লাউ, শিম, মোচার চপ বিক্রি করে চমক যশোরের এক দম্পতির
Published: 24th, March 2025 GMT
চপ বললে আলুর চপের ছবিটাই চোখে ভাসে। তবে এই ধারণা বদলে দিয়েছেন যশোরের কেশবপুরের এক দম্পতি। অভাবের সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে তাঁরা যখন গ্রামের বাজারে চপের দোকান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন ভিন্ন কিছু করার ভাবনা তাঁদের মাথায় আসে। সেই ভাবনা থেকেই তাঁরা লাউ, টমেটো, শাক, শিম, কাঁচা মরিচ, মোচা ও রসুনের মতো উপকরণ দিয়ে চপ বানাতে শুরু করেন। স্বভাবতই এই চপ ভালো সাড়া ফেলেছে।
মো.
আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিদিন তাঁরা যত সবজি চপ তৈরি করেন, তার সব বিক্রি হয়ে যায়। অনেকে না পেয়ে ফিরে যান। আলুর মতো অন্যান্য উপকরণের চপ বানানোর চিন্তা মাথায় এল কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইফতারে সবাই ভাজা খেতে পছন্দ করেন। সেই ভাজা যদি শাক আর সবজির হয়, তাহলে মানুষ পছন্দ করবে, এমন একটা ধারণা তাঁর মনে ছিল। সে কারণেই এমন উদ্যোগ তাঁদের।
সকাল থেকে প্রস্তুতি শুরু করেন বলে জানালেন জোহরা বেগম। তিনি বলেন, প্রথমে লাউয়ের চপ দিয়ে শুরু করেছিলেন। পরে এর সঙ্গে যুক্ত করেন টমেটো চপ। এরপর একে একে যুক্ত করেন শিম, পুঁইশাক, মোচা ও রসুন।
লুৎফর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘ইফতারের সময় চপ আমরা সচরাচর খেয়ে থাকি। তবে সবজির চপ খুবই ভালো লাগে। এ জন্য প্রায় প্রতিদিনই বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাই। স্বাদও যেমন, তেমনি পুষ্টিকরও।’
এসব চপের কথা এখন সবার মুখে মুখে বলে দাবি করলেন গড়ভাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, এই সবজি চপ এখন এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে দূর–দূরান্তের মানুষও কিনতে আসেন।
আলাউদ্দিন দুবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ। ভিটেবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জমি নেই। তিনি এর আগে খেতখামারে কাজ করে সংসার চালাতেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার পর আর কোনো কাজ করতে পারেন না। পাঁচজনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এরপর স্বামী–স্ত্রী মিলে দোকানটি দিয়েছেন। জানালেন, বাকিতে তেল, বেসনসহ সব পণ্য কেনেন। বিক্রির টাকা পেয়ে শোধ করে আবার নিয়ে আসেন। এভাবেই চলছে তাঁদের। দিন শেষে বেচাবিক্রি করে তাঁদের চার থেকে পাঁচ শ টাকা লাভ থাকে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা
আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।
অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।