অবশেষে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেলেন ডা. আব্দুল আলীম। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবেদনবিদ্যা (অ্যানেসথেসিওলজি) বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। নিয়োগপত্র পেয়ে মঙ্গলবার কাজে যোগ দেন ডা.

আলীম।

এর আগে ২৮ আগস্ট ‘সুপারিশের ১৪ বছরেও চাকরি হয়নি ডা. আব্দুল আলীমের’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সমকাল। 
এত বছর পর হলেও বর্তমান প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত ডা. আলীম। মঙ্গলবার সমকালকে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ ১৫ বছর পর নায্য অধিকার বুঝে পেলাম।

তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ডের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেও শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তা আটকে রেখেছিল বিগত প্রশাসনগুলো। বর্তমান উপাচার্য ও প্রশাসন উদ্যোগ নেওয়ায় আমার দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান ঘটলো। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। নতুন পদে যোগদানের আগে রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে অবেদনবিদ্যা বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন এই চিকিৎসক।

 

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ) তথ্যানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবেদনবিদ্যা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে ২০১০ সালে ছয়টি পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে নির্বাচন বোর্ড ডা. আব্দুল আলীমকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সুপারিশপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আজীবন সদস্য হওয়ায় তাঁর নিয়োগ আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ডা. আলীম। 

এরপর ২০১৪ সালে একই বিভাগের দুই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই বছরেই নেওয়া হয় লিখিত ও চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায়ই তিনি উত্তীর্ণ হন। তবে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২০১৫ সালে একই বিভাগে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ডা. আলীম সেই নিয়োগ পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হন। তবে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মৌখিক পরীক্ষা দিতে গেলে আচমকা ধরে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখার পাশাপাশি লাঞ্ছিত করেন আওয়ামীপন্থী কয়েক চিকিৎসক বলে অভিযোগ করেন ডা. আলীম। ওই চিকিৎসকরা তখন তাকে বলেছিলেন, পরীক্ষা দিতে দিবেন না। পরে প্রক্টর এসে উদ্ধার করলেও আর পরীক্ষা দিতে পারেননি, কোনোরকমে ফিরে যান বাসায়। এ ঘটনা নিয়ে সে সময় সমকালসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর অপহরণ ও আটকে রাখার অভিযোগ এনে ২০১৬ সালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন ডা. আলীম। আওয়ামী সরকার পতনের পর ১৮ আগস্ট উত্তীর্ণ পদে নিয়োগের আবেদন করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পরও শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ডা. আলীমের নিয়োগ আটকে দেওয়া হয়। তবে তার উত্তীর্ণের ফলাফল সংরক্ষিত ছিল। বর্তমান প্রশাসন সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে। ডা. আলীম এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ কর ম খ ক পর ক ষ পর ক ষ য় সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ