সার্বিয়া যেতে না পেরে ১১ দিন ধরে বিমানবন্দরে
Published: 20th, March 2025 GMT
সার্বিয়া পাঠানোর কথা বলে পাঁচজনের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নেন নাসির ট্রাভেল এজেন্সির মালিক নাসির উদ্দিন। ফ্লাইটের টিকিট ও ডলার এনডোর্সমেন্ট করার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা নিয়ে তাদের ১০ মার্চ হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসতে বলেন তিনি। ওইদিন সন্ধ্যায় বিমাবন্দরের বিশ্রামাগারে প্রবেশের আগেই নাসির ২০ লাখ টাকা বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবকে দিতে বলেন। এ সময় ওয়াকিটকি হাতে আসেন এক ব্যক্তি। নাসিরের কথায় তারা ২০ লাখ টাকা দিয়ে দেন। পরে বিশ্রামাগার থেকে একসঙ্গে বেরিয়ে যান নাসির ও হাবিব। এরপর থেকে ১১ দিন ধরে বিমানবন্দরে রয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগীরা। তারা হলেন- মো.
ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর ও সাইদুল ইসলাম বলেন, নাসির উদ্দিন কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা। নিজ এলাকার লোক হওয়া তার কথা বিশ্বাস করে সার্বিয়া যাওয়ার জন্য তিন বছরে কয়েক ধাপে আমরা পাঁচজন ৫০ লাখ টাকা দেই। গত ১০ মার্চ রাত ১টায় সৌদি আরবের একটি ফ্লাইটে আমাদের সার্বিয়া পাঠানোর কথা বলে বিমানবন্দরে নিয়ে আসে নাসির। ওইদিন ফ্লাইটের টিকিট ও ডলার এনডোর্সমেন্ট করার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা নেন নাসির। এরপর থেকে আমরা বিমানবন্দরেই আছি।
এ ঘটনায় গত ১১ মার্চ সাতজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন সাইদুল। মামলার আসামিরা হলেন- নাসির উদ্দিন, হাবিব, রফিক, শামীম, সোহেল, মো. আলী ফিন্টু, মোখলেছুর।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম সমকালকে বলেন, মামলা করার পরদিন ১২ মার্চ মূল হোতা নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হাবিবসহ মামলায় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, শুধু ফ্লাইট উঠার আগে বিশ্রামাগারে যাত্রীরা অবস্থান করতে পারবে। এছাড়া এটা টিকিট বা টাকা লেনদেনের জায়গা না। কোনো যাত্রী যদি হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। তাহলে পুলিশের সহযোগিতায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ২০ ল খ ট ক ফ ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
পটুয়াখালীতে কুলসুম বেগম ও মোসা. সাহিদা বেগম নামের দুই নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণের বিরুদ্ধে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের চারাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত আল আমিন (২৭) সম্পর্কে নিহত সাহিদা বেগমের সৎছেলে এবং বৃদ্ধা কুলসুম বেগমের নাতি। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত দুই নারীর স্বজন মো. আশ্রাফ খাঁ জানান, আল আমিন দীর্ঘদিন ধরে অস্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। এরপর তাঁর পরিবার তাঁকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে আল আমিনের বাবা রাজ্জাক খাঁ পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গেলে আল আমিন দা দিয়ে গলা কেটে তাঁর সৎমা সাহিদা বেগম ও বৃদ্ধ দাদি কুলসুম বেগমকে হত্যা করেন।
বাহাদুর আলম খাঁ (৫০) নামের এক আত্মীয় বলেন, নিহত সাহিদা সম্পর্কে তাঁর চাচিশাশুড়ি এবং কুলসুম বেগম দাদিশাশুড়ি। দুপুরে বাড়ির সবাই জুমার নামাজ পড়তে গেলে মানসিক ভারসাম্যহীন ছোট ছেলে আল আমিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত ধারালো দা দিয়ে প্রথমে সৎমা এবং পরে দাদিকে গলা কেটে হত্যা করেন। তিনি বলেন, আল আমিন মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর তিন বছর আগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসক দেখালেও সুস্থ হননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই নারীকে হত্যার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ড ঘটানো ব্যক্তি ওই পরিবারের সদস্য। ঘটনার পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত তরুণ এখন পলাতক। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তদন্ত করে দেখা হবে।