অর্ধেক বেতন পরিশোধেও পিছিয়ে অনেক কারখানা
Published: 27th, March 2025 GMT
সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পের সব কারখানা শ্রমিকের ঈদ বোনাস দেয়নি। চলতি মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধেও পিছিয়ে আছে অনেক কারখানা। এর বাইরে বন্ধ থাকা কয়েকটি কারখানার বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ নিয়ে আগে থেকেই সমস্যা চলছে।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
ঈদের আগে শ্রম পরিস্থিতির পাশাপাশি শিল্প খাতের শ্রমিকদের বেতন–বোনাস ও ছুটি–সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনার জন্য ১২ মার্চ সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের এই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাসসহ সব পাওনা ২০ রমজানের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। মালিকপক্ষকে চলতি মার্চ মাসের অন্তত ১৫ দিনের বেতনও দিতে হবে। এর পাশাপাশি রপ্তানি প্রণোদনার দুই হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে সরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ কয়েকটি জেলার অন্তত ৪৩টি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের বেতন ও ভাতা পরিশোধ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি কারখানার সংকট পুরোনো। এই কারখানাগুলোর শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। ঈদের ছুটি ও বোনাস বাড়ানোর জন্যও আন্দোলনে নেমেছেন কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে বকেয়া টাকার দাবিতে মানববন্ধন করেন মাহমুদ জিনস কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারীরা। তাঁরা বলেন, মাসের পর মাস তারিখ দিয়েও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করছে না মালিকপক্ষ। ঈদের আগে তাঁদের বকেয়া এক মাসের বেতন ও বার্ষিক ছুটির অর্থ পরিশোধের কথা। এই কারখানা দিয়ে মালিক আরও ৪-৫টি কারখানা করেছেন, তাহলে তাঁরা কেন বকেয়া অর্থ পাবেন না—এই প্রশ্ন করেন শ্রমিকেরা।
অবশ্য ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নির্বিঘ্ন করতে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। চলতি সপ্তাহে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান, সড়ক অবরোধ ও বিজিএমইএ ভবন অবরুদ্ধ করার মতো ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ক্ষতিপূরণ পরিশোধ না করায় গত মঙ্গলবার বন্ধ থাকা ১২টি তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এগুলো হলো রোর ফ্যাশন, স্টাইলক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান্স, ডার্ড গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান, মাহমুদ গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠান, টিএনজেড গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে শুধু স্টাইলক্রাফট চালু রয়েছে।
জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা বাবুল আখতার বলেন, সরকারের আগে থেকে কঠোর হওয়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা জটিল হতো না। বর্তমানে কারখানার মালিকের সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক কিংবা বিজিএমইএ বা বিকেএমইএর তহবিল থেকে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করা প্রয়োজন। সেটি সম্ভব না হলে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের যেভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেভাবেই সমস্যাযুক্ত কারখানার শ্রমিকদের পাওনা মেটানো উচিত।
বেতন-ভাতা পরিস্থিতি
ম্যাপড ইন বাংলাদেশের (এমআইবি) ডিজিটাল মানচিত্র অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা আছে ৩ হাজার ৫৫৫টি। এর মধ্যে বিজিএমইএর সদস্য সচল কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ১০৭। গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ৯৪৪টি (৯২ শতাংশ) কারখানা শ্রমিকের ঈদ বোনাস দিয়েছে। আর মার্চ মাসের অর্ধেক বেতন দিয়েছে ৭৬১টি (৩৬ শতাংশ) কারখানা। এখন পর্যন্ত ১৬টি কারখানা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেয়নি।
অন্যদিকে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সচল সদস্য কারখানা ৬১৩টি। তার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কারখানা ঈদ বোনাস দিয়েছে। চলতি মাসের অর্ধেক বেতন প্রায় ৫০ শতাংশ কারখানা দিয়েছে। এখনো ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেয়নি দুটি কারখানা।
জানতে চাইলে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান প্রথম আলোকে বলেন, ২-৩টি কারখানা ছাড়া সমস্যা নেই। সেগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে। অধিকাংশ কারখানাই বৃহস্পতিবার (আজ) শ্রমিকদের পাওনা দিয়ে ঈদের ছুটি দেবে বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলার ১৩টি বস্ত্র ও তৈরি পোশাক কারখানার ঈদ বোনাস অথবা চলতি মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করেন ৮ হাজার ৮৮৮ শ্রমিক। কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে এসিএস টেক্সটাইল, টোটাল ফ্যাশন, অবন্তি কালার টেক্স, ক্রোনি অ্যাপারেলস, তোহা নিট ফ্যাশন, ইউরো নিট সোসিং, জননী নিট ফ্যাশন, এশিয়ান টেক্সটাইল, স্টারলেট কম্পোজিট, স্টারলেট অ্যাপারেলস, ফোর ডিজাইন, ইয়াংথ্রি ফ্যাশন ও এক্সাল্ট অ্যাপারেলস।
গাজীপুরের বস্ত্র ও তৈরি পোশাক কারখানা নিয়েও শিল্প পুলিশ প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২৫টি কারখানা বেতন বা ঈদের বোনাস পরিশোধ করতে পারে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারখানাগুলোতে কাজ করেন ১৭ হাজার শ্রমিক। এসব কারখানার মধ্যে রয়েছে হংকং ফ্যাশন, এনআর ফ্যাশন, আলমা নিটওয়্যার, বেসিক ক্লোথিং, ইন্ট্রামেক্স, স্বাধীন গার্মেন্টস, সোয়ান সোয়েটার, হোম টেক্সটাইল, ন্যাশনাল ফ্যাশন, এইচডিএফ অ্যাপারেলস, জারা কম্পোজিট, আর জে নিটওয়্যার ইত্যাদি।
সাভার-আশুলিয়া এলাকায় ১ হাজার ৮৬৩ শিল্পকারখানা রয়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই তৈরি পোশাক। গতকাল পর্যন্ত অর্ধেক কারখানার বোনাস বাকি। চলতি মাসের অর্ধেক বেতন বাকি ৮ শতাংশ কারখানার। এখনো ফেব্রুয়ারির বেতন বকেয়া ৯ শতাংশ কারখানার।
জানতে চাইলে আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বেতন-ভাতা নিয়ে ঝামেলা আছে। তিনি আশা করছেন কালকের দিনই (আজ বৃহস্পতিবার) অনেক কারখানা বোনাস ও বেতন দেবে। এটা শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
সংকট বাড়িয়েছে বন্ধ কারখানা
ময়মনসিংহের ভালুকার রোর ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ গত জানুয়ারিতে কারখানা লে-অফ করে। এই কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ১ হাজার ৩৭৬। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে বেতন-ভাতা বাবদ এই কারখানার শ্রমিকের পাওনা ৭০ লাখ টাকা। জানুয়ারি মাসের বেতন ও লে-অফের ক্ষতিপূরণ পাবেন তাঁরা।
দাবি আদায়ে গত রোববার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনের সামনে অবস্থান নেন রোর ফ্যাশনের শ্রমিকেরা। পরদিন সারা দিন বিজিএমইএ ভবনের ফটক অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা। পরে মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। রোর ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুল ইসলাম। যদিও তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের একই মালিকের স্টাইলক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেড দুই বছর আগে আর্থিক সংকটে পড়ে। তখন শ্রমিক ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ করা হয় ইয়াং ওয়ান্স। অল্প শ্রমিক দিয়ে স্টাইলক্রাফট চলছে। তবে প্রায় ২ হাজার শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওনা রয়েছে ২১ কোটি টাকা। তার মধ্যে বকেয়া বেতন ৬ কোটি টাকা। চলতি মাসের শুরুতে ত্রিপক্ষীয় সভায় ঈদের আগে মোট বকেয়া বেতনের ২৫ শতাংশ অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দেন মালিক। তবে শ্রমিকেরা সেটি প্রত্যাখ্যান করে মোট বকেয়ার ২৫ শতাংশ দাবি করেন।
বকেয়া পাওনা আদায়ে স্টাইলক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকেরা গত রোববার শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হয়ে রাম প্রসাদ সিং (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়। এই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস আলমাস রহমান।
গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপ আর্থিক সংকটে পড়ে গত বছর থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করছে না। এখনো ডিসেম্বর মাসের ২০ শতাংশ এবং জানুয়ারি মাসের অর্ধেক বেতন বাকি। গত ফেব্রুয়ারির বেতন ২০ মার্চ ও ঈদ বোনাস ২৩ মার্চ দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে চলতি সপ্তাহে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন শ্রমিকেরা। এই গ্রুপের শ্রমিক সংখ্যা ৪ হাজার। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহদাৎ হোসেন শামীম।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত বিজিএমইএর সদস্য চার-পাঁচটি কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধে সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার; প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য প র লস প রথম আল ব ক এমইএ ব জ এমইএ পর স থ ত পর শ ধ ন ঈদ ব ন স দ র বক য় অবস থ ন গতক ল প সরক র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করতে বলেছে মার্কিন প্রতিনিধিদল
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক কমাতে হলে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর পাশাপাশি শ্রম আইন সংশোধনপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে বলেছে ঢাকা সফররত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে আজ সোমবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠক করে এমনটাই বলেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে সংগঠনটির সহসভাপতি মো. রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ আবদুস সালাম প্রমুখ মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে আরও ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। ব্রেন্ডেন লিঞ্চ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মার্কিন প্রতিনিধিদল বিজিএমইএর নেতাদের স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে পাল্টা শুল্ক নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে এখনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। ফলে পাল্টা শুল্কের হার সেটি আরও কমানোর সুযোগ রয়েছে। তার জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যঘাটতি এবং শ্রম আইন সংশোধনপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্যঘাটতি কমানোর বিষয়ে আমরা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি, ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি শুরু হয়েছে। এ ছাড়া গম, এলএনজিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির প্রক্রিয়াও চলছে। এসব পণ্য আমদানি হলে বাণিজ্যঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে। এ ছাড়া শ্রম আইন সংশোধনের ১২৪টির মধ্যে ১২২টির বিষয়ে আমরা ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে একমত হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়েও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো যাবে। তা ছাড়া আইএলওর কনভেনশন অনুসমর্থন নিয়েও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
বিজিএমইএর সভাপতি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা কোনো পণ্য উৎপাদনে ওই পণ্যের মোট মূল্যের কমপক্ষে ২০ শতাংশ যদি দেশটির উপকরণ বা কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তাহলে ওই ২০ শতাংশের ওপর পাল্টা শুল্ক প্রযোজ্য না হওয়ার একটি বিষয় আমরা জেনেছি। সেটি পরিষ্কার করার বিষয়ে আমরা মার্কিন প্রতিনিধিদলকে অনুরোধ করেছি। তাঁরা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। তাঁরা দ্রুতই জানাবেন।’
পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলটি। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে গতকাল রোববার সচিবালয়ে বৈঠক করে প্রতিনিধিদল। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নাজনীন কাউসার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সফররত মার্কিন দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গেও বৈঠক করবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।