ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে মানিকগঞ্জের ঘাট এলাকা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের ৩৬ কিলোমিটার অংশে থাকবে ৬০০ পুলিশ। 

রাজধানী ঢাকায় সাথে দেশের ২৩ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এ নৌরুট দুটিতে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ অর্ধেকের নিচে নেমে এলেও ঈদ মৌসুমে ভিড় বেড়ে যায়। এছাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদ মৌসুমে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ বাড়ে। 

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবারিয়া থেকে পাটুরিয়া-আরিচা ঘাট এবং সিংগাইরের ধল্লা সেতু এলাকা থেকে পাটুরিয়া-আরিচা ঘাট এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ। 

মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয় জানায়, ঈদ মৌসুমে হেমায়েতপুর-সিংগাইর- মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক হয়ে যানবাহনগুলো ঘাট এলাকায় পৌঁছায়। যানজট নিরসন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ( ডিবি) ও ট্রাফিক পুলিশ দলগতভাবে সমন্বয় করে কাজ করবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় থাকবে টহল টিম। জন নিরাপত্তা ও পাশাপাশি ভোগান্তি এড়াতে চালু থাকবে জরুরি টেলিফোন সেবা। 

ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে এরমধ্যেই মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা.

ইয়াসমিন খাতুন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিসিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন তিনি।

রাজবাড়ী জেলার যাত্রী হুমায়ুন ফরিদ বলেন, “আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি। ঈদের সময় ছুটিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়ে বাড়ি যেতে হয়। ঈদের সময় মহাসড়ক ও ঘাট এলাকায় ভিড় বাড়ার সাথে সাথে মলম পার্টির উপদ্রব বাড়ে। সেই সাথে পোশাক কারখানা একসাথে ছুটি হওয়ায় যানবাহনের চাপে ঘাট এলাকায় পৌঁছাতে বেশি সময় লাগে। এসব যানবাহন যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা করায় যানজট লাগে। এই বিষয়গুলােতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ালে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।” 

পাবনা জেলার বিলকিস আক্তার সাভারে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি বলেন, “স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে ডিপ মেশিন এলাকায় বসবাস করলেও ঈদের ছুটিতে সবাই ছুটেন গ্রামের বাড়ি। ঈদ মৌসুমে তার পরিবারের সবাইকে নিয়ে  আরিচা ঘাট এলাকায় পৌঁছাতে কয়েকগুণ বেশি বাস ভাড়া দিতে হয়। এছাড়া লঞ্চ পারাপারে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় তাদের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়।” 

একে তো ভোগান্তি অপরদিকে গন্তব্যে পৌঁছাতে বাড়তি খরচের সাথে ঝুঁকি কমাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। 

তোফায়েল আহমেদ নামের এক যাত্রী বলেন, “এ মহাসড়কে ঈদের সময় লক্কর ঝক্কর বাসগুলো যাত্রী পরিবহনে নেমে পড়ে। অনেক সময় পথিমধ্যে এসব বাস বিকল হয়ে পড়ে। ফলে এইসব বাসের জন্যে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়। ফিটনেসবিহীন লক্কর ঝক্কর বাস মহাসড়কে না থাকলে সমস্যা অর্ধেক কমে যাবে।” 

পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াসমিন খাতুন বলেন, “মহাসড়ক এলাকায় কেউ যেন চাঁদাবাজি এবং অতিরিক্ত মূল্যে যানবাহন ও নৌযানের টিকিট বিক্রি করতে না পারে এ বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ফিটনেস বিহীন যানবাহন এবং অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে কোন যানবাহন যেন নৌপথ এবং সড়কপথে চলাচল করতে না পারে এর জন্য পুলিশের সদস্যরা সাদা পোশাকে মাঠে থাকবে। ঈদ যাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।” 

ঢাকা/চন্দন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ র ঘ ট এল ক য় ঈদ ম স ম

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট। আজ শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা—রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ থেকে আসা কর্মজীবীরা বিভিন্ন যানবাহনে ঘাটে পৌঁছে লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটে প্রতিটি লঞ্চ যাত্রী বোঝাই করে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থেকে আসা পোশাকশ্রমিক মো. সাব্বির হোসেন হাত ধরে নববধূর সঙ্গে লঞ্চে উঠছিলেন। তিনি জানান, ঢাকার হেমায়েতপুরের একটি পোশাক কারখানায় দুজনেই কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর এটাই তাঁদের একসঙ্গে কর্মস্থলে ফেরার প্রথম যাত্রা।

সাব্বির বলেন, বালিয়াকান্দি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রাজবাড়ী হয়ে দৌলতদিয়ায় এসেছেন। রাস্তায় তেমন ভোগান্তি না থাকলেও লঞ্চঘাটে এসে ভিড়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে তাঁদের কারখানা খুলছে, তাই আজই রওনা হয়েছেন। ভিড়ের মধ্যে যাতে কেউ হারিয়ে না যায়, সে জন্য এক হাতে লাগেজ ও আরেক হাতে নববধূর হাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন।

রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে আসা আরেক পোশাকশ্রমিক মিম আক্তার বলেন, তিনি সাভারের একটি কারখানায় কাজ করেন। ছুটিতে বাড়ি এসে ঈদ করেছেন। শনিবার কারখানা খুলবে—জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাগনেকে সঙ্গে নিয়ে আজই রওনা হয়েছি। দেরি করলে ঝামেলা হতে পারে।’

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠের সেতু পেরিয়ে সারিবদ্ধভাবে যাত্রীরা পন্টুনে দাঁড়াচ্ছেন। টিকিটকর্মীরা সেতুতে উঠে টিকিট দিচ্ছেন। প্রতিটি লঞ্চ কয়েক মিনিটেই যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে। ঘাটে আনসার, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যদের সহায়তায় ভিড় সামলানো হচ্ছে।

দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মাসুদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভিড় কম ছিল, তবে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চাপ বাড়ছে। শনিবার থেকে অফিস ও কারখানা খোলার কারণে অনেকে আজই ফিরছেন।

ঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি আবদুল আউয়াল জানান, বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হলেও আজ সকাল থেকে ঘাটে ভিড় বেড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়ছে। এই চাপ শনিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. শিমুল হোসেন বলেন, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন পারাপারের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চের মধ্যে ১৮টি চলাচল করছে। অতিরিক্ত চাপ পড়লে বাকি দুটি লঞ্চও চালু করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ
  • দ্বিতীয় ট্রিপেই মেঘনায় ডুবল বালুবাহী বাল্কহেড
  • নৌযানের অভাবে নদী তীরে ঢাকামুখী যাত্রীদের অপেক্ষা
  • ভোলা লঞ্চঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ে বৈধ নৌযান–সংকট, ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি
  • রাজধানীমুখী মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট