গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় সাবেক আনসার সদস্য ওমর ফারুককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.

শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আজ শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০ মার্চ ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁকে আটকের পর প্রথমে তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করলে তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৮ মে।

শুনানির সময় ওমর ফারুককে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।

পরে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় মোহাম্মদপুরে ওমর ফারুক কোনো উসকানি ছাড়া একটি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের ওপর গুলি ছোড়েন।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় সময় বাড়ল

১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার আসামি মো. মধু মিয়া তালুকদারকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এই মামলার সারমর্ম জমা দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়। আগামী ১৮ জুন এই মামলার সারমর্ম জমার দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

শুনানিতে আজ প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নতুন। ফলে আগের সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাই এই মামলার সারমর্ম জমা দেওয়ার জন্য সময় প্রয়োজন।

আরও পড়ুনভিডিও দেখে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ‘সরাসরি গুলি করা’ আনসার সদস্য গ্রেপ্তার২০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওমর ফ র ক প রস ক সদস য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ