বেরোবিতে হঠাৎ আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
Published: 27th, March 2025 GMT
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ আবাসিক হল বন্ধের ঘোষণা করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন আর রশিদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে হল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, জুমাতুল-বিদা, শব-ই-ক্বদর ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো আগামী ২৮ মার্চ (শুক্রবার) থেকে আগামী ৪ এপ্রিল (শুক্রবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এদিন সকাল ১০টায় যথারীতি হলসমূহ খুলে দেওয়া হবে।
এদিকে হঠাৎ করে হল বন্ধের ঘোষণার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, কোনো ছুটিতেই আবাসিক হল বন্ধ হয় না। অনেকের বাসা দূরে, অনেকেই আবার চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেজন্য ঈদের ছুটিতে তারা বাসায় যান না। এমন সময় হল বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে, যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বেশিরভাগ মেস বন্ধ। ঈদের তিনদিন আগে কোথায় যাবেন তারা। এছাড়া হলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরাও থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পেইজে হল বন্ধের নোটিশটি পোস্ট করা হলে তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষার্থীরা।
ওই ফেসবুকে পোস্টে মিলন চন্দ্র বর্মন নামে এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, “তাহলে বেরোবির শিক্ষকদের আবাসিক কোয়ার্টারগুলোও বন্ধের নোটিশ দেওয়া হোক। যতসব, ছাগল দিয়ে ভর্তি।”
মাইদুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে কোনোভাবেই সমর্থন করছি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি যে, তারা ঈদের ছুটিতে বাড়িত যাবে কি না? অনেকেই বলেছে, তারা হলেই অবস্থান করবে। হলে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী থাকেন। প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসসহ ঈদ উৎসবে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাজেট থাকে। হল প্রশাসন সেই বাজেট নিজেদের পকেটে ভরার সুব্যবস্থা করেনি তো আবার? যদি তাই করে, তাহলে সেটা হবে চরম বৈষম্য।”
শহীদ মুখতার ইলাহী হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থী ও রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-সদস্য সচিব মো.
এ বিষয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, “আবাসিক হল বন্ধের নোটিশ প্রশাসন ও প্রাধ্যক্ষ বডির সঙ্গে আলোচনা করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের হলে মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী আছেন। তাও তাদের বাড়ির রংপুরের আশেপাশে। তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা কাল চলে যাবেন বলে আমাদের জানিয়েছে।”
বিজয়২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ আমির শরিফ বলেন, “আমরা আগামীকাল হল বন্ধের নোটিশ দেব। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন আর রশিদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে প্রাধ্যক্ষের মাধ্যমে সব হল চেক করিয়েছি। দুই হলে যে কয়েকজন আছে, তারা ঈদের আগেই বাড়িতে চলে যাবে। সবাই বাড়িতে চলে গেলে তো হল এমনিতেই ফাঁকা হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে তো হল বন্ধ করতেই হবে। এখন এ নোটিশ দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো যারা হল ছেড়েছেন, তারা যেন ঈদের আগে হলে ফিরে না আসে। তারা হলে আসলে তো হল বন্ধ পাবে।”
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ধ র ন ট শ অবস থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
আরো পড়ুন:
মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
শনিবার (১ নভেম্বর) ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারো ১ নভেম্বর, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সকল সমবায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নে সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত অপরিহার্য। সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ কাজ আমরা অনায়াসে করতে পারি। সমবায় সমিতিগুলো শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানই নয় বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই। অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।”
তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, সমবায়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য ও সমতায় আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলি নতুন বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর বাসসের।
ঢাকা/সাইফ