আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর
Published: 18th, March 2025 GMT
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আদালত চলতো আর মামলার রায় গণভবন থেকে আসতো বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের অডিটরিয়ামে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বার ইউনিটের পক্ষ থেকে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
নুর বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে আদালত চলতো শেখ হাসিনার নির্দেশে। মামলার রায় আসতো গণভবন থেকে। আদালতগুলোতে আওয়ামী লীগ পন্থীরা দখলদারি চালাতো। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এমন চলতে পারে না। এখানে সব দলের আইনজীবী সমান অধিকার থাকবে। শেখ হাসিনার আমলের মতো এখন আদালতগুলোতে আর দখলদারিত্ব চলতে দেওয়া হবে না।”
আরো পড়ুন:
উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পাগলেও ‘মুজিব কোট’ নিতে চায় না: নুর
তিনি বলেন, “ঢাকা বারে অ্যাডহক কমিটি রয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে দ্রুত সময়ের ভেতর ঢাকা বারের নির্বাচনের দাবি জানাই। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ কিছুদিন হলো যাত্রা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বারে বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের কমিটি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ, আইনজীবীদের সুরক্ষা ও জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য কাজ করে যাবে।”
বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য অ্যাডভোকেট নুরে এরশাদ সিদ্দিকী বলেন, “ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন দ্রুত দিতে হবে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে ঢাকা বারের নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই। আইনজীবী অধিকার পরিষদ সারাদেশের সাধারণ আইনজীবীদের অধিকার নিয়ে কাজ করবে।”
বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলামে সভাপতিত্বে সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত হোসেন, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম রুবেল, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/মামুন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র ল দ শ আইনজ ব গণঅধ ক র প সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে (ভিপি নুর) অবরুদ্ধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১০টার দিকে গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। রাত ১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই বাজারে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
অন্যদিকে, চর বিশ্বাস বাজারে সরকারি চান্দিনা ভিটির ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট বা ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায়ের রশিদ) পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ইসলামসহ দুই পক্ষের ১০ জন আহত হন। পরে চর বিশ্বাস বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
নুরুল হক নুরের ছোট ভাই আমীনুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাজারে দুই শতাধিক দোকান আছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রতিটি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করেন ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার নামে, যা সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা নুরুল হক নুরের সহযোগিতা চান। গত ১০ জুন নুর এলাকায় গেলে বিষয়টি নিয়ে দোকানিরা অভিযোগ করেন। তিনি তাদের অতিরিক্ত টাকা না দিতে বলেন এবং প্রশাসনের মাধ্যমে ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ অস্বীকার করে চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেছেন, “আমরা কর্মীসভা করছিলাম। সে সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুড়ে মারেন। এতে আমাদের ৮–১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা কারো কাছ থেকে টাকা নিইনি। ভিপি নুরের শ্যালক এনিম আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে টাকা তুলেছেন। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।”
নুরুল হক নুর বলেছেন, “আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে পাতাবুনিয়া বাজারের বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় গিয়েছিলাম। রাত পৌনে ১০টার দিকে সেই স্মরণসভা শেষে গলাচিপা বাজারে ফেরার পথে শুনতে পাই, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের গুড়ি এবং দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পরে আমাদের কয়েকজন কর্মী সেখানে বিষয়টি দেখার জন্য গেলে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এছাড়া, দশমিনার কয়েকটি অফিস তারা ভাঙচুর করেন। হাসান মামুনের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমরা যখনই গণসংযোগ করি, তখনই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি দেন। আমাদের সঙ্গে ৫০০ থেকে ৭০০ নেতাকর্মী ছিলেন। আমরা এ ঘটনা মোকাবিলা করতে পারতাম। কিন্তু, এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্ট হোক, সেটা আমরা চাইনি।”
সার্বিক বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিএনপি নেতা হাসান মামুন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা গণঅধিকারের ঘাড়ে পা দিয়ে বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছেন। হামলাকারী ও হামলার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
পরে কয়েকটি পোস্টে তিনি ভিপি নুরকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, তিনি বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক