জামালপুরে ‘পাওনা টাকা’ দেওয়ার কথা বলে যুবককে নির্যাতন
Published: 21st, March 2025 GMT
জামালপুরে ‘পাওনা টাকা’ দেওয়ার কথা বলে যুবককে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গরু চুরির অপবাদ দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে তাকে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে পরিবার।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পরে জড়িতদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- মো. ইলিয়াস (২৫) ও মো.
গত বুধবার জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুরের পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী যুবকের নাম মামুন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি শাহবাজপুর ইউনিয়নের গণেশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আরো পড়ুন:
কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার
নাটোরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
নির্যাতনের ঘটনায় জামালপুর থানায় ২১ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল হাকিম।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, রাজমিস্ত্রি মামুন তার কাজের টাকা পেতেন পূর্বপাড়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির হাসমত তালুকদারের কাছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মামুনকে ডেকে নেওয়া হয় হাসমত তালুকদারের বাড়িতে। টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির পর গরু চুরির অপবাদ দিয়ে সেখানে মামুনকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনকে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মামুনকে নির্যাতন করার ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মামুনের মা মাজেদা বেগম বলেন, “বুধবার সন্ধ্যার আগে আমার ছেলে বাজার নিয়ে বাড়িতে আসে। এর আগে হাসমত তালুকদার তাকে ফোন করে বলে পাওনা টাকা দিবে। টাকা নেওয়ার জন্য গেলে তার সঙ্গে আমার ছেলেন কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাড়িতে ডাকাত, গরু চোর বলে চিৎকার করে লোকজনকে ডাকেন হাসমত তালুকদার। পরে আমার ছেলেকে ৫-৭ জন মিলে বাঁশের লাঠি ও রড় দিয়ে মারধর করে। এরপর শরীরে রড ঢুকিয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমার একটাই ছেলে সংসারে উপার্জনক্ষম। বাবা পাগল, ওর ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। আমি আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের শাস্তি দাবি করছি।”
নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক বলেন, “৯৯৯-এ চোর আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে ঘটনা জানতে পারি। আহতকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
ঢাকা/শোভন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ আম র ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুর সীমান্তে গভীর রাতে আলো নিভিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
দিনাজপুরে বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ শিশুসহ ১৫ জন জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের অচিন্তপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
বিজিবির ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ বি এম জাহিদুল করিম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাহিদুল করিম জানান, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে অচিন্তপুর সীমান্তের ২৮৫ নম্বর সীমানা পিলার এলাকায় হঠাৎ আলো নিভিয়ে দেয় বিএসএফ। এ সময় সেখানে বিজিবি সদস্যরা নিয়মিত টহলে ছিলেন। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা ১৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেন। পরে বিজিবি ২৯ ফুলবাড়ী ব্যাটালিয়নের আওতায় অচিন্তপুর বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের আটক করে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। আটক ১৫ জনের মধ্যে ৩ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ, বাকিরা শিশু। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা সবাই নড়াইলের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর কয়েকজনের কাছ থেকে ব্যবহৃত মুঠোফোন ও নগদ অর্থ কেড়ে নেন বিএসএফ সদস্যরা।
বিজিবি জানায়, ওই ১৫ জন বর্তমানে অচিন্তপুর বিওপি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। তাঁদের বিষয়ে পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এর আগে বুধবার রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সিলেট, সুনামগঞ্জ, লালমনিরহাট ও ময়মনসিংহের সীমান্ত দিয়ে ৮৬ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সিলেটের জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জের ছাতক, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে তাঁদের ঠেলে পাঠানো হয়। তাঁদের আটক করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। বিজিবির সদর দপ্তর সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ২১০ জনকে পুশ–ইন করেছে ভারত।