ময়মনসিংহের স্কুলটি চালু করার উদ্যোগ নিন
Published: 19th, March 2025 GMT
দেশের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমনও হাল, তাদের নিজস্ব কোনো ভবন নেই; জরাজীর্ণ ঘরে পাঠদান চালিয়ে নিতে হয়। অথচ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আধা পাকা ভবন থাকা সত্ত্বেও সেখানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যালয়টি এখন গোশালায় পরিণত হয়েছে। প্রায় এক যুগ চালু থাকার পর জাতীয়করণ না হওয়ায় বিবিধ সমস্যার কারণে গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। এতে গ্রামটিতে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের কাহেদগ্রামে স্কুলটির অবস্থান। ১৯৯৮ সালে স্থানীয় এক বাসিন্দার জমিদান ও পৃষ্ঠপোষকতায় এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। একটি এনজিওর অর্থসহায়তায় পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট আধা পাকা একটি স্কুলঘরও নির্মিত হয়।
কিন্তু শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন–ভাতা দিতে না পারা, শিক্ষক নিয়োগ ও পতিত সরকারের দলীয় পরিচয়ে ক্ষমতাচর্চার কারণে কয়েক দফা হোঁচট খাওয়ার পর ২০১৮ সালে এসে একেবারে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলটি। বিনা বেতনে পাঠদানের মাধ্যমে স্কুলটি জাতীয়করণে আশায় ছিলেন শিক্ষকেরা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় জাতীয়করণের বিষয়টি থমকে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির দরজা-জানালা ভেঙে পড়েছে। বারান্দাও ভেঙে পড়েছে। সামনে কয়েকটি গরু। শ্রেণিকক্ষগুলোয় গরুর জন্য খড় রাখা। বিদ্যালয়টিকে এখন গোশালা হিসেবে ব্যবহার করছেন জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা। জমিদাতার পরিবারের এক সদস্য বলেন, এলাকার জন্য স্কুলটি খুব দরকার। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতায় স্কুলটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। যেহেতু স্কুলের কার্যক্রম নেই, তাই ফেলে না রেখে গরু ও অন্যান্য জিনিস রাখা হয়।
আশপাশের দু-তিন কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামের একমাত্র বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় দূরের পাঠশালায় যাচ্ছে শিশুরা। অনেক শিশু ঝরেও পড়ছে। স্কুলটির শিক্ষকদের কেউ কেউ শিক্ষকতা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, শুধু একজন শিক্ষকের জন্য রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে গিয়ে একটি গোটা স্কুল বন্ধ হয়ে যেতে পারে না।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তার (বর্তমানে ধোবাউড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) বক্তব্য, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার জন্য সব মানদণ্ড পূর্ণ করেছিল। স্কুলটি ২০১৬ সাল পর্যন্ত সমাপনী পরীক্ষায় অংশও নিয়েছিল। জাতীয়করণ হচ্ছে না দেখে পরে বন্ধ হয়ে যায়। এখনো যদি সব পক্ষ মিলে উদ্যোগ নেয়, তাহলে স্কুলটি আবার চালু হওয়ার সুযোগ আছে। ঈশ্বরগঞ্জের ইউএনও জানান, কাগজপত্র দেখে বন্ধ স্কুলটি চালু করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আমরা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে চাই। সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো উদ্যোগেই স্কুলটি চালু হোক, সেটিই প্রত্যাশা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ য লয়ট জ ত য়করণ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
টঙ্গীতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ, সাউন্ড নিক্ষেপ
গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। এ ঘটনায় শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি নিক্ষেপ করেছে।
বুধবার সকাল ৯টার থেকে গাজীপুরা এলাকার সৃজন্স ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার কয়েক'শ শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে শিল্প পুলিশ-২ এবং টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ কয়েক দফা চেষ্টা করেও শ্রমিকদের সরাতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
বিক্ষোভরত শ্রমিক শিল্পি আক্তার বলেন, ঈদের আগে আমাদের অর্ধেক বেতন আর অর্ধেক বোনাস দিয়ে কারখানা ছুটি দেয়। বলা হয়েছিল, ঈদের পরেই বাকী টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু এখনও কিছুই পাইনি। বাড়িওয়ালা তো আশ্বাসে ভাড়া নেয় না, দোকানও বাকির টাকা চায়। সরকার যদি আমাদের পাশে না দাঁড়ায়, আমরা কোথায় যাবো?
আরেক শ্রমিক রহমত বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমাদের ওপর গরম পানি ছুড়ে দেওয়া হলো। এভাবে কি শ্রমিকের ন্যায্য দাবি দমন করা যায়?
শ্রমিকদের দাবি, কারখানার মালিক পক্ষ গত ২০ এপ্রিল কিছু বোনাস পরিশোধ করলেও ২৮ এপ্রিলের মধ্যে পুরো বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ–২ এর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।