ডিজির অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভে বিনায় স্থবিরতা
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবুল কালাম আজাদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে টানা পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে প্রতিষ্ঠানটির একদল বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এলাকাবাসীও। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে-বাইরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা মহাপরিচালকের অপসারণ দাবি করে তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তদন্ত দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবনে টানা পঞ্চম দিনের মতো এই বিক্ষোভ ও মিছিল করে আন্দোলনকারীরা।
এতে বক্তব্য রাখেন, বিনার প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম তরফদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজা মোহাম্মদ ইমন, কৃষিবিদ মো.
এ সময় বক্তারা বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপক্ষে লাঠি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিজি। পরিবর্তিত পটভূমিতেও ২৭ ছাত্রলীগ নেতার পদোন্নতি চূড়ান্ত করেছেন। বঞ্চিত ব্যক্তিদের জ্যেষ্ঠতা প্রদানে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে। এছাড়াও পালিয়ে অফিস করাসহ ডিজির বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তার এ সব কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে ফ্যাসিস্টের দোসর এই ডিজির পদত্যাগ দাবি করেন। অন্যথায় তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা।
আন্দোলনে দেশের একমাত্র এই কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হাবিবুর রহমান।
তিনি জানান, বঞ্চিতদের আন্দোলনের স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড। আটকে আছে বেতন-ভাতা ও বিল-ভাইচার এবং ট্যুর বিল। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের একটি অডিট রিপোর্ট আটকা পড়েছে।
তিনি আরো জানান, বেশ অনেক দিন ধরে ডিজি মহোদয় অফিস করছেন না। তার কক্ষে তালা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। প্রতিদিন তারা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে। এ সব কারণে এই স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ডিজি পদে নিযুক্ত হন ড. আবুল কালাম আজাদ। ফলে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নিয়মিত অফিস না করে ঢাকায় ব্যস্ত থাকেন তিনি। এরই মাঝে বঞ্চিতদের আন্দোলনের কারণে ডিজি এখন আর অফিসেই আসেন না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ সব বিষয়ে বক্তব্য জানতে মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদের কক্ষে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মহাপরিচালকের একান্ত সচিব (পিএস) ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আন্দোলনকারীরা স্যারের (ডিজির) কক্ষে তালা দিয়ে রেখেছে। তিনি অন্য রুমে বসে কাজ করছেন।
ঢাকা/মিলন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জ ঞ ন ক কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫২) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (১৪ জুন) তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শনিবার (১৪ জুন) রাতে চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং সদস্য সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে অভিযুক্ত রহিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো পড়ুন:
পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী
ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
নিহতের ভাই মো. জসিম উদ্দিন জানান, দক্ষিণ চর আবাবিলের উদমারা এলাকায় জুয়ার আসর ও মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় ৩ এপ্রিল স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর শনিবার (১৪ জুন) তিনি মারা যান।
পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীর আলম উদমারা সাহাদু উল্যা মাঝিবাড়ি জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মসজিদের আশপাশে মাদক ও জুয়া বন্ধে তার ভূমিকার কারণে কিশোর গ্যাংয়ের বিরাগভাজন হন তিনি। হামলায় নেতৃত্ব দেন কিশোর গ্যাং সদস্য জুবায়ের, বাহার ও সাব্বির।
এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম ৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে রায়পুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং ১০ এপ্রিল মামলা রুজু হয়।
এর আগে একই এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় সুদেব শীল মনু নামে একজন নিহত হন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করলেও থামেনি কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য।
ঢাকা/লিটন/বকুল