দেশজুড়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজ করছে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। সুহৃদদের ভালো কাজের মূল্যায়ন ও অনুপ্রেরণা জোগাতে ২০২৩-২৪ সালে পরিচালিত কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে জেলা, উপজেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চার ইউনিটকে ‘সেরা সুহৃদ’ ঘোষণা এবং পুরস্কৃত করা হয়। আয়োজনের বিস্তারিত…
তরুণ্যনির্ভর পাঠক সংগঠন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ। সংগঠনটি দেশজুড়ে বৈচিত্র্যময় ইতিবাচক কাজ করে আসছে টানা ২০ বছর ধরে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজের পাশাপাশি যে কোনো দুর্যোগ কিংবা সংকটে মানুষের কাছে ছুটে যান সুহৃদরা। কেউ কেউ আবার কাজ করেন নেপথ্যচারী কর্মী হিসেবে। আবার সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেকে গড়তেও চেষ্টার কমতি নেই তাদের। এমন কর্মী বা ইউনিট অনেক। তবে সমকালের ২০ বছর পদার্পণ উপলক্ষে গত দুই বছরে ইউনিটগুলোর কার্যক্রমের ভিত্তিতে বাছাই করা হয় সেরা চার সুহৃদ ইউনিট। নির্বাচিত ইউনিটগুলো হলো– সেরা জেলা পটুয়াখালী ও রাজবাড়ী (যুগ্মভাবে), উপজেলা পাবনার ঈশ্বরদী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকার অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়। বিজয়ী চার ইউনিটের প্রত্যেককে সম্মাননা স্মারক, সম্মানী ও উপহার তুলে দেন সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু, ডেপুটি চিফ রিপোর্টার সাহাদাত হোসেন পরশ, মফস্বল সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সহকারী সম্পাদক হাসান জাকির, সুহৃদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ফরিদুল ইসলাম নির্জন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক আসাদুজ্জামান। বিজয়ীদের মধ্য প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন পটুয়াখালী সুহৃদের যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদা আক্তার রিমি, রাজবাড়ী সুহৃদের সাধারণ সম্পাদক রবিউল রবি, উপদেষ্টা ডা.
সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, নতুন সময়ে নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। তরুণরাই আগামী দিনের পথ নির্মাণ করবে। সমাজের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার পথ খুঁজতে হবে। তরুণদের এমন কাজে সম্পৃক্ত করার পেছনে আমাদের উদ্দেশ্য, তারা সমাজের জন্য ভালো কাজ করবে এবং নতুনদের সেই পথে নিয়ে আসবে।
আবু সাঈদ খান বলেন, সংগঠন হলো তারুণ্যের মিলনমেলা। এখান থেকে নেওয়ার আছে, তেমনি দেওয়ার আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঙক্তির মতো– ‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে।’ সংগঠনের মাধ্যমে ভালো কবি, লেখক ও সংগঠক তৈরি হতে পারে। দেশ ও মানুষের সমৃদ্ধির জন্য সংগঠন চর্চা জরুরি।
শরীফুল ইসলাম বলেন, সুহৃদরা সমকাল পরিবারের সদস্য। আমাদের সামর্থ্য অল্প, কিন্তু প্রত্যাশা অনেক। আপনাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। আমরা যে কোনো প্রয়োজনে আপনাদের পাশে আছি।
রফিকুল ইসলাম রঞ্জু বলেন, আমরা সুহৃদদের সঙ্গে আছি। যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের স্মরণ করবেন। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন, মানুষের পাশে থাকবেন, দেশের পাশে থাকবেন। আপনাদের জন্য শুভকামনা।
মনিরুল ইসলাম বলেন, সুহৃদরা ব্যক্তিগত উৎকর্ষের পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করছেন, এটি ধরে রাখতে হবে।
সাহাদাত হোসেন পরশ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাবস্থায় আমি সুহৃদ সমাবেশের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এ সময়ের সুহৃদদের সঙ্গে আবার মিলিত হতে পেরে ভালো লাগছে। আপনারা সমকালের অ্যামবাসাডর। আপনাদের দায়িত্ব অনেক।
বিজয়ী ইউনিট যাচাই-বাছাইয়ের বিষয়ে হাসান জাকির বলেন, অনেকগুলো সক্রিয় ইউনিট থেকে তিনটি ইউনিট বাছাই করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। অনেকেই ভালো কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ভালো কাজের মূল্যায়ন হলো আজ। এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা মূলত প্রতিটি সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাই।
বিজয়ীদের পক্ষে পটুয়াখালীর হামিদা আক্তার রিমি, রাজবাড়ীর রবিউল রবি, এডাস্টের শারমিন আক্তার এবং ঈশ্বরদীর আব্দুল আলিম বিশ্বাস ও ডা. সাহেদ ইমরান প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের পাশাপাশি ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড
ইউনিভার্সিটি, পুরান ঢাকা, টঙ্গী, মিরপুর, মহাখালী, তিতুমীর কলেজসহ ঢাকার সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন। ২০২৩-২৪ সালের কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে জেলা, উপজেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ‘সেরা সুহৃদ নির্বাচন’ উপকমিটি মাধ্যমে চার ইউনিটকে নির্বাচিত করা হয় সেরা হিসেবে।
আলোচনা শেষে একে একে ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের সুহৃদরা একত্র হন টাইমস মিডিয়া ভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে। সেখানে সবার জন্য ইফতার ও রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক বাহাউদ্দিন আল ইমরান, ফাহাদ আনোয়ার, আবুল হোসেন, রিফতি আল জাবেদসহ অন্য সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন। v
সুহৃদ ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপন দ র ল ইসল ম স হ দর ক জ কর আম দ র ক ত কর র জন য সমক ল স গঠন ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি