দত্ত শিরকে দুই দিন বাড়ি থেকে বের হননি। পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর আশঙ্কা ছিল। তিনি যেখানে বসবাস করেন, সেখানে সড়কের পাশে পার্ক করে রাখা গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলার সময় এমন ঘটনা ঘটেছে।

দত্তের বাড়ি থেকে মাত্র এক মাইল দূরে থাকেন আসলাম। তিনি তাঁর পুরো নাম বলতে চাননি। তিনিও একইভাবে ভীত, আতঙ্কিত। তিনি বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন, যেখানে তাঁর স্ত্রী ও মা রয়েছেন। তাঁর আশঙ্কা, বাড়িতে গেলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারে। তিনি বলছেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ নিরীহ মুসলিমদের গ্রেপ্তার করছে। আসলাম বলেন, ‘আমি কিছুই করিনি। কিন্তু পুলিশ যখন বাড়ি আসবে, তখন তারা আমি কোন সম্প্রদায়ের, সেটাই বিবেচনা করবে।’

মোগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিকে ঘিরে মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহর অশান্ত হয়ে ওঠে। সম্ভাজি নগরকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতার সূচনা হয়। এই জেলার আগের নাম ছিল আওরঙ্গবাদ। বর্তমান নাম ছত্রপতি শিবাজির জ্যেষ্ঠ ছেলে সম্ভাজির নামে, সম্ভাজি নগর।

দত্ত ও আসলাম দুজনই ৩০ লাখ মানুষের নগর নাগপুরের বাসিন্দা। ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের এই শহরে রয়েছে মোগল বাদশা আওরঙ্গজেবের সমাধি। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর সমাধি সেখান থেকে সরানোর দাবি জানিয়ে আসছেন হিন্দুত্ববাদীরা।

গত সোমবারের সহিংসতা ঘিরে নাগপুরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অন্তত ৫০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাঁদের বেশির ভাগই মুসলিম। এই নাগপুর শহরে ৩০ মার্চ সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই শহরে আবার বিজেপির আদর্শিক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদর দপ্তর।

ভারতজুড়ে গেরুয়া পোশাকের মানুষের জন্য এই নগরের আলাদা একটা খ্যাতি রয়েছে। কেন এই শহরে সাম্প্রদায়িক সংঘাত দেখা দিল। কে এই আওরঙ্গজেব? কেন এখনো তাঁকে নিয়ে ভারতে বিভক্তি?

ভারতীয় উপমহাদেশে মোগল শাসকদের মধ্যে আওরঙ্গজেব ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী। প্রায় ৫০ বছর তিনি ভারত শাসন করেছেন। তাঁর সমাধি নাগপুরে নয়। এটি নাগপুর শহর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) দূরে অবস্থিত। ওই জায়গার নাম ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছিল আওরঙ্গবাদ। এরপর ওই জায়গার নাম পরিবর্তমন করে ছত্রপতি সম্ভাজির নামে করা হয়েছে।নাগপুরে কেন সহিংসতা

গত সপ্তাহে মোগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিকে ঘিরে মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহর অশান্ত হয়ে ওঠে। সম্ভাজি নগরকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতার সূচনা হয়। এই জেলার আগের নাম ছিল আওরঙ্গবাদ। বর্তমান নাম ছত্রপতি শিবাজির জ্যেষ্ঠ ছেলে সম্ভাজির নামে, সম্ভাজি নগর। সেখানেই খুলদাবাদ এলাকায় রয়েছে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা সেই সমাধি সেখান থেকে সরানোর দাবি অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছেন। সম্প্রতি সেই দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।

গত সোমবার নাগপুর শহরের মহল অঞ্চলে এই দাবিতে উগ্রবাদী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা জমায়েত করেন। তাঁদের অভিযোগ, ১৬৫৮ সাল থেকে ১৭০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের শাসক আওরঙ্গজেব হিন্দুদের প্রতি বৈষম্য করেছেন এবং তাঁদের প্রার্থনালয়ে হামলা চালিয়েছেন। জমায়েতে সবুজ কাপড়ে ঢাকা আওরঙ্গজেবের কুশপুত্তিলকায় আগুন লাগানো হয়।

বিক্ষোভ কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক ও ভিএইচপির মুখপাত্র অমিত বাজপাই বলেন, ‘এই কবর আমাদের মাতৃভূমির জন্য এক কালো দাগ। আমরা একটা চত্বরে জড়ো হয়েছি এবং পুলিশের সামনে সবুজ কাপড়ে মোড়ানো আওরঙ্গজেবের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছি।’

অমিত আরও বলেন, ‘আমরা যা সঠিক মনে করি, তার দাবি করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।’

মুসলিম দোকানিসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামাক। বিশেষ করে এই পবিত্র রমজান মাসে যখন এমন আন্দোলন হচ্ছেআসিফ কুরেশি, আইনজীবী ও মহারাষ্ট্র বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি

আইনজীবী ও মহারাষ্ট্র বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আসিফ কুরেশি বলেন, মুসলিম দোকানিসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামাক। বিশেষ করে এই পবিত্র রমজান মাসে যখন এমন আন্দোলন হচ্ছে।

গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল, কুশপুত্তলিকাকে মোড়ানো সবুজ কাপড়ে পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াত লেখা ছিল। এমন তথ্য জানাজানির পর মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর একদল মুসলমি ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা পবিত্র কোরআনের আয়াত পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ভিএইচপির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

কুরেশি আল–জাজিরাকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল এবং ক্ষুব্ধ জনতা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল।’

তখন থেকে নাগপুর শহরের একাংশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এরপর পুলিশ অভিযান চালায়। কুরেশি বলেন, সংঘর্ষে জড়িত ছিল এমন মুসলিমদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে, ঠিক আছে। কিন্তু নামাজ আদায় করতে গেছে, এমন অনেক নিরীহ মানুষকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

সংঘর্ষের পর ভিএইচপির মুখপাত্র বাজপাই বলেন, তিনি চরম ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ধ। উগ্র হিন্দুত্ববাদী এই নেতা বলেন, ‘এখন আমরা আরও কঠোরভাবে প্রতিরোধ করব। তাঁরা (মুসলিম) কেন মনে করছে, দাঙ্গা বাঁধিয়ে তাঁরা আমাদের ভীতসন্ত্রস্ত করতে পারবেন। আমরা চাই, আওরঙ্গজেবকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হোক।’

মহারাষ্ট্র রাজ্যের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনাভিস গত মঙ্গলবার বলেন, তাঁর মনে হচ্ছে, সম্প্রতি বলিউডে নির্মিত একটি সিনেমায় আওরঙ্গজেবকে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই সিনেমার কারণে হিন্দুদের মধ্যে এমন প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

‘চাভা’ নামের ওই সিনেমায় মোগল শাসকের সঙ্গে মারাঠাদের যুদ্ধ চিত্রিত করা হয়েছে। সেই মারাঠারা তখন আজকের এই মহারাষ্ট্র শাসন করত।

ফাডনাভিস বলেন, ওই সিনেমা হয় তো ‘আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ’ সামনে নিয়ে এসেছে।

আওরঙ্গজেব কে

ভারতীয় উপমহাদেশে মোগল শাসকদের মধ্যে আওরঙ্গজেব ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী। প্রায় ৫০ বছর তিনি ভারত শাসন করেছেন। তাঁর সমাধি নাগপুরে নয়। এটি নাগপুর শহর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) দূরে অবস্থিত। ওই জায়গার নাম ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছিল আওরঙ্গবাদ। এরপর ওই জায়গার নাম পরিবর্তন করে ছত্রপতি সম্ভাজির নামে করা হয়েছে। তিনি ছত্রপতি শিবাজির ছেলে।

উগ্র হিন্দুত্ববাদী গ্রুপগুলোর দাবির মুখে ওই জায়গার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এই হিন্দুত্ববাদীরা দীর্ঘদিন ধরে মনে করছেন, আওরঙ্গজেব হচ্ছেন আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ভিলেন। তবে ইতিহাসবিদেরা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, আজকের ভারতে আওরঙ্গজেবকে যেভাবে চিত্রায়িত করা হচ্ছে, তাঁর বিষয়টি তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল।

ইতিহাসবিদ ও লেখক অড্রে ট্রুসকি তাঁর ‘আওরঙ্গজেব: দ্য ম্যান অ্যান্ড দ্য মিথ’ বইয়ে বলেছেন, ‘আওরঙ্গজেব একটি শক্তিশালী রাজপরিবারের উত্তরাধিকার। তিনি তাঁর বাবাকে বন্দী করে আর বড় ভাইকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেছিলেন। তবে ক্ষমতাপিপাসু এই শাসক তাঁর সময়ে যুদ্ধের ময়দানে ছিলেন অতুলনীয়। ঐক্য ও জোট গড়ার ক্ষেত্রে ছিলেন দারুণ এক নেতা।’

ট্রুসকি বলেন, ‘আওরঙ্গজেবের নীতিনির্ধারণে তাঁর প্রপিতামহ আরেক মোগল শাসক সম্রাট আকবরের প্রভাব ছিল অপরিসীম।’

এই ইতিহাসবিদ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আওরঙ্গজেব তাঁর সাম্রাজ্যে সব ধরনের মানুষকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছিলেন। একজন যুবরাজ হিসেবে তিনি পুরো সাম্রাজ্য ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি সবকিছু বোঝার চেষ্টা করেছেন। তিনি সব পক্ষের মানুষ—মারাঠা থেকে রাজপুত—সবার সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলেছিলেন। পরে এসব মানুষকে তিনি তাঁর রাজসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন।’

তবে ট্রুসকি এটাও বলেন, ‘আওরঙ্গজেব খুব কঠিন ইসলামি আইন বলবৎ করেছিলেন। তিনি বৈষম্যমূলক করারোপ করেছিলেন, যাতে সুরক্ষার বিনিময়ে হিন্দু অধিবাসীদের কর দিতে হতো।’ তিনি বলেন, ‘আওরঙ্গজেব তাঁর নানা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থেকে বেশ জটিল এক বাদশাহ ছিলেন।’

ভারতের উগ্র ডানপন্থী হিন্দুরা আওরঙ্গজেবকে ধর্মান্ধ বলে অভিযোগ তুললেও ট্রুসকি বলেন, এই মোগল শাসক তাঁর রাজত্বকালে বারবারই দেখিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস দিয়ে নয়, তিনি রাজ্য সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন ক্ষমতা দিয়ে। এই ইতিহাসবিদ বলেন, ‘যখনই ধর্ম আর ক্ষমতা মুখোমুখি অবস্থানে এসেছে, তিনি ক্ষমতাকে বেছে নিয়েছিলেন। সব সময়ই তিনি এ কাজটি করেছেন।’

তাঁর মনে হচ্ছে, সম্প্রতি বলিউডে নির্মিত একটি সিনেমায় আওরঙ্গজেবকে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ওই সিনেমার কারণে হিন্দুদের মধ্যে এমন প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারেদেবেন্দ্র ফাডনাভিস, বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী, মহারাষ্ট্রআওরঙ্গজেবকে নিয়ে ভারতে কেন বিভক্তি

অনেক ঐতিহাসিক একটি বিষয়ে একমত, শাসক হিসেবে ওই সময়ে কোনো রাজা বা বাদশাহ গণতান্ত্রিক ছিলেন না। ট্রুসকি বলেন, নানাভাবে দেখলে প্রাক্‌–আধুনিক যুগে ভারতের অন্যান্য রাজার থেকে আওরঙ্গজেবও বিশেষভাবে বিচ্যুত ছিলেন না।

ট্রুসকি বলেন, কিন্তু ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকেরা আওরঙ্গজেবের নিন্দা ও সমালোচনা করে থাকেন। বিজেপি ও আরএসএসের অনুসারী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা মূলত উপনিবেশ–পূর্ব যুগের সেই অপপ্রচারের পুনরাবৃত্তি করছেন।

ভারতে আওরঙ্গজেববিরোধী অনুভূতি ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে এবং এটিকে আক্রমণাত্মকভাবে এমনকি সহিংস উপায়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।

২০২৪ সালে একটি শোভাযাত্রায় আওরঙ্গজেবের ছবিসংবলিত পোস্টার বহন করায় চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০২৩ সালে ইনস্টাগ্রামে আওরঙ্গজেবকে নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক মুসলিম বালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

২০২২ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুলের ইতিহাসের বই থেকে মোগল সাম্রাজ্যের ইতিহাস অধ্যায় বাদ দিয়ে দেয়। বই থেকে আওরঙ্গজেব ও তাঁর পূর্বসূরি শাসকদের বিস্তারিত তথ্যসংবলিত একটি টেবিল মুছে দেওয়া হয়।

মোদি ও তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকদের বেশির ভাগের কাছে আওরঙ্গজেব কেবল ইতিহাস নয়। তাঁরা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করেন, আওরঙ্গজেব অসংখ্য মন্দির ধ্বংস করেছেন। আবার এটাও জানা যায়, তিনিই হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির তৈরির জন্য জমি ও অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলেন।

এখন হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা দাবি তুলেছেন, বিজেপিদলীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী আসন ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বারানসির জ্ঞানবাপি মসজিদের নিচে শিবলিঙ্গ আছে। তাঁরা দাবি করছেন, ষোড়শ শতকে নির্মিত বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করে ১৬৬৯ সালে আওরঙ্গজেবের নির্দেশে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে।

২০২২ সালে বারানসিতে এক জনসভায় ভাষণদানকালে নরেন্দ্র মোদি ‘আওরঙ্গজেবের নৃশংসতা ও তাঁর সন্ত্রাস’ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তরবারি দিয়ে তিনি সভ্যতার পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। ধর্মান্ধতা দিয়ে তিনি সংস্কৃতিকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছিলেন।’

তখন থেকে হিন্দুত্ববাদী নেতা নরেন্দ্র মোদি অসংখ্যবার আওরঙ্গজেবকে নিয়ে বক্তৃতা করেছেন।

নাগপুরে সংঘর্ষের এক দিন পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ফাডনাভিস বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে আওরঙ্গজেবের নির্যাতনের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও সরকারকেই তাঁর কবর সংরক্ষণের দায়দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’

১৯৫৮ সালের একটি আইনের আওতায় ভারতের প্রত্নতত্ত্ব সমীক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ঘোষিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্মতিচিহ্ন হিসেবে আওরঙ্গজেবের সমাধি সুরক্ষিত। বেআইনিভাবে এটির নকশা বদল বা ধ্বংস করা থেকে সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব।

নাগপুরে মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের উত্তেজনা চলতে থাকায় এখানকার বাসিন্দা ও স্থানীয় কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, আশপাশের এলাকায় সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

দত্ত শিরকে বলেন, ‘একের প্রতি অন্যের কোনো আস্থা বা বিশ্বাস নেই। আমি আস্থা রাখতে পারছি না যে আমার প্রতিবেশী সুযোগ পেলে আমার ও পরিবারের ক্ষতি করবে না।’

কুরেশি বলেন, মুসলিম বাসিন্দারা পুলিশের তল্লাশি অভিযানের ভয়ে আছেন। তিনি আশা করেন, কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়া রাজ্যের কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।

ইতিহাসবিদ ট্রুসকি বলছিলেন, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইতিহাস নিয়ে যেভাবে চিন্তা করে থাকে, সেখানে অতীতে বা বর্তমানে মুসলমিদের প্রতি ঘৃণার চিত্র ফুটে ওঠে। ইতিহাস আসলে এক জটিল বিষয়। কোনো সম্প্রদায় বা দেশ ইতিহাসকে কীভাবে দেখছে, কীভাবে অনুধাবন করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এই ইতিহাসবিদ আরও বলেন, ১৭ শতকে যদি ঘটনা ঘটেও থাকে, সেটি নিয়ে এখন মামলা–মোকদ্দমা ও সহিংসতা আসলে কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ ছাড়া আর কিছু নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ওই স ন ম কর ছ ল ন স ঘর ষ ব স কর কর ছ ন ব দশ হ দ র কর করছ ন ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

ইউটিউবে ভুয়া ‘টক শো’র ছড়াছড়ি, বিভ্রান্ত মানুষ

এক পাশে বেগম খালেদা জিয়া, অন্য পাশে শেখ হাসিনা, মাঝখানে খালেদ মুহিউদ্দীন—ইউটিউবে একটি ‘টক শো’তে তিনজনকে এভাবেই দেখা যায়। যদিও বিষয়টি পুরোটাই ভুয়া।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা কখনোই সুপরিচিত উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীনের টক শোতে (আলোচনা অনুষ্ঠান) যাননি; কিন্তু ইউটিউবে কারসাজি করে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে খণ্ড খণ্ড ভিডিও চিত্র (ক্লিপ)। মনে হয়, যেন টক শোর অতিথিরাই কথা বলছেন।

সুপরিচিত নবীন ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আলোচিত ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয় বিশ্লেষক, সাংবাদিক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ‘ইনফ্লুয়েন্সার’দের নিয়ে এ ধরনের ভুয়া টক শো তৈরি করা হচ্ছে। তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ ডিসমিসল্যাব বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, ইউটিউবে এমন ভুয়া টক শো অনেক রয়েছে।

ইউটিউবে কারসাজি করে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে খণ্ড খণ্ড ভিডিও চিত্র (ক্লিপ)। মনে হয়, যেন টক শোর অতিথিরাই কথা বলছেন।

ডিসমিসল্যাব ২৮৮টি ভিডিও পর্যালোচনা করেছে। তারা বলছে, অধিকাংশ ভিডিওতে মূল সাক্ষাৎকারগুলোকে প্রাসঙ্গিকতার বাইরে গিয়ে কাটাছেঁড়া করে এমনভাবে বানানো হয়েছে, যা আদতে ঘটেনি। এসব ভিডিও গড়ে ১২ হাজারবার দেখা হয়েছে।

‘ভুয়া টক শোকে উসকে দিচ্ছে ইউটিউব, যেখানে আসল কনটেন্ট জায়গা হারাচ্ছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন গতকাল বুধবার প্রকাশ করে ডিসমিসল্যাব। এতে বলা হয়, ভুয়া টক শোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়। অর্থাৎ সেখান থেকে অর্থ আয়ের সুযোগের সম্ভাবনাও রয়েছে। ইউটিউবের নিজস্ব নীতিমালা ভঙ্গ করে বানানো এ ধরনের ভিডিও প্রচার করে ইউটিউব নিজেও লাভবান হচ্ছে।

ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের ভুয়া টক শো অনেকে বিশ্বাস করেন, যার ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হয় এবং রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়ে।

খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে বানানো ভিডিওটি পর্যালোচনা করে ডিসমিসল্যাব বলেছে, ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যামেরার দিকে মুখ করে দুই নেত্রী অনলাইনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘ভার্চু৵য়াল টক শো’তে অংশ নিয়েছেন। যেখানে সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে; কিন্তু কিছুক্ষণ যেতেই দর্শক বুঝবেন, ভিডিওটি ভুয়া। খালেদা জিয়ার নড়াচড়া স্বাভাবিক না। শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর তাঁর মুখভঙ্গির সঙ্গে মিলছিল না। খালেদার ভিডিও ফুটেজ বিকৃত বা টেনে লম্বা করা হয়েছে। উপস্থাপকের হাতের অঙ্গভঙ্গি বারবার একই রকম দেখা যাচ্ছিল। বিভিন্ন উৎস থেকে ক্লিপ কেটে জোড়া লাগিয়ে কথোপকথন তৈরি করে এই ভুয়া টক শো বানানো হয়েছে।

এ ধরনের ভুয়া টক শো অনেকে বিশ্বাস করেন, যার ফলে সমাজে বিভাজন তৈরি হয় এবং রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ওপর প্রভাব পড়ে।ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী

ডিসমিসল্যাব জানায়, ভুয়া টক শোটি চলতি মাসের শেষ নাগাদ ফেসবুকে দুই লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। ভিডিওটির ওপর একটি লোগো ছিল ‘টক শো ফার্স্ট নিউজ’ নামে, যা একই নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে মিলে যায়। সেখানে একই ভিডিওটি আরও ১ লাখ ৩৫ হাজারবার দেখা হয়েছে। ওই চ্যানেলে এমন বেশ কিছু ক্লিপ ছিল, যা একইভাবে বিকৃত বা সাজানো হয়েছিল।

প্রবাসী সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউবে ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ নামে একটি চ্যানেলে টক শো উপস্থাপনা করেন। সম্প্রতি তাঁর ছবি, ফুটেজ ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্লিপ যুক্ত করে প্রচুর ভুয়া টক শো তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে। ডিসমিসল্যাব এ বিষয়ে গবেষণা করেছে। তারা ইউটিউবে ‘খালেদ মুহিউদ্দীন টক শো’ লিখে খোঁজ করে অন্তত ৫০টি চ্যানেল চিহ্নিত করেছে। খালেদ মুহিউদ্দীন ছাড়াও এসব চ্যানেলে অন্যান্য উপস্থাপক ও রাজনৈতিক বক্তাদের বিভিন্ন বক্তব্যের ক্লিপ জুড়ে দিয়ে ভুয়া টক শো তৈরি করা হয়েছে। গত ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চে খুঁজে পাওয়া এসব চ্যানেলের মধ্যে ২৯টি চ্যানেল অন্তত একটি বিকৃত টক শো প্রচার করেছে।

ডিসমিসল্যাব বলছে, চিহ্নিত ২৯টির মধ্যে ২০টি চ্যানেল তৈরি হয়েছে ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। বাকি চ্যানেলগুলো ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তৈরি। পর্যালোচনার আওতায় আসা ভিডিওগুলোর মধ্যে অন্তত ৫৮ জন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও টক শো উপস্থাপকের ছবি, ফুটেজ বা বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সমালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে ২০ শতাংশ ভুয়া টক শো। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে ১০ শতাংশ করে ভুয়া টক শোতে।

পর্যালোচনা করা ভিডিওগুলোতে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ (নেপথ্যের দৃশ্য) বদলানো, ফুটেজ কাটাছেঁড়া বা জুম করা এবং মূল প্রসঙ্গ বিকৃত করা হয়েছে। অধিকাংশ ভিডিও ইউটিউব, টেলিভিশন শো, ফেসবুক লাইভ এবং অডিও রেকর্ডিং থেকে ক্লিপ জোড়া লাগিয়ে তৈরি। অনেক ক্ষেত্রে, মূল বক্তার ফুটেজে এমন ভয়েসওভার (কথা) জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে নেওয়া এবং যার সঙ্গে কথোপকথনের কোনো সম্পর্ক নেই; কিন্তু বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিওর শিরোনাম ছিল, ‘ড. ইউনূস চীন সফরের পরপরই পদত্যাগ করলেন’। যেখানে যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করা হয়। যমুনা টিভির সঙ্গে ডিসমিসল্যাব যোগাযোগ করে জানতে পারে যে তাদের অনুমতি ছাড়া লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন এবং রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনির আলাদা আলাদা ফুটেজ জোড়া লাগানো হয়েছে।

ডিসমিসল্যাব বলছে, রাজনীতিবিদদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের নেতা ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের ফুটেজও এসব ভুয়া টক শোতে ব্যবহার করা হয়েছে।

পর্যালোচনার আওতায় আসা ভিডিওগুলোর মধ্যে অন্তত ৫৮ জন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও টক শো উপস্থাপকের ছবি, ফুটেজ বা বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।

ভুয়া টক শোর বিষয়ে ডিসমিসল্যাবকে খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, তিনি দর্শকদের তাঁর ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলের আধেয়র ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান।

ডিসমিসল্যাব বলেছে, ভুয়া টক শোগুলোতে বক্তব্য তুলে ধরা হয় মূলত রাজনৈতিক দল ও সরকারকে নিয়ে। ভুয়া টক শোগুলোর ৪০ শতাংশেই অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) সমালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে ২০ শতাংশ ভুয়া টক শো। বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্য রয়েছে ১০ শতাংশ করে ভুয়া টক শোতে।

বেশিবার দেখা হয়েছে, এমন পাঁচটি ভুয়া টক শো খুঁজে বের করেছে। এসব টক শোতে প্রচার করা হয়েছে অশনিবার্তা, আলোর রাজনীতি ও রাজনৈতিক আলোচনা নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে। পাঁচটি টক শো দুই থেকে ছয় লাখ বার দেখা হয়েছে।

নিজের নিয়মই মানছে না ইউটিউব

ইউটিউবের স্প্যাম ও প্রতারণামূলক আচরণ নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমন শিরোনাম, থাম্বনেইল বা বিবরণ ব্যবহার করা যাবে না, যার সঙ্গে ভিডিওর প্রকৃত বিষয়বস্তুর মিল নেই এবং যা দর্শকদের বিভ্রান্ত করে। এসব ভুয়া টক শোতে এ নীতি মানা হয়নি।

ইউটিউবের ছদ্মবেশ ধারণ নিষেধাজ্ঞা নীতিমালায় বলা আছে, অন্য কারও আসল নাম, ব্যবহারকারী নাম, ছবি, ব্র্যান্ড, লোগো বা ব্যক্তিগত কোনো তথ্য ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক, টক শো উপস্থাপক ও কনটেন্ট (আধেয়) নির্মাতাদের ফুটেজ ব্যবহার করায় এগুলো ইউটিউবের কপিরাইট নীতিমালাও লঙ্ঘন করতে পারে।

ডিজিটাল মিডিয়া–বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিজস্ব নীতিমালা থাকলেও ইউটিউব এ ধরনের ভুয়া ভিডিওকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দিচ্ছে। এতে গুণগত সাংবাদিকতা পিছিয়ে পড়ে।

২০২২ সালে একটি খোলাচিঠিতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক অভিযোগ করেছিল, ইউটিউব তাদের প্ল্যাটফর্মকে অপব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে—যেখানে অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিভ্রান্তি ছড়ানো, মানুষকে প্রতারিত করা, এমনকি সংগঠিত হয়ে অর্থ সংগ্রহ পর্যন্ত করছে।

মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ভুয়া কনটেন্ট বা আধেয় বন্ধ করতে প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব নীতি মনে করিয়ে দিয়ে তাদের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে উদ্যোগী হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ