রাজধানীর কাফরুলে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির (জাপা) ইফতার মাহফিলে হামলা হয়েছে অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সরকারের দ্রুত বিদায় নেওয়া দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল।

জাপার মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ইফতার অনুষ্ঠানে কিছু লোক হামলা করে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা হামলাকারীদের এলাকা ছাড়া করার পর ইফতার মাহফিল হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ আমলের বিরোধীদলীয়য় নেতা জি এম কাদেরও ইফতার অনুষ্ঠানে ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ স্মরণকালে কেউ দেখিনি। পুলিশ প্রশাসনকে ঢালাওভাবে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা ও মামলা মোকদ্দমা দিয়ে নিস্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে গৃহপালিত বিরোধীদলের তকমা পাওয়া জাপা আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল। কয়েকবার আলোচনায় ডেকেছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে অংশ নেওয়া জাপাকে স্বৈচারারের দোসর আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানায়। এরপর থেকে সরকার আর ডাকছে না জাপাকে। দলটির কার্যালয়ে হামলাও হয়েছে। জাপাও সরকারের সমালোচনা করছে। 

বুধবার ইফতারের হাঙ্গামার ভিডিওতে দেখা গেছে, শ’ খানেক ব্যক্তি অনুষ্ঠানস্থলের সামনে জমায়েত হয়ে হট্টগোল করছে। ইফতারে আসা জাপা নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিচ্ছে। ছবি তুলতে যাওয়া এক ব্যক্তিকে কিলঘুষি মারে। সাদা গেঞ্জি পরা এক যুবক ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পেটায়। ঘটনাস্থলে পুলিশকে দেখা যায়নি। জাপার অভিযোগ, হামলায় পথচারীসহ অনেকে আহত হয়েছেন। 

ইফতারে জি এম কাদের বলেছেন, পুলিশ প্রশাসনকে অকার্যকর করা হয়েছে। দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এই সরকার দেশকে আগুনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ইসলামী উগ্রপন্থি এবং রক্ষণশীলদের এক করেছে, আর উদারপন্থিদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। ভিন্ন মতাবলম্বীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই, মনে হচ্ছে, তাদের বেঁচে থাকার অধিকারও নেই। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে তারা একটি রাজনীতি করতে চাইছে। 

অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে কি-না সন্দেহ প্রকাশ করে জিএম কাদের বলেন, নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করবে। জাপার সঙ্গে বৈষম্য করে সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শুধু মিছিল মিটিং নয়, ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না। নিজেদের লোক দিয়ে তৈরি দলকে ক্ষমতাসীন করতে সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে।  

জাপা নেতা আরও বলেন, এই সরকারের চলে যাওয়া উচিৎ, তারা দেশ চালাতে পারছে না। সরকারের কিছু লোক জ্ঞানী-গুণী। কিন্তু তাদের দেশ চালানোর অভিজ্ঞতা নাই। তাদের কোনো প্রস্তাব বাস্তবসম্মত হবে না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ এম ক দ র এম ক দ র সরক র র ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

আগস্টে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত থাকছে

দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এবারও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ নিয়ে টানা দুই মাস জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হলো। তার মানে জুলাইয়ের নির্ধারিত দামেই পেট্রল, অকটেন, ডিজেল বিক্রি হবে আগস্টে।

এর আগে জুনে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম কমানো হয় ২ টাকা। পেট্রল ও অকটেনের দাম লিটারে কমানো হয় ৩ টাকা।

আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে আগস্ট মাসের জন্য নির্ধারিত দাম জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সংশোধিত সূত্র অনুসারে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেট্রলের দাম প্রতি লিটার ১১৮ টাকা ও অকটেনের দাম ১২২ টাকা করা হয়েছে। কেরোসিনের নতুন দাম ১১৪ টাকা।

নতুন দাম আগামীকাল শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে কার্যকর হবে। গত বছরের মার্চ থেকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ শুরু করেছে সরকার। সে হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।

জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সূত্র নির্ধারণ করে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। এতে বলা হয়, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রলের দাম বেশি রাখা হয়। জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণ করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন)। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ