কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ধীরে ধীরে সফটওয়্যার তৈরির ধরন বদলে দিচ্ছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করছেন, আগামী দিনে সফটওয়্যারের কোড লেখার কাজটি এআইয়ের কারণে পুরোপুরি অটোমেটেড হয়ে যাবে। তবে এ নিয়ে মতবিরোধও রয়েছে। কেউ একে যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে বাড়তি প্রচারণা ছাড়া কিছু মনে করছেন না।

সম্প্রতি এক আলোচনায় এআই গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডারিও আমোডেই দাবি করেছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ সফটওয়্যার কোডই স্বয়ংক্রিয়ভাবে লিখে দেবে এআই। এর ফলে ভবিষ্যতে সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের ভূমিকা কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা লিনাস টরভাল্ডস এআই নিয়ে চলমান উন্মাদনাকে ‘৯০ শতাংশ মার্কেটিং ও ১০ শতাংশ বাস্তবতা’ বলে মন্তব্য করেছেন। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টিএফআইআরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এআই অবশ্যই আকর্ষণীয়, তবে আমি আপাতত এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’ তাঁর মতে, সফটওয়্যার–শিল্পে সত্যিকার অর্থে কার্যকর পরিবর্তন আসতে আরও অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, ভাষাগত মডেল ও গ্রাফিক ডিজাইন সফটওয়্যার ইতিমধ্যে বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।

মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন জানিয়েছেন, বর্তমান জেনারেটিভ এআই ও বৃহৎ ভাষার মডেল (এলএলএম) আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, বর্তমান এআই প্রযুক্তির প্রধান সীমাবদ্ধতা হলো ফিজিক্যাল অ্যাওয়ারনেস, কন্টিনিউয়াস মেমোরি, যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও জটিল পরিকল্পনার সক্ষমতার অভাব। তাঁর মতে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নতুন ধরনের এআই প্রযুক্তি আসবে, যা আরও উন্নত ও কার্যকর হবে। ভবিষ্যতে রোবোটিকস ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফটওয় য র

এছাড়াও পড়ুন:

উইন্ডোজের দুটি ‘জিরো ডে’ নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করল মাইক্রোসফট

জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি মূলত সফটওয়্যারের দুর্বলতা। নিজেদের তৈরি সফটওয়্যারে ত্রুটি শনাক্ত হলে দ্রুত সমাধান করে নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্ত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্যাঁচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে এমনই দুটি জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পাওয়ার পর তড়িঘড়ি করে সেগুলোর সমাধান করে জুন আপডেট উন্মুক্ত করেছে মাইক্রোসফট।

মাইক্রোসফটের তথ্যমতে, জুন আপডেটে দুটি জিরো ডে ত্রুটিসহ মোট ৬৬টি নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করা হয়েছে। প্রথম জিরো ডে ত্রুটিটি ছিল মাইক্রোসফট উইন্ডোজের ওয়েব ডিসট্রিবিউটেড অথরিং অ্যান্ড ভার্সন সেবায়। দ্বিতীয় জিরো ডে ত্রুটিটি ছিল উইন্ডোজের এসএমবি (সার্ভার মেসেজ ব্লক) ক্লায়েন্ট প্রযুক্তিতে। সিভিই-২০২৫-৩৩০৫৩ এবং সিভিই-২০২৫-৩৩০৭৩ নামের ত্রুটিগুলো কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একটি জিরো ডে ত্রুটি ইতিমধ্যে সাইবার হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে। আর তাই দ্রুত নিরাপত্তা হালনাগাদটি ব্যবহার করতে হবে।

মাইক্রোসফটের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ত্রুটিগুলোর মধ্যে ২৫টি রিমোট কোড এক্সিকিউশন, ১৩টি এলিভেশন অব প্রিভিলেজ, ১৭টি তথ্য ফাঁস, ৩টি নিরাপত্তা বাইপাস, ৬টি ডিনায়াল অব সার্ভিস এবং ২টি স্পুফিং ঘরানার ত্রুটি ছিল। আর তাই এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা এসব ত্রুটির কারণে সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান চেক পয়েন্ট রিসার্চ জানিয়েছে, গত মার্চে তুরস্কের একটি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা করার সময় উইন্ডোজের জিরো ডে ঘরানার প্রথম ত্রুটিটি শনাক্ত করা হয়। বিষয়টি মাইক্রোসফটকে জানালে প্রতিষ্ঠানটি সেটিকে সিভিই-২০২৫-৩৩০৫৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এবং ১০ জুন নিরাপত্তা প্যাঁচ উন্মুক্ত করেছে।

সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উইন্ডোজের দুটি ‘জিরো ডে’ নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করল মাইক্রোসফট