শেষ বলে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছিল রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের। রূপগঞ্জের শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। ব্যাটসম্যান হিসেবে থাকা আব্দুল মজিদ তখন ৯৬ রানে ব্যাটিংয়ে। তার সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজন ৪ রান।

ফাইন লেগ দিয়ে বল সীমানায় পাঠিয়ে মজিদ তুলে নেন সেঞ্চুরি। দলও পেয়ে যায় রোমাঞ্চকর জয়। শেষটা মজিদ ভালো করলেও তার ইনিংসের চিত্র ছিল একেবারেই বাজে। ১২৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৮১.

৩০ স্ট্রাইক রেটে করেন ১০০ রান। ম্যাচ জেতাতে না পারলে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হতো তা বলতে দ্বিধা নেই।

মজিদ স্রেফ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটসম্যানদের একটি উদাহরণ মাত্র। স্থানীয় ক্রিকেটাররা তো আছেনই… তারকা ক্রিকেটারদের ব্যাট চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। লিগের ছয় রাউন্ডের খেলা শেষ হয়েছে। সবগুলো দলের ক্রিকেটাররা ছয় ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ছয় ম্যাচে আড়াইশ রান করতে পেরেছেন ১৩ ক্রিকেটার। তাদের মধ্যে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন কেবল চার ক্রিকেটার। এছাড়া নয় ব্যাটসম্যান রান পেলেও ছুঁতে পারেননি একশ স্ট্রাইক রেট।

আরো পড়ুন:

নাঈম-সানী-ফরহাদ জেতালেন গুলশানকে

ইমরুলের ৮৬, সেঞ্চুরি করেও ম্লান রাফসানের হাসি

চার ব্যাটসম্যান এখন পর্যন্ত তিনশর বেশি রান করেছেন। ৩৫৫ রান নিয়ে নাঈম শেষ রয়েছেন শীর্ষে। তার স্ট্রাইক রেটও উচুঁতে। ১১২.৩৪। তামিম ৩৪২ রান নিয়ে আছেন দুইয়ে। স্ট্রাইক রেট ১১১.৭৬। এনামুল হক বিজয় ৩১৮ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১০১.৬০। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে মিজানুর রহমানের রান ৩১৩। স্ট্রাইক রেট ৯৬.৬০। এছাড়া একশর বেশি স্ট্রাইক রেট আছে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর। ২৬০ রান করা শামীমের স্ট্রাইক রেট ১১২.০৭।

ওয়ানডে ক্রিকেট এগিয়েছে বহুদূর। টি-টোয়েন্টির মতো এখানেও চলে মারকাটারি ব্যাটিং। পরিস্থিতি, কন্ডিশন, বিবেচনায় রেখে এখন স্কিলের উন্নতি করে ক্রিকেটাররা ছাড়িয়ে যেতে চান নিজেদের সামর্থ্য। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলার প্রতিযোগিতা হয়। খেলাটা অনেকাংশেই হয়ে গেছে ব্যাটসম্যান কেন্দ্রিক। যেখানে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই একমাত্র ব্র্যান্ড। ধরে খেলার মানসিকতা, অহেতুক ডট বল খেলার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে স্ট্রাইক রেটে বড় লাফ দিয়েছেন ক্রিকেটাররা।

সেই হাওয়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের একটু কমই লেগেছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক সময়ে দারুণ সময় কাটিয়ে উঠা বাংলাদেশ এখন সুসময়ের অপেক্ষায়। সেখানে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে না পারলেও বড় অর্জন সম্ভব নয় তা মানছেন স্থানীয় কোচ সোহেল ইসলাম।

‘‘এখন আসলে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের একমাত্র ব্র্যান্ড। বড় দলগুলো যারা সফল হচ্ছে তারা আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাকে বেছে নিয়েছে। সেটা ব্যাটসম্যান হোক বা বোলার। এটা করতে না পারলে আসলে বড় দলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা সম্ভব হবে না।’’

দারুণ সব শট খেলতে পছন্দ করেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে নিজের চেনা ছন্দে নেই তাওহীদ। ৪ ম্যাচে ২১৩ রান করেছেন ৯৭.৭১ স্ট্রাইক রেটে। পারভেজ হোসেন ইমন ২৮৩ রান করেছেন ৮৯.২৭ স্ট্রাইক রেটে। ইমরুল, সোহান প্রত্যেকের স্ট্রাইক রেট নম্বইয়ের ঘরে। তরুণ রায়ান রাফসান রহমান ৬ ম্যাচে ২৭৯ রান করেছেন। গতকাল পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরি। কিন্তু তার স্ট্রাইক রেট ৭৮.৫৯। সাইফ হাসান নিয়মিত রান করছেন। ৬ ম্যাচে ২৫৫ রান করেছেন মাত্র ৭৪.৭৮ স্ট্রাইক রেটে। প্রতিশ্রুতিশীল অমিত হাসান ৬ ম্যাচে ২৫৪ রান করেছেন সত্তর ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেটে।

স্থানীয় ক্রিকেটারদের খেলার মানসিকতায় পরিবর্তন আনার আহ্বান জানালেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক, ‘‘এখন সময়,  যুগ অনেক পাল্টেছে। প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের মান আরো বাড়ানো উচিত। সেই দায়িত্বটা ক্রিকেটারদেরই। কিভাবে আমরা ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি, আরো ভালো প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারি। বড় রান করতে পারি, কম বল খেলে বেশি রান করতে পারি এসব দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব য টসম য ন র ন কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভাঙ্গায় চার গ্রামের সংঘর্ষে আহত ৬০

জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চার গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামে রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কয়েকটি বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোপীনাথপুর গ্রামের সাইমন মাতুব্বর ও কুদ্দুস মাতুব্বরের মধ্যে জমি নিয়ে গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এরই জেরে রবিবার সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠকে বসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে বিএনপি দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০

শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ

গোপীনাথপুর গ্রামের দুটি পক্ষের সঙ্গে পরবর্তীতে ছোট হামেরদী, খাড়া কান্দি ও বাইশা খালি গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে যোগ দেন। ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। সংঘর্ষকারীরা ঢাল, শরকি, কালি, কাতরা, টেটার মতো অস্ত্র ব্যবহার করেন। ইট ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৬০ জন আহত হন। গুরুতরদের ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এবং চার গ্রামের লোকজন রণক্ষেত্র তৈরি করায় জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছিল। ক্ষতির পরিমাণ পরে জানাতে পারব।”

ঢাকা/তামিম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ