গাজীপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ
Published: 20th, March 2025 GMT
গাজীপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজি ও নানা অজুহাতে হাইওয়ে পুলিশের মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন চালকেরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের নলজানি এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
পুলিশের আশ্বাসে আজ দুপুর ১২টার দিকে সড়ক ছেড়ে যান তাঁরা। অবরোধ চলাকালে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
অটোরিকশার চালকদের দাবি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব হালিম মোল্লার নেতৃত্বে কয়েক মাস ধরে গাজীপুর–চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রতিটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। এ টাকা দিতে না চাইলে চালকদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি তাঁদের কাছ থেকে জোর করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁকে নানাভাবে হয়রানি ও মারধর করা হয়। এ ছাড়া গাজীপুর হাইওয়ে সড়কগুলোয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে মামলা দিচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।
চালকদের অভিযোগ, মহাসড়কে চষে বেড়াচ্ছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র সঠিক থাকলেও পুলিশ যখন-তখন চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। তাই তাঁরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এবং পুলিশের হয়রানির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজি করার সময় দুই চাঁদাবাজকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন চালকেরা। তাঁরা হলেন এহসানুল হক (২৫) ও সাদ্দাম হোসেন (৩২)।
এ বিষয়ে হালিম মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ধরেননি। মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরাও শুনেছি তিনি লোকজন দিয়ে চাঁদাবাজি করেন। কিন্তু আমরা যখন মাঠপর্যায়ে খোঁজখবর নিতে যাই, তখন কোনো অভিযোগ পাই না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। চাঁদাবাজি যে–ই করুক, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমদ জানান, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জব্দ করা জাটকা এতিমখানায় বিতরণ, সেই মাছ লুট করলেন আড়তদারেরা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জব্দ করা ৭০ কেজি জাটকা দুটি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছিল। তবে সেই মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন আড়তদারের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জাটকা রক্ষার অভিযানে আমিরাবাদ ও দশানী বাজার থেকে ৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। পরে আমিরাবাদ এলাকায় জব্দ করা জাটকা উপজেলার হাজীপুর ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় কিছু দুস্থ মানুষকেও কিছু জাটকা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই জাটকা নিয়ে ওই দুই মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কমিটির লোকজন সন্ধ্যায় আমিরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছান। তখন আমিরাবাদ বাজারের মাছের আড়তদার আবুল প্রধান, আরিফ গাজী, সেরু প্রধানিয়া, দেলু বেপারীসহ আরও কয়েকজন তাঁদের পথরোধ করেন এবং জাটকাগুলো লুট করে নিয়ে যান।
হাজীপুর মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও ফরাজীকান্দি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, মাছের ওই আড়তদারেরা তাঁদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে জাটকা লুট করে নিয়ে যান। বাধা দিয়েও কাজ হয়নি। বিষয়টি মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে আবুল প্রধান, আরিফ গাজী ও সেরু প্রধানিয়ার মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তবে দেলু ব্যাপারী মুঠোফোনে বলেন, জাটকা লুট করা তাঁদের উচিত হয়নি। ওই জাটকা আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁরা ফেরত দেবেন। এটি তাঁদের বড় ভুল হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। জাটকা উদ্ধারে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর জাটকা উদ্ধারে তিনি থানার ওসি ও মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমদের জাটকা লুট হওয়ার বিষয়টি খুব দুঃখজনক।