Samakal:
2025-11-02@23:23:39 GMT

নতুন টাকা এখন গলার কাঁটা

Published: 18th, March 2025 GMT

নতুন টাকা এখন গলার কাঁটা

ঈদের আগে বিশেষ কাউন্টার খুলে নতুন নোট বিনিময় না করার সিদ্ধান্তের পর উভয় সংকট তৈরি হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের ৮০টি শাখার ভল্টে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার ফ্রেশ নোটের বিশাল ভান্ডার থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না। আবার এসব নোট ফেরতও নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে  শাখার ভল্টের বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে নোটগুলো। আরেক দিকে প্রতিটি শাখার উল্লেখযোগ্য পরিমাণের টাকা আটকা পড়েছে। এ তালিকায় সংকটে থাকা ব্যাংকের ১৯টি শাখাও রয়েছে। ব্যাংকগুলোর জন্য এসব নতুন টাকা যেন এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যাংকাররা জানান, প্রতিটি শাখার ভল্টের ধারণ ক্ষমতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ একটি সীমা নির্ধারিত আছে। কোথাও ওই সীমার বেশি টাকা জমা হলে তা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সোনালী ব্যাংকের ‘চেস্ট’ শাখায় জমা দিতে হয়। প্রতিটি ব্যাংকে সাধারণত ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট থাকে বেশি। এতে জায়গা লাগে কম। ঈদ উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে আগামী ২৫ মার্চ মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন নোট বিতরণ করার কথা ছিল। ঈদের আগে ছোট ছোট এসব নোট খালি হবে, সে আশায় ছিল ব্যাংকগুলো। নতুন নোট বিতরণ স্থগিত করার সিদ্ধান্তে ব্যাংকগুলো পড়েছে বিপাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবার ঈদের আগে নতুন নোট বিনিময়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে নির্ধারিত শাখাগুলোতে ৬৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ নোট পাঠানো হয়। এসব নোটে বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকায় বিতর্কের কারণে আপাতত বিতরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। পরবর্তী করণীয় নির্ধারিত না হওয়ায় এখনই ফেরত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ব্যাংকের ভল্টে নোট পাঠানোর জন্য একটি খরচ আছে। আবার নোট ফেরত আনতেও খরচ আছে। যে কারণে কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে।
নতুন নোট বিনিময়ের জন্য নির্ধারিত একটি শাখার ব্যবস্থাপক সমকালকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ টাকা দিয়ে এর পর নতুন নোট নিতে হয়। আবার স্থান সংকুলান বিবেচনায় ঈদের আগেই এসব নোট ছেড়ে ভল্টের জায়গা বের করা হয়। এবার ব্যাংকের ভল্টে নোট থাকলেও তা বিনিময় স্থগিত করায় এখন বিপদে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে ঈদের পর যখন টাকা ফেরত আসতে শুরু করবে, তখন চরম সংকট দেখা দেবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ২০ লাখ কোটি টাকার মতো সঞ্চয় থাকলেও সব ছাপানো নোট নয়। সারাদেশে দৈনিক লেনদেনের প্রয়োজনে সব মিলিয়ে ছাপানো টাকা রয়েছে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে সাধারণ সময়ে ২ লাখ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা থাকে মানুষের হাতে। আর ঈদ উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের হাতে টাকার পরিমাণ বেড়ে ৩ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা ১৫ হাজার কোটি টাকা হয়। সাধারণভাবে প্রতি বছরের এই সময়েই নতুন টাকা বাজারে আসে বেশি। দেশের প্রচিলত অধিকাংশ নোটেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে।
ব্যাংকাররা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোন কোন শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা যাবে, তা জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। রোজা শুরুর আগেই এসব শাখায় ৫, ২০ ও ৫০ টাকা মূল্যমানের ৬৫ লাখ টাকা করে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর বিপরীতে এসব ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ টাকা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকার বদলের এতদিন পরও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত নোট ছাড়া নিয়ে বিতর্কের মুখে গত ১০ মার্চ নোট বিতরণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও নোট ফেরত নেওয়া হয়নি। কবে ফেরত নেবে, তা নিয়ে শাখাগুলো রয়েছে অন্ধকারে।

বেশি সমস্যায় পড়েছে দুর্বল ব্যাংক
নতুন নোটের বিপরীতে টাকা আটকে যাওয়ায় বেশি বিপদে পড়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলো। কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকের জমা টাকা ফেরত দিতে পারছে না। অথচ তাদের প্রতিটি শাখা ৬৫ লাখ টাকা করে ভল্টে রেখেও লেনদেন করতে পারছে না। এমন সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচটি শাখা রয়েছে জনতা ব্যাংকের। তিনটি করে শাখা রয়েছে এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের। ন্যাশনাল ব্যাংকের উত্তরা ও গাজীপুরের শ্রীনগর এবং এবি ব্যাংকের প্রগতি সরণি শাখা রয়েছে তালিকায়।

চাইলেই কী টাকা ছাপা যায়
সরকার পতনের প্রায় আট মাস পরও নতুন ডিজাইনের নোট কেন বাজারে এলো না, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন ডিজাইনের নোট আনা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। একটি নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত করা থেকে শুরু করে বাজারে আনা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগে। গত ১৬ বছরে যেসব নোট ছাপা হয়েছে তার সবই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিযুক্ত। আবার যেসব কাগজ, কালি মজুদ আছে তাও আগের নকশার। ফলে চাইলেই তা বদলানো সম্ভব নয়। সব প্রক্রিয়া শেষে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে পারে আগামী এপ্রিলের শেষ কিংবা মে মাসের শুরুর দিকে। এরই মধ্যে নতুন ডিজাইনের নোট প্রিন্টিংয়ের জন্য প্লেট তৈরি করা হয়েছে। কাগজ, কালি কেনার প্রক্রিয়াও প্রায় শেষের দিকে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী এপ্রিলের শেষ দিকে অথবা মে মাসের প্রথম দিকে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে ছাড়া সম্ভব হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এসব ন ট সব ন ট পর ম ণ র জন য ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান