ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র মার্কিন মালিকানায় নেওয়ার প্রস্তাব ট্রা
Published: 20th, March 2025 GMT
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলার একদিন পর, বুধবার (১৯ মার্চ) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোনালাপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় এক ঘণ্টার এই আলাপচারিতা ‘বেশ ভালো ছিল’ বলে বর্ণনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।
অপরদিকে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই বছরই স্থায়ী শান্তি অর্জন করা সম্ভব হতে পারে।
আরো পড়ুন:
ইয়েমেনের হুতিদের ‘সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের’ হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় ১৬ হুতি সদস্য নিহত
ট্রাম্প-জেলেনস্কির ফোনালাপ শেষে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের বিষয়েও এসময় আলোচনা হয়েছে, তবে জেলেনস্কি এসময় জোর দিয়েছেন এটা কেবল রাশিয়ার নিয়ন্ত্র থাকা জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
গত মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউজে জেলেনস্কির সফরের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তার বাদানুবাদকে ঘিরে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, ফোনালাপের পরের পরিস্থিতি তার থেকে ভিন্ন বলে মনে করা হচ্ছে।
ওভাল অফিসে বৈঠকের পর বুধবারই প্রথমবারের মতো দুই প্রেসিডেন্ট সরাসরি কথা বললেন। যদিও এর আগে সৌদি আরবে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইউক্রেন রাজিও হয়।
যদিও ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়, কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের সময় তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে কথোপকথনের সময় জেলেনস্কি বলেছেন, জ্বালানি অবকাঠামো, রেল ও বন্দর সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোয় হামলা বন্ধ সংক্রান্ত আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছেন তিনি। তবে তিনি এই সতর্কবার্তাও দিয়েছেন যে মস্কো যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করলে তার দেশ প্রতিশোধ নেবে।
"আমার মনে হয় যতক্ষণ না আমরা (রাশিয়ার সঙ্গে) একমত হচ্ছি এবং যতক্ষণ না আংশিক যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি সংশ্লিষ্ট নথি পাওয়া যাচ্ছে, সব কিছুই আসলে ভাসমান," ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে এই কথা বলছিলেন জেলেনস্কি।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়াকে একটা সমান্তরালে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা ছিল এই ফোনকল। দুই পক্ষের ‘অনুরোধ ও প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে’ এটা করা হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা সঠিক পথেই চলছে বলেও জানান তিনি।
পরে আরো বিশদ বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে, বিশেষ করে ইউরোপে অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছেন।
‘যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘণিভূত হওয়ায়’ দুই নেতা তাদের প্রতিরক্ষা কর্মীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে তথ্য বিনিময়ের বিষয়েও সম্মত হয়েছেন বলে রুবিও জানান।
তার বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ট্রাম্পের ‘ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক সরবরাহ এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ নিয়ে আলোচনা করেছেন; ‘যুক্তরাষ্ট্র তার বিদ্যুৎ এবং ইউটিলিটি দক্ষতার ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আরো ভালোভাব চালাতে পারে’ বলেও ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন।
রুবিওর বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, ‘আমেরিকান মালিকানা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সর্বোত্তম সুরক্ষা দেবে এবং ইউক্রেনীয় শক্তি অবকাঠামোর জন্য সহায়ক হবে।’
জেলেনস্কি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে, কিন্তু তারা শুধু জাপোরিঝিয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথাই উল্লেখ করেছে।
জেলেনস্কি বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি অনলাইন ব্রিফিংয়ের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথোপকথনকে ‘ইতিবাচক’, ‘খোলামেলা’ এবং ‘খুবই তাৎপর্যপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
ইউক্রেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সৌদি আরবে বৈঠকে বসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস