সরকারি প্রতিষ্ঠান সাবমেরিন কেবল কোম্পানি (বিএসসিসিএল) ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড সেবার দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সরকার। কিন্তু মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সেবাদাতা কোম্পানিগুলো বলছে, ব্যান্ডউইথের দাম কমলেও তা গ্রাহকের ইন্টারনেটের দামে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কারণ এই মূল্য হ্রাসে কোম্পানিগুলোর সার্বিক ব্যয় তেমন কমবে না। কর ও পরিবহন খরচ না কমালে ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর সুফল গ্রাহক তেমন পাবে না। 

গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিএসসিসিএলের বোর্ড সভায় ব্যান্ডউইথের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, মানুষ যেন সাশ্রয়ে ইন্টারনেট পায় সেজন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাইকারি পর্যায়ে দাম কমানো তার মধ্যে অন্যতম। এ সিদ্ধান্তের ফলে ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে সব ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমবে। টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা ভোক্তা পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

তবে মোবাইল অপারেটর এবং ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ব্যান্ডউইথের দাম তাদের মোট খরচের তুলনায় একেবারে নগণ্য। ফলে এখানে দাম কমিয়ে গ্রাহকদের খুব বেশি সুবিধা দেওয়া যায় না। 

রোববার রাতে দুটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে সমকালের কথা হয়। তারা বলেন, ব্যান্ডউইথ কিনতে যে টাকা লাগে, তা তাদের মোট খরচের মাত্র দুই শতাংশ। ফলে চাইলেও গ্রাহককে খুব বেশি সুবিধা দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া বর্তমানে ইন্টারনেটের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কমেছে, যা দিয়ে পরিচালন খরচই উঠছে না। ফলে মানসম্মত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। গ্রাহককে দাম কমানোর সুবিধা দিতে চাইলে কর কমাতে হবে। পরিচালন পর্যায়ে খরচ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন, ১০০ টাকা আয় করলে কর ও অন্যান্য খরচসহ ৫৬ টাকা সরকারকে দিতে হয়। ২৮ টাকা খরচ হয় বিভিন্ন গেটওয়ের চার্জ দিতে। এর পর রয়েছে বিনিয়োগ, পরিচালন ব্যয়। তাই শুধু ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে ইন্টারনেটের খরচ কমানো যাবে না।

তারা জানান, বিএসসিসিএল থেকে প্রতি এমবিপিএস (মেগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ কিনতে এখন স্ল্যাব অনুসারে গড়ে ১৮৫ থেকে ২১০ টাকা খরচ হয়।

গ্রাহক পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, প্রথমত বিএসসিসিএল থেকে ব্যান্ডউইথ সরাসরি কেনে ইন্টারনেট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো। সেখান থেকে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো কেনে। ফলে ব্যান্ডউইথের দাম কমলে আইজিডব্লিউদের খরচ কমবে। এখন যদি তারা কম দামে ব্যান্ডউইথ দেয় তাহলে আইএসপির খরচ খানিকটা কমবে। কারণ ব্যান্ডউইথের দাম আইএসপির মোট খরচের ১০ থেকে ২০ শতাংশ। এই খরচ কমার হার এতই কম, গ্রাহক পর্যায়ে দাম খুব বেশি কমানো সম্ভব হয় না। ব্যান্ডউইথের দাম কমলে যেটা হবে– গ্রাহক মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা পাবে।

ইন্টারনেট অপারেটরগুলোর পরিবহন খরচ কামনোর বিষয়ে ফয়েজ আহমদ বলেন, এ পর্যায়ে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম সুবিধা দেওয়ার কথা হচ্ছে। তাতে পরিবহন খরচ বাবদ কোম্পানিগুলোর খরচ ৩৯ শতাংশ কমে যাবে।

ডিডব্লিউডিএম হচ্ছে ডেনস ওয়েভ লেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং মেশিন, যা মোবাইল নেটওয়ার্ককে অপটিক্যাল ফাইবারে যুক্ত করে। শুরুতে ডিডব্লিউডিএম মেশিন নিয়ন্ত্রণ করত মোবাইল অপারেটররা। ২০২১ সালের পর তা ফাইবার প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনটিটিএন) দেয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে ডিডব্লিউডিএম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ চেয়েছে মোবাইল অপারেটররা; যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে ফাইবার প্রতিষ্ঠানগুলো।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম ন র স দ ম কম ন খরচ কম পর য য় গ র হক সরক র র খরচ খরচ ক

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের কেচ জেলার শেরবান্দি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অভিযান চলাকালে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। একই অভিযানে ‘ভারত-সমর্থিত’ পাঁচজন সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। খবর সামা টিভির।

আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, শেরবান্দি এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা ধ্বংসে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর গাড়ি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, এতে পাঁচজন সেনা নিহত হন। 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানকে সহজেই হারিয়ে ‘সুপার ফোরে’ এক পা ভারতের

ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাকিস্তানের মামুলি সংগ্রহ

নিহত সেনারা হলেন- ক্যাপ্টেন ওয়াকার আহমদ (লোরালাই), নায়েক আসমাতুল্লাহ (ডেরা গাজী খান), ল্যান্স নায়েক জুনায়েদ আহমদ (সুক্কুর), ল্যান্স নায়েক খান মোহাম্মদ (মারদান) এবং সিপাহী মোহাম্মদ জাহুর (সোয়াবি)।

আইএসপিআর বলেছে, পাকিস্তানের সাহসী অফিসার ও সেনাদের ত্যাগ দেশ থেকে সন্ত্রাস নির্মূলের দৃঢ় সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে।

এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বাড়ছে। শুধু গত এক সপ্তাহেই খাইবার পাখতুনখোয়ার বিভিন্ন অভিযানে অন্তত ১৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়ার লালকিলা মাইদান এলাকায় ‘ভারত সমর্থিত সন্ত্রাসী’দের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাতজন সেনা সদস্য নিহত হন।

পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, এসব অভিযানে তারা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং অপারেশন চলমান থাকবে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত