভূমিহীনরা এ জমি পাবে। বাস্তবে তারা তা পায় না। বিগত সরকারের আমলে আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করে উত্তর পেয়েছি, খাসজমিতে শিল্পায়ন হবে। আমি ভূমি কর্মকর্তাদের কাছে প্রজ্ঞাপন দেখতে চেয়েছি। তারা প্রজ্ঞাপন দেখাতে পারেননি। তারা বলছেন, মৌখিকভাবে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন। চরের জমিতে শিল্পায়ন হবে কীভাবে? এ জমি তো কৃষির জন্যই রাখতে হবে। শহরে কর্মসংস্থানের নানা মাধ্যম আছে। গ্রামে তা নেই বলেই আমরা পরিসংখ্যানে দেখছি, সেখানে দারিদ্র্যের হার বেশি। গ্রামে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না; সেখানে সম্পদ যাচ্ছে না। বিগত সরকারের আমলে জিডিপির প্রবৃদ্ধির কথা বলা হতো। মাথাপিছু আয়ের এ হিসাবে প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায় না। কৃষিজমি কৃষকের হাতে থাকা দরকার। এ জন্য জমির পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। 

সমকাল: এক ব্যক্তির মালিকানায় কত পরিমাণ জমি থাকতে পারে?

শামসুল হুদা: আমরা দেখছি, অনেকে শহরে বাস করে। তার জীবিকার অন্য মাধ্যম আছে। তারপরও গ্রামে দেখা যায় তার ৫০ বিঘা কিংবা ১০০ বিঘা বা তার চেয়েও বেশি জমি থাকে। এক ব্যক্তির মালিকানায় কত জমি থাকবে– এ ব্যাপারে নির্দেশনা থাকলেও মানা হয় না। এক সময় ছিল ১০০ বিঘা। আশির দশকে সেটি কমিয়ে ৬০ বিঘা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সম্প্রতি দেখেছি, সাবেক কয়েক মন্ত্রীর মালিকানায় শত শত বিঘা জমি রয়েছে। একজন মন্ত্রীর সাড়ে ৯শ বিঘা জমি জব্দ করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ আনিসুর রহমান অনেক আগেই প্রস্তাব করেছিলেন, একজনের মালিকানায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘার বেশি জমি থাকা উচিত নয়। যারা শ্রম দেবে, কৃষিজমি তাদের হাতেই থাকা উচিত। 

সমকাল: নদী-খাল-বিল দখলও নিশ্চয় ভূমির অন্যতম সমস্যা?

শামসুল হুদা: আমরা দেখছি, নদী-খাল-বিল, হাওর দখল হয়ে যাচ্ছে। হাওরকে হাওরের মতো থাকতে দিতে হবে। হাওর ক্রমাগত ভরাট হওয়ায় সেখানে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। হাওরগুলোর ড্রেজিং দরকার। ঢাকার চারপাশের নদীগুলো শিল্পায়নের কারণে বিপর্যস্ত। বুড়িগঙ্গার পর এখন শীতলক্ষ্যার অবস্থাও সঙ্গিন। আপনি হবিগঞ্জের পথে যান; দেখবেন, শিল্পায়নের কারণে সেখানকার নদীগুলো দূষিত হওয়ায় পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে মানুষের বসবাস করাই দায়। এমনকি মাটিদূষণের কারণে কৃষিজমির উৎপাদনেও প্রভাব পড়েছে। প্রতিবছর নদীভাঙনে অনেক মানুষ ভিটেমাটি হারায়। এক হিসাবে দেখা যায়, গড়ে প্রতিবছর এক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। তারা হয়তো শহরে গিয়ে বস্তিতে ওঠে। তাদের পরিবারের দুর্দশার খবর কি আমরা রাখি? এসব পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনার নিশ্চয়তা নেই। এরা ভাসমান হিসেবে কোনো রকম জীবন যাপন করে। আমরা যে, ভূমি ও কৃষি সংস্কার কমিশনের দাবি জানিয়েছিলাম, সেখানেও নদীর এই চিত্র উঠে আসত।

সমকাল: সরকার যেহেতু কমিশন গঠন করেনি, এ ব্যাপারে আপনাদের কি কোনো পরিকল্পনা আছে? 

শামসুল হুদা: আমরা আমাদের প্রস্তাব কিছুদিনের মধ্যে প্রকাশ করব এবং সেগুলো নিয়ে জনমত গড়ে তুলব। এ সরকার যদি কিছু নাও করে, ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে তাদের কাছে আমরা দাবি নিয়ে যাব। প্রান্তিক মানুষের ভূমির অধিকার; খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিরাপত্তার অধিকার নিয়ে আমরা সোচ্চার থাকব। 

সমকাল: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

শামসুল হুদা: আপনাদেরও ধন্যবাদ। সমকালের জন্য শুভকামনা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কনভ নশন র জন য ব স কর মন ত র আম দ র খ সজম গ রহণ সরক র আপন র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ