শ্রীপুরে শ্রমিককে মারধরের জেরে দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ, পরে প্রত্যাহার
Published: 22nd, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার এক শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ শনিবার বেলা দেড়টা থেকে মহাসড়কের নয়নপুর এলাকায় এক্সিস নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কর্মসূচিতে অংশ নেন।
শ্রমিকদের অবরোধের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বেলা তিনটার দিকে সেনাবাহিনী, থানা ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
শ্রমিকদের ভাষ্য, আজ সকাল ১০টার দিকে কারখানার সুপারভাইজার আল আমিন কর্মস্থলে এসে মোশাররফ হোসেন নামের এক শ্রমিককে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। তাঁকে সজোরে লাথি মেরে মেশিনের ওপর ফেলে দেন। এতে মোশাররফের শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক মো.
মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, শ্রমিকেরা যে দাবিগুলো করেছেন, তা নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দিলে বেলা পৌনে তিনটার দিকে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। এ ছাড়া একজন শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।