ব্রহ্মপুত্র নদে বন্দুক দিয়ে পাখি শিকার করা সেই দুই শিকারির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ি বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান মামলাটি করেছেন। আসামিরা হলেন– গাইবান্ধার কামারজানি গিদারি এলাকার সুজন মিয়া ও উজ্জল চন্দ্র সরকার। 

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সমকালে ‘বন্দুক দিয়ে পাখি শিকার ব্রহ্মপুত্র নদে, শিকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত আবেদন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

মামলার আরজিতে বলা হয়, ফুলছড়ির বুলবুলির চরের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদে বন্দুক ও পাখিসহ দুই শিকারিকে দেখা গেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে একদল সৌখিন আলোকচিত্রীর হাতে তারা ধরা পড়েন।

এ সময় আলোকচিত্রী অধ্যাপক ড.

তুহিন ওয়াদুদ, সাহিত্যকর্মী রানা মাসুদ, প্রকৌশলী ফজলুল হক, হাসান মাহবুব আখতার লোটনসহ অনেকে ছিলেন। শিকারির হাতে দুর্লভ প্রজাতির পরিযায়ী দুটি লালঝুঁটি ভুতিহাঁস দেখা যায়। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ শিকারির ভিডিও সাক্ষাৎকার নেন।

সাক্ষাৎকার সূত্রে জানা যায়, শিকারির নাম সুজন মিয়া। তিনি গাইবান্ধার কামারজানি গিদারি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবাও পাখি শিকার করতেন। সেই বন্দুক হারিয়ে যাওয়ায় অন্যের বন্দুকে শিকার করেন। যার বন্দুক নিয়ে আসেন, তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে থাকা উজ্জ্বল চন্দ্র সরকারও একই এলাকার বাসিন্দা।

ভিডিও সাক্ষাৎকারটি কামারজানি এলাকায় কিছু লোকের কাছে পাঠালে তারা জানান, তাঁর আসল নাম বাবু। তিনি আসলেই পাখি শিকারি। তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে পাখি নিরাপদ হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ শিকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের পর আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে গাইবান্ধা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফুলছড়ি আমলি আদালতে মামলা করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ড. তুহিন ওয়াদুদ, রানা মাসুদ, ফজলুল হক ও হাসান মাহবুব আখতার লোটনকে।

ফুলছড়ি থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা হলে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে থানাকে। তদন্ত চলছে। 

অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। তাঁর ওপর বন্দুক দিয়ে পরিযায়ী পাখি শিকার মেনে নেওয়া যায়না। অপরাধীর শাস্তি হলে দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন দ ক দ য় ফ লছড়

এছাড়াও পড়ুন:

‘৫০ বছরে একবার জন্মায় এমন প্রতিভা’ — ইয়ামালকে নিয়ে ইনজাঘি

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো প্রতিযোগিতায় বয়স যে শুধুই একটি সংখ্যা, তা যেন প্রমাণ করে চলেছেন বার্সেলোনার তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামাল। গত রাতে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে প্রথম লেগে দুর্দান্ত এক গোল করে নিজের জাত চেনালেন ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

এস্তাদি অলিম্পিক লুইজ কোম্পানিস স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মাত্র ২১ মিনিটেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ইন্টার মিলান। তবে বার্সেলোনা হাল ছাড়েনি। ২৪ মিনিটে পাঁচজন ডিফেন্ডারকে চমৎকারভাবে কাটিয়ে গোল করে ব্যবধান কমান ইয়ামাল।

গোলটি দেখে মুগ্ধ ইন্টার কোচ সিমিওন ইনজাঘি ম্যাচ শেষে বলেন, ‘ইয়ামাল এমন এক প্রতিভা, যে প্রতি ৫০ বছরে একবার জন্মায়। তাকে কাছ থেকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। আমরা তাকে থামাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না।’

শুধু এক গোলেই থেমে থাকেননি ইয়ামাল। পুরো ম্যাচজুড়ে ইন্টারের রক্ষণদেয়ালকে নানাভাবে ভুগিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়।

ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক বলেন, ‘ইয়ামাল সত্যিই বিশেষ এক প্রতিভা। বড় মঞ্চে তার ঝলক আমাদের জন্য আশীর্বাদ। সিমিওনের বক্তব্য যদি সত্যি হয় যে এমন খেলোয়াড় ৫০ বছরে একজন আসে, তাহলে আমাদের সৌভাগ্য তাকে পেয়েছি।’

ম্যাচের একটি গোল ছিল আত্মঘাতী। ৬৫ মিনিটে ইয়ামালের পাস থেকে রাফিনিয়ার নেওয়া শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে, বলটি ইন্টার গোলরক্ষক ইয়ান সোমেরের পিঠে লেগে জালে ঢুকে পড়ে। অন্যদিকে, ইন্টারের তিনটি গোলেই অবদান ছিল ডাঞ্জেল ডামফ্রিসের—দুটি নিজে করেন, আর একটি করান ম্যাচের ১ মিনিটেই মার্কাস থুরামকে দিয়ে।

আগামী ৬ মে সান সিরোতে হবে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ। সেই ম্যাচেই নিশ্চিত হবে ফাইনালে কারা জায়গা করে নিচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ