গাজা উপত্যকায় যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বাস্তবায়নের জন্য আরব লিগের অনুমোদিত পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছে তদবির করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আইকে এ কথা বলেছেন।

গাজা পরিকল্পনার খসড়াটি তৈরি করেছে মিসর। আরব লিগ তা অনুমোদন করেছে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার প্রয়োজন হবে না। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে পাঠিয়ে গাজায় উপকূলীয় পর্যটন শহর গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন।

আরব লিগে অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবটি নিয়ে বিভাজন ক্রমাগত জোরালো হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের আশঙ্কা, প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে। গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা ও পুনর্গঠন কেমন হবে, হামাসের সেখানে কতটা প্রভাব বজায় রাখা উচিত, এসব বিষয় নিয়ে আরব দেশগুলোও ওঠে–পড়ে লেগেছে।

আমিরাতের চাপের বিষয়টি কায়রোকে দোটানায় ফেলেছে। কারণ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর—এ দুই দেশই গাজার প্রতিনিধি হিসেবে ফাতাহর নির্বাসিত সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাহলানকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছে।

আরব লিগের পরিকল্পনাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত অকার্যকর বলে সমালোচনা করছে। তাদের অভিযোগ, কায়রো হামাসকে অত্যধিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত আরব আমিরাতের দূত ইউসেফ আল ওতাইবা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের কাছে তদবির করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জায়গা দিতে মিসরকে চাপ দিচ্ছে। এ ঘটনা সম্পর্কে জানেন, এমন এক মার্কিন কর্মকর্তা এবং এক মিসরীয় কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওতাইবা এর আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনিদের জোর করে গাজা উপত্যকার বাইরে পাঠিয়ে দিতে ট্রাম্প যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার কোনো বিকল্প তিনি দেখছেন না।

মিসরভিত্তিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি শাখা হামাস। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে এ মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমাতে চাইছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। মিসরের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন সরকারও মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমিয়ে রেখেছে। তবে হামাসের কর্মকর্তারা সেখানে কিছুটা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন। মিসরীয় গুপ্তচরদের সঙ্গে কাসেম ব্রিগেডসহ হামাস সদস্যদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। আর সে সম্পর্কের বদৌলতে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করছে মিসর।

আরও পড়ুনগাজা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণ করল আরব দেশগুলো০৪ মার্চ ২০২৫

মিসরের গাজা পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তারা বলছে, হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্র করতে হবে এবং তাদের গাজা উপত্যকা থেকে উৎখাত করতে হবে, তা প্রস্তাবে উল্লেখ করা নেই।

মিসরে কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁদের পরিকল্পনাটি পরিষ্কার। আর তা হলো, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষই শাসনকার্য চালাবে। পরিকল্পনাটিতে গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবে জর্ডান ও মিসর। এতে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মোতায়েনের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।

হামাস বলেছে, তারা এই পরিকল্পনা মেনে নিয়েছে। আঞ্চলিক কূটনীতিকেরা বলছেন, ইসরায়েল এভাবে সংঘাতকে আন্তর্জাতিকীকরণের বিরুদ্ধে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত আরব ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

আমদানি বৃদ্ধি ইতিবাচক, ধারাবাহিকতা থাকতে হবে

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেটিকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। তবে তিন মাসের চিত্র দিয়ে সামগ্রিক অবস্থা এখনো মূল্যায়ন করার সময় হয়নি।

মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হঠাৎ প্রায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। এটা সুখবর হলেও কোনো বড় প্রকল্পের মালামাল আমদানিতে এত বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। যদি সত্যিকারের নতুন নতুন কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানির মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি ঘটে, তাহলে তা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।

মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ধারাবাহিকতা থাকলেই বলা যাবে, দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। বিনিয়োগ হলে সামনে কর্মসংস্থানও বাড়বে। আর তাতে অর্থনীতিতেও গতি সঞ্চার হবে।

মূলধনি যন্ত্রপাতির মতো ভোগ্যপণ্যের ঋণপত্র খোলার হারও বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাসের যে তুলনা করে দেখিয়েছে, তাতে ঋণপত্র খোলার হার ২০ শতাংশ বেড়েছে।

সব মিলিয়ে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে কর্মচাঞ্চল্য বাড়বে।

মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার, পরিচালক, টি কে গ্রুপ

সম্পর্কিত নিবন্ধ