কুশিয়ারা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল রাজনগরের কালা মিয়ার কালারবাজার। নদীভাঙনে লীন হয়ে বাজারটি হারিয়েছে অতীত জৌলুস ও ঐতিহ্যগাথা।
একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নের অভাবে এ উপজেলার কামালপুর এবং শাহপুর গ্রামে থামছে না নদীভাঙন। এতে নদীতে বিলীন হচ্ছে মসজিদ, মানুষের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে সড়কের পাশের সরকারি ভূমিতে ঘরবাড়ি অনেকের মাথাগোঁজার ঠাঁই হয়েছে।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ছিক্কাগাঁওয়ের কালা মিয়া এলাকাবাসীর সুবিধার্থে কুশিয়ারা নদীর তীরে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে নিজস্ব ভূমিতে কালারবাজার গড়ে তোলেন। কালের পরিক্রমায় জমজমাট বাজারটির মূল ভূখণ্ড ভাঙনে নদীতে চলে গেছে। এখন ভাঙন ধরেছে নিকটবর্তী কামালপুর গ্রামে। বর্তমানে হলদিগুল-মৌলভীবাজার সড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বাজারের ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বলেন, এক সময় আশপাশের এলাকার পাইকারি ও খুচরা কেনাবেচার প্রধান হাট ছিল কালারবাজার। সাপ্তাহিক হাটবার সোম ও শুক্রবারে কাউয়াদীঘি হাওরপারের ব্যাপক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটত। ভাঙনের কবলে পড়ে এ বাজারের মূল ভূখণ্ডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে গেছে নদীতে। ফলে বাজারের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবসায়ীদের অনেকেই ক্ষয়ক্ষতি কুলিয়ে উঠতে না পেরে নিঃস্ব হয়েছেন। তখনকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে হোসেন আহমেদ সড়কের পাশে রড, সিমেন্টের ব্যবসা করছেন। কামালপুর গ্রামের আব্দুল মন্নাফ জানান, কুশিয়ারা গাঙ ভরাটের লগে লগে ভাঙনও দিন দিন বাড়ছে। এতে কালারবাজার মূল ভিটাগুলো নিচ্ছিন্ন হওয়ার পর কামালপুর, সুরিকোণা, ছিক্কাগাঁও, ফতেপুর ইউনিয়নের শাহপুরসহ বিভিন্ন লোকালয়, ফসলি জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা ভাঙন কবলে পড়েছে।
তিনি জানান, গত কয়েক বছরের নদীভাঙনে তাদের পরিবারের প্রায় দুই একরের বেশি জমি কুশিয়ারা গ্রাস করে নিয়েছে। বর্তমানে বসতভিটা ভাঙনের মুখে রয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের ফজর আলী জানান, তাদের গ্রামের পূর্বদিকে রাস্তার পাশ দিয়ে খেলার মাঠ ছিল। সব ভেঙে পড়েছে নদীর মাঝে। এর পর মসজিদসহ অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে সুরমান আলী, সাবেক মিয়া, বিবিজি রহমত, মিরাশ মিয়াসহ অর্ধশতাধিক মানুষের ঘরবাড়ি কুশিয়ারা গ্রাস করেছে। ঘরবাড়িহারা অনেকে কাউয়াদীঘি হাওরের খাস ভূমিতে নতুবা সড়কের পাশে সরকারি ভূমিতে বসবাস করছেন।
একই গ্রামের দবির আলী জানান, বর্ষা মৌসুম এলেই বানের পানিতে ভাসতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন কবলে পড়ে ৫০টির বেশি পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এখন ভাঙনের মুখে রয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান ইসরাফিল মিয়ার বাড়িসহ অনেকের বসতভিটা। নদীভাঙন প্রতিরোধে রাজনগরের শাহপুর, আব্দুল্লাহপুর, কালারবাজার এলাকায় স্থায়ী কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করায় নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তিনি ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে ভাঙনস্থলে জিওব্যাগভর্তি বালু ফেলা ও ব্লক বসানো এবং বন্যার কবল থেকে রক্ষায় নদীর তীরে বাঁধ স্থাপনের দাবি জানান।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ল রব জ র সড়ক র প শ নদ র ত র র ব যবস র জনগর ঘরব ড়
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের বেতন বাড়াল বিসিবি
জাতীয় দলের নারী ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আজ মিরপুরে বিসিবি পরিচালকদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এত দিন ‘এ’ ক্যাটাগরিতে থাকা মেয়েরা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মাসিক বেতন পেতেন। তাঁদের বেতন ৪০ হাজার টাকা বাড়ানো হচ্ছে। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটাররা পেতেন ১ লাখ টাকা করে বেতন। তাঁরা এখন থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বেতন পাবেন।
‘সি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটারদের বেতন ৭০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫ হাজার টাকা করা হয়েছে আর ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে ৬০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া জাতীয় দলের অধিনায়কদের জন্য ৩০ হাজার ও সহ-অধিনায়কদের জন্য ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া নারী ক্রিকেটারদের নতুন চুক্তিতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে আছেন তিন ক্রিকেটার—নিগার সুলতানা, নাহিদা আক্তার ও শারমিন আক্তার। ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আছেন ফারাজনা হক, রিতু মনি, ফাহিমা খাতুন, মারুফা আক্তার, রাবেয়া খান ও সোবহানা মোস্তারি। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আছেন স্বর্ণা আক্তার।
‘ডি’ ক্যাটাগরিতে আছেন সুমাইয়া আক্তারর, ফারিহা ইসলাম, রুবাইয়া হায়দার, সানজিদা আক্তার, নিশিতা আক্তার। এই চুক্তির বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের কেউ জাতীয় দলে এলে মাসে ৬০ হাজার টাকা বেতন পাবেন।