খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছেন ব্যাটসম্যানরা!
Published: 20th, March 2025 GMT
শেষ বলে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছিল রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের। রূপগঞ্জের শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। ব্যাটসম্যান হিসেবে থাকা আব্দুল মজিদ তখন ৯৬ রানে ব্যাটিংয়ে। তার সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজন ৪ রান।
ফাইন লেগ দিয়ে বল সীমানায় পাঠিয়ে মজিদ তুলে নেন সেঞ্চুরি। দলও পেয়ে যায় রোমাঞ্চকর জয়। শেষটা মজিদ ভালো করলেও তার ইনিংসের চিত্র ছিল একেবারেই বাজে। ১২৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৮১.
মজিদ স্রেফ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটসম্যানদের একটি উদাহরণ মাত্র। স্থানীয় ক্রিকেটাররা তো আছেনই… তারকা ক্রিকেটারদের ব্যাট চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। লিগের ছয় রাউন্ডের খেলা শেষ হয়েছে। সবগুলো দলের ক্রিকেটাররা ছয় ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ছয় ম্যাচে আড়াইশ রান করতে পেরেছেন ১৩ ক্রিকেটার। তাদের মধ্যে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন কেবল চার ক্রিকেটার। এছাড়া নয় ব্যাটসম্যান রান পেলেও ছুঁতে পারেননি একশ স্ট্রাইক রেট।
আরো পড়ুন:
নাঈম-সানী-ফরহাদ জেতালেন গুলশানকে
ইমরুলের ৮৬, সেঞ্চুরি করেও ম্লান রাফসানের হাসি
চার ব্যাটসম্যান এখন পর্যন্ত তিনশর বেশি রান করেছেন। ৩৫৫ রান নিয়ে নাঈম শেষ রয়েছেন শীর্ষে। তার স্ট্রাইক রেটও উচুঁতে। ১১২.৩৪। তামিম ৩৪২ রান নিয়ে আছেন দুইয়ে। স্ট্রাইক রেট ১১১.৭৬। এনামুল হক বিজয় ৩১৮ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১০১.৬০। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে মিজানুর রহমানের রান ৩১৩। স্ট্রাইক রেট ৯৬.৬০। এছাড়া একশর বেশি স্ট্রাইক রেট আছে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর। ২৬০ রান করা শামীমের স্ট্রাইক রেট ১১২.০৭।
ওয়ানডে ক্রিকেট এগিয়েছে বহুদূর। টি-টোয়েন্টির মতো এখানেও চলে মারকাটারি ব্যাটিং। পরিস্থিতি, কন্ডিশন, বিবেচনায় রেখে এখন স্কিলের উন্নতি করে ক্রিকেটাররা ছাড়িয়ে যেতে চান নিজেদের সামর্থ্য। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলার প্রতিযোগিতা হয়। খেলাটা অনেকাংশেই হয়ে গেছে ব্যাটসম্যান কেন্দ্রিক। যেখানে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই একমাত্র ব্র্যান্ড। ধরে খেলার মানসিকতা, অহেতুক ডট বল খেলার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে স্ট্রাইক রেটে বড় লাফ দিয়েছেন ক্রিকেটাররা।
সেই হাওয়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের একটু কমই লেগেছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক সময়ে দারুণ সময় কাটিয়ে উঠা বাংলাদেশ এখন সুসময়ের অপেক্ষায়। সেখানে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে না পারলেও বড় অর্জন সম্ভব নয় তা মানছেন স্থানীয় কোচ সোহেল ইসলাম।
‘‘এখন আসলে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের একমাত্র ব্র্যান্ড। বড় দলগুলো যারা সফল হচ্ছে তারা আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাকে বেছে নিয়েছে। সেটা ব্যাটসম্যান হোক বা বোলার। এটা করতে না পারলে আসলে বড় দলগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা সম্ভব হবে না।’’
দারুণ সব শট খেলতে পছন্দ করেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে নিজের চেনা ছন্দে নেই তাওহীদ। ৪ ম্যাচে ২১৩ রান করেছেন ৯৭.৭১ স্ট্রাইক রেটে। পারভেজ হোসেন ইমন ২৮৩ রান করেছেন ৮৯.২৭ স্ট্রাইক রেটে। ইমরুল, সোহান প্রত্যেকের স্ট্রাইক রেট নম্বইয়ের ঘরে। তরুণ রায়ান রাফসান রহমান ৬ ম্যাচে ২৭৯ রান করেছেন। গতকাল পেয়েছেন প্রথম সেঞ্চুরি। কিন্তু তার স্ট্রাইক রেট ৭৮.৫৯। সাইফ হাসান নিয়মিত রান করছেন। ৬ ম্যাচে ২৫৫ রান করেছেন মাত্র ৭৪.৭৮ স্ট্রাইক রেটে। প্রতিশ্রুতিশীল অমিত হাসান ৬ ম্যাচে ২৫৪ রান করেছেন সত্তর ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেটে।
স্থানীয় ক্রিকেটারদের খেলার মানসিকতায় পরিবর্তন আনার আহ্বান জানালেন নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক, ‘‘এখন সময়, যুগ অনেক পাল্টেছে। প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের মান আরো বাড়ানো উচিত। সেই দায়িত্বটা ক্রিকেটারদেরই। কিভাবে আমরা ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি, আরো ভালো প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারি। বড় রান করতে পারি, কম বল খেলে বেশি রান করতে পারি এসব দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব য টসম য ন র ন কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।