যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই হইচই চলছে। আর এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে ডিম আমদানির পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

শনিবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ডিম আমদানির পরিকল্পনা করছে এবং আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য ডিমের দাম হাতের নাগালে রাখতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র মার্কিন মালিকানায় নেওয়ার প্রস্তাব ট্রাম্পের

ইয়েমেনের হুতিদের ‘সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের’ হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

দেশটির কৃষিমন্ত্রী ব্রুক রোলিন্স শুক্রবার (২১ মার্চ) হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমরা স্বল্পমেয়াদে লাখ লাখ ডিম আমদানির কথা বলছি।

বার্ড ফ্লুর বিধ্বংসী প্রাদুর্ভাবের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে এবং সেখানে ডিমের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সেখানে চাহিদার সঙ্গে যোগানের সামঞ্জস্য রাখা যাচ্ছে না।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসন এই খাতে সম্প্রতি ১ বিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণার দেওয়ার পর, এবার ডিম আমদানিরও ঘোষণা দিলো। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, গত এক বছরে ডিমের দাম ৬৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে এবং ২০২৫ সালে এটি ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রী রোলিন্স বলেছেন, তার দপ্তর নতুন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গেও আলোচনা করছে। তবে কোন দেশগুলো তা নির্দিষ্ট করে তিনি বলেননি।

পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়ার পোল্ট্রি সমিতিগুলো বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ডিম রপ্তানির বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

ফেব্রুয়ারিতে, মার্কিন কৃষি বিভাগ ডিমের দাম মোকাবেলায় ১ বিলিয়ন ডলারের একটি পাঁচ-দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যার বাজেট জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার, ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং কৃষকদের আর্থিক ত্রাণ কর্মসূচির জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার।

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা বাণিজ্যিক ডিম খামারগুলোকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ পরিষেবা দেবে। বার্ড ফ্লুর বিস্তার রোধে দুর্বলতা মোকাবেলায় খরচের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সেখানে বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবের পর ১৬ কোটি ২০ লাখ মুরগী, টার্কি এবং অন্যান্য পাখি নিধন করা হয়। যার ফলে ডিসেম্বর দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে।

গত বছর ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলতি মাসের শুরুতে কংগ্রেসে ট্রাম্প তার প্রথম ভাষণে পূর্বসূরী জো বাইডেনকে ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী করেন।

ট্রাম্প বলেন, “বিশেষ করে জো বাইডেন ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দিয়েছিলেন। আমরা দাম কমাতে কঠোর পরিশ্রম করছি।” 

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ম আমদ ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ