Samakal:
2025-04-30@23:41:32 GMT

সতর্কতা ও নজরদারি জরুরি

Published: 20th, March 2025 GMT

সতর্কতা ও নজরদারি জরুরি

রা জধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জনপদ নারায়ণগঞ্জ হইতে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসাপ্রধান আতাউল্লাহসহ ১০ জনের গ্রেপ্তার যুগপৎ স্বস্তি ও উদ্বেগের বিষয়। আমরা জানি, মিয়ানমার হইতে বাংলাদেশে আশ্রিত জনগোষ্ঠীর একাংশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়াইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীও এইভাবে দেশের কেন্দ্রীয় এলাকায় আসিয়া ঘাপটি মারিয়া থাকিবার বিষয় নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ইহাও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত, আরসার একাংশ রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক অপহরণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সংশ্লিষ্ট। ২০২১ সালে রোহিঙ্গাদের জনপ্রিয় নেতা মহিবুল্লাহ হত্যায় আরসার নাম প্রচারিত হইবার পর রোহিঙ্গা শিবিরে তাহারা চাপে পড়ে। ফলে এই সময়ে সশস্ত্র সংগঠনটির শীর্ষ নেতার গ্রেপ্তার রোহিঙ্গাদের জন্যও খুশির বিষয়। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাংগঠনিকভাবে আরসা কোণঠাসা। কারণ উহারা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ হইয়া আরাকান আর্মির সহিত লড়াই করিয়া পরাস্ত। দলটির নেতারা যখন নূতন আশ্রয় খুঁজিতে বাংলাদেশে আসিয়াছে তখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাহাদের ধরিতে সক্ষম হইয়াছে। তবে উহাদের গ্রেপ্তার স্বস্তির বিষয় হইলেও শঙ্কা এখনও দূরীভূত হয় নাই।

অভিযোগ উঠিয়াছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ব্যবহারপূর্বক মিয়ানমার আর্মির চেকপোস্টে হামলা করাইয়াছিল আরসা। ইহার পর আরাকান আর্মির সহিত রাখাইনে সংঘাত আরম্ভ হইলে আরসাকে প্রলোভন দেখাইয়া ব্যবহার করে জান্তা সরকার। তাহাদের বলা হয়, আরাকান আর্মিকে পরাজিত করিতে পারিলে স্ব-ভূমিতে ফিরাইয়া আনা হইবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের। তবে জান্তা সরকার পরাজিত হইবার পর তথায় বেকায়দায় পড়ে আরসা ও সাধারণ রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক খুনোখুনি ও নানা অপরাধে আরসা নেতা আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে দুই ডজনের অধিক মামলা রহিয়াছে। ২০২২ সালে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রের নিকট মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হইয়াছিলেন সেনা গোয়েন্দা সংস্থার জনৈক কর্মকর্তা। ঐ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিও আতাউল্লাহ। 

এমন সময়ে আরসার শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হইয়াছে, যাহার কিছুদিন পূর্বেই প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করিয়া তাহাদের সহিত ইফতার করিয়াছিলেন। যথায় প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করিয়াছেন, রোহিঙ্গারা আগামী ঈদ তাহাদের জন্মভূমিতে করিতে পারিবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন লইয়া আশাবাদের সহিত তাহাদের খাবারের বরাদ্দ অর্ধেকে নামিয়া আসিবার দুঃসংবাদও রহিয়াছে। তবে রোহিঙ্গাদের অপরাধী কিংবা সন্ত্রাসী বানাইবার দায় আরসা উপেক্ষা করিতে পারে না। আমরা মনে করি, সাধারণ রোহিঙ্গারা শান্তিকামী। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরকেন্দ্রিক মাদক ও চোরাকারবারির যেই অপরাধের অভিযোগ, তাহার পশ্চাতে রহিয়াছে সশস্ত্র সংগঠন আরসা।
স্বাভাবিক কারণেই আরসা যদ্রূপ রোহিঙ্গাদের বন্ধু নহে, তদ্রূপ বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। তজ্জন্য সংগঠনটির প্রতি শূন্য সহিষ্ণুতা প্রদর্শন জরুরি। অস্বীকার করিবার উপায় নাই, রোহিঙ্গা শিবিরে আরসার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণেই রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয় ‘হোস্ট কমিউনিটি’ ও দেশব্যাপী এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈয়ার হইয়াছে। এমনকি রোহিঙ্গারা যখন নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হইয়াছে, তখন তাহাদের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অনুজ্জ্বল। এতদ্ব্যতীত আরসার কর্মকাণ্ডে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও হুমকির মুখে। সেই কারণেই সশস্ত্র সংগঠনটির প্রতি কোনো রকম দুর্বলতা প্রদর্শনের অবকাশ নাই।

এই আশঙ্কা অমূলক হইতে পারে না, বেকায়দায় থাকা আরসার অনেক নেতাকর্মী দেশব্যাপী ছড়াইয়া পড়িতে পারে। তজ্জন্য তাহাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখিতে হইবে। দেশ হইতে আরসার মূলোৎপাটন করিতে না পারিলে উহা নিরাপত্তা সংকট তৈয়ার করিবে। সীমান্তে আরসা শুধু নয়, তৎসহিত অপরাপর সশস্ত্র সংগঠনের দিকেও শ্যেনদৃষ্টি দিতে হইবে। কোণঠাসা আরসা নেতারা যখন নূতন আশ্রয় খুঁজিতেছে, তখন বাংলাদেশে যাহাতে তাহারা সেই সুযোগ না পায়, উহা নিশ্চিত করিতেই হইবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সশস ত র স গঠন ন আর ম র সহ ত আর ক ন অপর ধ আরস র হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সংগঠনটির দেওয়া বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ডুজার সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান ছাত্রদলের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সরিয়ে নেওয়া, বিবৃতিতে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়নের মতো আচরণকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ডুজা।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে পাণ্ডুলিপিবিষয়ক কর্মশালা শুরু

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিইএ পরিচালকের সাক্ষাৎ

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে ‌‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন/ভাগ বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদকে ঘিরে একটি বিবৃতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু শব্দচয়ন করে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে নিউজ করার পরেও দু’একটি গণমাধ্যমের উপর ছাত্রদলের প্রভাব খাটিয়ে সংবাদ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বিবৃতিতে আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কেউ নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিকার চাইবেন। কিন্তু ছাত্রদলের এ ধরনের আচরণ আমাদের সে আকাঙ্ক্ষাকে আশাহত করেছে।

ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাগোনিউজ২৪.কম-এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে ‘সময়ের আলো’র স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ নামে একজন ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।

নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃক সাব্বির আহমেদের অপেশাদার ও অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আকাশসীমায় নজরদারি বাড়িয়েছে পাকিস্তান
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • পাকিস্তানের সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি
  • ‘বিশ্বের নজরদারির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল’
  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা