৪০০ কোটি টাকার ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছে শেয়ারবাজারের লেনদেন
Published: 22nd, March 2025 GMT
দেশের শেয়ারবাজারের লেনদেন তলানিতে। টাকার অঙ্কে দৈনিক শেয়ার কেনাবেচা ৪০০ কোটি টাকার ঘরে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসগুলো বলছে, দৈনিক হাজার কোটি টাকার লেনদেন না হলে ব্রোকারেজ হাউস এবং বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসান এড়াতে পারে না। কার্যত গত এক দশক ৯০ শতাংশ ব্রোকারেজ হাউস লোকসানে চলছে। এ অবস্থান উত্তরণে কোনো চেষ্টাও নেই।
লেনদেন কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত না হওয়ায় ব্রোকারেজ হাউসগুলো টিকে থাকতে পর্যাপ্ত ব্রোকারেজ কমিশন বা ব্যবসা পাচ্ছে না। ফলে কোনো কোনো ব্রোকারেজ হাউস বিনিয়োগকারীদের নগদ জমা বা শেয়ার বিক্রি করে নিজস্ব খরচ মেটাচ্ছে। এমনকি টিকে থাকার লড়াইয়ে শেয়ার কারসাজির সুযোগ করে দিয়ে নিজেরাও কারসাজিতে জড়াচ্ছে ছোট-বড় কিছু ব্রোকারেজ হাউস।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বিবেচনায় বাজার মূলধন ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ওই দিন এ বাজারে ৪৯৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের বিবেচনায় শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দেশের অন্যতম প্রধান শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সিইও সাফফাত রেজা জানান, আন্তহর্জাতিক মানদণ্ডে কোনো দেশের শেয়ারবাজারে ফ্রি-ফ্লোট শেয়ারের অন্তত ১ থেকে ২ শতাংশ লেনদেন হলে ওই বাজারের তারল্য ব্যবস্থা ভালো বলে ধরা হয়। বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এ ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে আছে।
এত অল্প লেনদেন নিয়ে কী করে ব্রোকারেজ হাউসগুলো টিকে আছে– জানতে চাইলে ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, বর্তমানে ৯০ শতাংশ ব্রোকারেজ হাউস লোকসানে চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ঠিকমতো বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। অন্য ব্যবসা থেকে টাকা এনে বেশির ভাগ ব্রোকার তাদের ব্যবসা চালু রেখেছেন, অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের মালিক ভর্তুকি দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক এবং বিএলআই সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন জানান, ক্রমাগত লোকসানের কারণে গত সপ্তাহে একটি নতুন ব্রোকারেজ হাউসের লাইসেন্স ‘সারেন্ডার’ করতে আবেদন করেছে।
এমন অবস্থার কারণ জানতে চাইলে ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, গত ১৫ বছরে মন্দ কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, যার অনেকগুলো বন্ধ বা লোকসানে ধুঁকছে। ভালো কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। ভালো কোম্পানি কম থাকায় বিনিয়োগকারীরা এ বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়েছেন। ফলে লেনদেন কমছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্যই পুঁজিবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির চেয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বেশি। সরকারও বেশি ট্যাক্স পায়। লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ আছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ বাজারে। তবুও অজানা কারণে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারের মনোযোগ পায়নি এ বাজার।
অবস্থার বদল হতে পারে কী করে– এমন প্রশ্নে ডিবিএ সভাপতি বলেন, ভালো শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হলে পরিস্থিতি বদলাবে। সরকারই এর সূচনা করতে পারে সরকারি লাভজনক কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করে। বিদেশি কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার নীতি গ্রহণ করলে দেশি-বিদেশি সব বিনিয়োগকারীর মনোযোগ আকর্ষণ করবে। তখন বিনিয়োগ বাড়বে, লেনদেনও বাড়বে। এতে যে শুধু ব্রোকারেজ হাউসগুলো টিকে যাবে তা নয়, দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র ল নদ ন ব যবস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাক্তন প্রেমিক মিঠুনের জন্মদিনে যে বার্তা দিলেন মমতা
ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ভারতীয় বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি যেমন শাসন করেছেন, তেমনি বলিউডেও নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। অভিনয় গুণে মিঠুন কুড়িয়েছেন যশ-খ্যাতি।
১৯৫০ সালের ১৬ জুন জন্মগ্রহণ করেন মিঠুন। আজ পঁচাত্তর পূর্ণ করে ছিয়াত্তর বছর বয়সে পা দিতে যাচ্ছেন। বিশেষ দিনে মিঠুনকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তার প্রাক্তন প্রেমিকা-অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর।
জন্মদিন উপলক্ষে মিঠুনের উদ্দেশ্যে মমতা শঙ্কর বলেন, “প্রিয় মিঠুন, সুস্থ থাক। সবাইকে নিয়ে ভালো থাক। খুশিতে ও আনন্দে থাক। আরো ভালো ভালো কাজ আমাদের উপহার দে। সাই বাবার কাছে তোর জন্য সারাক্ষণই প্রার্থনা করি।”
আরো পড়ুন:
অক্ষয়ের সিনেমার আয় ৩৩২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে
আমি গর্বিত আমি একজন মুসলিম: আমির খান
মিঠুনের সঙ্গে পরিচয়ের কথা মনে করে মমতা শঙ্কর বলেন, “মিঠুনের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা মৃণালদার বাড়িতে। তখন ‘মৃগয়া’ নিয়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আমার আর মিঠুনের জীবনের প্রথম সিনেমা এটি। কত স্মৃতি। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব।”
শুটিং সেটে এবং সেটের বাইরে মমতার সঙ্গে খুবই রসিকতায় মেতে উঠতেন মিঠুন। স্মৃতিচারণ করে মমতা শঙ্কর বলেন, “বাবা, মিঠুন, দারুণ বিচ্ছু। সারাক্ষণ ওর রসিকতা। সবার পিছনে লাগত। আমিও ছাড় পেতাম না। ২৪ ঘণ্টা ওর মাথার মধ্যে দুষ্টুবুদ্ধি ঘুরত। আমাকে খুব লেগ পুল করত। আর আমি রেগে যেতাম। সে কী বলব!”
২০২৬ সালে ‘মৃগয়া’ সিনেমার ৫০ বছর পূর্তি হবে। সেই সূত্রে মিঠুন-মমতারও অভিনয় ক্যারিয়ার ৫০ বছরে পা দেবে। এই বিষয়টা মমতার মনকে বেশ প্রফুল্ল করে তুলেছে!
ভারতীয় বাংলা সিনেমার গুণী অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। বিয়ের দিন-তারিখও চূড়ান্ত হয়েছিল। ছাপানো হয়েছিল বিয়ের কার্ড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাতপাকে বাঁধা পড়েননি এই যুগল। মিঠুনের সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পর মমতা চন্দ্রোদয়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সবকিছু ভুলে এখনো এ জুটির বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে।
দেব প্রযোজিত ‘প্রজাপতি’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেন মিঠুন-মমতা। এ অভিনেত্রী বলেন, “মিঠুন আমার বন্ধু, সারাজীবন থাকবে। হ্যাপি বার্থ ডে মিঠুন। সব্বাইকে নিয়ে তুই খুব ভালো থাকিস।”
ঢাকা/শান্ত