চৈত্র মাসে রাতের আকাশে অনেক চমক দেখা যায়। আর তাই খালি চোখে কিংবা স্বল্পক্ষমতার বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপের মাধ্যমে আকাশে থাকা গ্রহ-নক্ষত্রসহ বিভিন্ন মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ মিলে থাকে। তবে ঢাকার আকাশে ধুলাবালুর কারণে মধ্যরাত পর্যন্ত ঠিকমতো আকাশ পর্যবেক্ষণ করা না গেলেও দেশের অন্যান্য স্থান থেকে গ্রহ-নক্ষত্রসহ বিভিন্ন মহাজাগতিক দৃশ্য দেখা যাবে।

২২ মার্চ

বসন্ত তারকা হিসেবে খ্যাত আর্কটারাস পূর্ব-উত্তর পূর্ব দিগন্তের ওপরে দেখা যাবে। সূর্যাস্তের পর মীন তারকামণ্ডলে অবস্থান করবে বুধগ্রহ। আর তাই খালি চোখেই ৬.

২৪ মিনিটে দেখা যাবে গ্রহটি। সাধারণ টেলিস্কোপের মাধ্যমে ৬টা ২১ মিনিটে দেখা যাবে সাইকি গ্রহাণু। সেটাস তারকামণ্ডলের দিকে থাকবে এই গ্রহাণু। ৭টা ৫৪ মিনিটে গ্রহাণু আইরিস দেখা যাবে মীন তারকামণ্ডলে। গ্রহাণু ম্যাসালিয়া রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে মেষ তারকামণ্ডলে দেখা যাবে। সরু ঘুড়ি আকৃতির বুটস তারকামণ্ডলের তারকাও দেখা যাবে।

২৩ মার্চ

আকাশের ‘সমুদ্র সর্প’ হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র নক্ষত্রের গোষ্ঠী হাইড্রা পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ভেস্তা নামের গ্রহাণুটি এদিন তুলা তারকামণ্ডলে ভালোভাবে দেখা যাবে রাত ৮টা ৪৯ মিনিটে। রাত ১২টা থেকে ২টা ১৪ মিনিটে বেশ স্পষ্টভাবে মঙ্গলগ্রহ দেখা যাবে। রাত ১০টা ০৪ মিনিটের পরে আকাশে বৃহস্পতি গ্রহের আবির্ভাব ঘটবে।

২৪ মার্চ

বাইনোকুলারের মাধ্যমে এদিনে আকাশে মেসিয়ার ৪১ বা এম৪১ ক্লাস্টার তারকা আকাশে স্পষ্ট দেখা যাবে। একই সঙ্গে মেসিয়ার ৫০ বা এম৫০ তারকাগুচ্ছও দেখার সুযোগ মিলবে। এম৫০ তারকাগুচ্ছ পৃথিবী থেকে ২৯০০ আলোকবর্ষ এবং এম৪১ তারকাগুচ্ছ ২৩০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

২৫ মার্চ

আকাশে ওরিয়ন তারকামণ্ডল দেখা যাবে। তবে এই তারকামণ্ডলের উজ্জ্বলতা দক্ষিণ-পশ্চিমে গত মাসের চেয়ে কমতে শুরু করেছে।

২৬ মার্চ

বুধগ্রহ ভোর ৫টা ৪১ মিনিটে আকাশে দেখা যাবে। শুক্র গ্রহ একই সময়ে আকাশে শুকতারা হিসেবে ভোর ৫টা ১৭ মিনিটের পর দেখার সুযোগ মিলবে।

২৭ মার্চ

রাত ১০টার পর ৩টা পর্যন্ত আকাশে লিও ট্রিপলেট গ্যালাক্সি দেখা যাবে। এ ছাড়া তিনটি সূক্ষ্ম সর্পিল ছায়াপথও দেখা যেতে পারে।  

২৮ মার্চ

সন্ধ্যা ৭টা ১২ মিনিটে আকাশের ঠিক মধ্যভাগে মঙ্গলগ্রহ দেখা যাবে।

সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ