লোহিত সাগরের মিসর উপকূলে একটি পর্যটকবাহী সাবমেরিন ডুবিতে অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা সবাই রাশিয়ার নাগরিক। আজ বৃহস্পতিবার মিসরের পর্যটন শহর হুরঘাদা উপকূলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হুরঘাদায় অবস্থিত রাশিয়ার কনস্যুলেট জানায়, সাবমেরিনটির নাম ‘সিন্দবাদ’। এতে ক্রু ছাড়া রাশিয়ার ৪৫ জন পর্যটক ছিলেন। দুর্ঘটনায় তাঁদের চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

রাশিয়ার কনস্যুলেট বলেছে, সাবমেরিনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের কাউকে নিজ নিজ হোটেলে এবং কাউকে হুরঘাদায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে অনেক পর্যটকের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে রাশিয়ার কনস্যুলেট।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারী দল ৪৫ যাত্রীর মধ্য থেকে ২৯ জনকে উদ্ধার করেছে।

লোহিত সাগর প্রবাল প্রাচীর ও সামুদ্রিক জীবনের জন্য বিখ্যাত। এটা মিসরের পর্যটনশিল্পে বেশ আকর্ষণীয়। মিসরে ক্রমে রুশ পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে।

গত নভেম্বরে মিসরে একটি পর্যটক ডাইভিং নৌকা শক্তিশালী একটি ঢেউয়ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়। এতে চার ব্যক্তি মারা যান। ৩৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। গত জুনে ঝড়ের কবলে পড়ে আরেকটি নৌকা ডুবে গিয়েছিল বলে তখন জানিয়েছিল, মিসরের পরিবেশ মন্ত্রণালয়। তবে এতে হতাহতের খবর জানা যায়নি।

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ২০২৪ সালে পর্যটন খাত থেকে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৪১০ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করেছে মিসর। এটা দেশটির সুয়েজ খাল থেকে আয়ের থেকে দুই গুণের বেশি। চাপের মুখে থাকা অর্থনীতিটির জন্য পর্যটন খাত বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ