আবাসন ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা কারবার, বোন-ভগ্নিপতি নিয়ে সিন্ডিকেট
Published: 22nd, March 2025 GMT
আবাসন ও বায়িং হাউস ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার বড় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়ার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা। মাদক কারবার তিনি পারিবারিক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ছোট বোন তানিয়া, বোনের স্বামী মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ওমর ফারুককে যুক্ত করেছেন এই কারবারে।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সরাসরি ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রতিমাসে অন্তত একটি ইয়াবার বড় চালান ঢাকায় নিয়ে আসেন তারা। সর্বশেষ গত শুক্রবার এক লাখ ৬০ হাজার পিসের চালান নিয়ে রাজধানীতে প্রবেশের পর হাতিরঝিল থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে ওই তিনজনসহ গাড়ি চালক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন। আজ শনিবার চারজনকেই আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ইয়াবা উদ্ধার ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত আজ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডিএনসির ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। নজরুলের স্থায়ী বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায়। তবে বাস করেন ডেমরার কোনাপাড়ায়। তার বোন তানিয়া ও তানিয়ার স্বামী ফারুকও কোনাপাড়ার ওই বাসায় বাস করেন। তবে ফারুকের পৈত্রিক বাড়ি চট্টগ্রামের খুলশী থানায় এলাকায়। গ্রেপ্তারকৃত আল মামুন কারবারি নজরুরের ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরে। তবে বাস করেন কোনাপাড়ায়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া নজরুল, তার বোন তানিয়া ও বোনের স্বামী ফারুক ইয়াবার গডফাদার।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নজরুলের বায়িং হাউস ও আবাসন ব্যবসা রয়েছে। ইয়াবা বিক্রির টাকা ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়। প্রতিমাসে নজরুল একটি করে ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন ঢাকায়। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি ক্রেতার কাছে এই মাদক বিক্রি করেন। আনুমানিক তিন মাস আগে ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন জানতে পারেন, নজরুল ও তার চক্র টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়িতে ইয়াবার বড় চালান আনে। তাদের ওপর কড়া নজরদারী রাখলেও কৌশলে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। গত মাসে তাদের ধরতে একটি অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
ডিএনসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সপ্তাহখানেক আগে জানা যায়, চক্রটি আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ঢাকায় এনে মজুত করবে। তারা টেকনাফের একটি রির্সোটে বিলাসবহুল গাড়ির (হুন্দাই) পাদানীর নিচে প্যানেলে বিশেষ কৌশলে এক লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে প্যানেলটি ঝালাই করে। এরপর ইয়াবাসহ গাড়ি নিয়ে তারা ঢাকায় আসেন। গাড়িতে চালক মামুন ছাড়াও নজরুল, তানিয়া ও ফারুক ছিলেন। গতকাল শুক্রবার হাতিরঝিলে তাদের গাড়ি আটকের পর তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি। পরে পাদানিতে নতুন ঝালাই করা স্থান ভেঙে ইয়াবা পাওয়া যায়। গাড়িটি নজরুলের।
সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন জানান, আজ শনিবার আদালতের নির্দেশে চার আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক রব র ড এনস নজর ল ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।