সাভারের হেমায়েতপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা একটি পোশাক কারখানা চালু, ছুটি বৃদ্ধিসহ আরও কয়েকটি দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।

পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের অনুরোধে সড়ক থেকে সরে পাশে অবস্থান নেন তাঁরা।

জিনস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড নামের কারখানাটি হেমায়েতপুরের ঋষিপাড়া এলাকায় অবস্থিত। আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কর্তৃপক্ষ আট দিনের ছুটি ঘোষণা করে। এর মধ্যে সরকারি ছাড়া বাকি ছুটি শ্রমিকদের অর্জিত এবং জেনারেল ডিউটির মাধ্যমে সমন্বয় করার কথা। এ ছাড়া মালিকপক্ষ অতিরিক্ত আরও এক দিন ছুটি দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দাবি ১০ দিন ছুটির। একই সঙ্গে ঈদের আগে চলতি মাসের ২০ দিনের বেতন এবং ওভারটাইমের টাকাও পরিশোধের দাবি জানান তাঁরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক শ্রমিক বলেন, গতকাল ছুটি ছিল। ওভারটাইমের টাকার দাবিতে আন্দোলন করার সময় কয়েকজন বহিরাগত কারখানায় প্রবেশ করেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়। একজন কর্মকর্তা আহত হন। এরপর কারখানার পক্ষ থেকে মামলা হয়। ওই মামলায় কয়েকজন শ্রমিককে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার কারখানায় গিয়ে দেখেন, কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে মামলা ও শ্রমিক গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, কারখানায় ভাঙচুর, সহিংসতা বা এমন কোনো ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কোনো শ্রমিক গ্রেপ্তারের বিষয়টিও সঠিক নয়। কারখানায় ভাঙচুর, কর্মকর্তাদের মারধরে প্রকৃত ঘটনা, শ্রমিকদের প্রকৃত দাবি এবং শ্রমিকদের কেউ ব্যবহার করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন কি না, এমন বিষয়ে জানতে কয়েকজন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

কারখানাটির কর্মকর্তারা জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমে আট দিনের ছুটি নির্ধারণ করেন কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে তিন দিন সরকারি ছুটি, এক দিন শুক্রবার, তিন দিন সাধারণ ছুটির জন্য কাজ করেছেন শ্রমিকেরা। এ ছাড়া মালিকপক্ষ অতিরিক্ত আরও এক দিন ছুটি দিয়েছেন। পরে ছুটি–সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়ার সময় শ্রমিকেরা ১০ দিনের ছুটির দাবি জানান। এ সময় শ্রমিকদের বলা হয়, অতিরিক্ত আরও এক দিন ছুটি দেওয়া হবে, যা পরে কাজের মধ্য দিয়ে সমন্বয় করে নেওয়া হবে। কিন্তু শ্রমিকেরা বিষয়টি মেনে নেননি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চলতি মাসের ২০ দিনের বেতন পরিশোধ করা হবে বলেও শ্রমিকদের জানানো হয়। শ্রমিকেরা ওভারটাইমের টাকা দাবি করলে সেটি এ মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।

কারখানাটির ব্যবস্থাপক (এইচআর) মো.

স্বপন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করছি।’

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা কিছু দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারখানায় ভাঙচুর, সহিংসতা বা এমন কোনো ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কোনো শ্রমিক গ্রেপ্তারের বিষয়টি সঠিক নয়। কারখানায় ভাঙচুর, কর্মকর্তাদের মারধরে প্রকৃত ঘটনা, শ্রমিকদের প্রকৃত দাবি এবং শ্রমিকদের কেউ ব্যবহার করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন কি না, এমন বিষয়গুলো জানতে কয়েকজন শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ কর মকর ত এক দ ন ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ