‘ছুটি! ছুটি!’
আনন্দে উদ্বাহু হয়ে সে কি দৌড় রাজার।
শুন্ডির রাজা।
‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির শুন্ডি।
ছুটি কেমন নিশ্চয় তার শ্রেষ্ঠ একটা চিত্রকল্প এই সাদাকালো দৃশ্যটা। চিরকালীন। শুন্ডি রাজ্য সব মানুষের আছে। সব মানুষ শুন্ডির রাজা। ছুটি চায়। যদি পায় ওই।–আনন্দে উদ্বাহু হয়ে দে দৌড়! জীবন থেকে ছুটি পেয়ে দৌড় দেওয়ার কথা বলছি না। জগতে আছি, জাগতিক থাকি। আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি/ আহা হা হা হা।– আহা, ওহো, ওরে, হায় হায়– রবীন্দ্রনাথের আগে পরে বাংলা গানে তেমনভাবে নাই। কিছু জিনিস মনে হয় শুধু রবীন্দ্রনাথে থাকলেই ভালো।–কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়। যায় চলে যায় বসন্তের দিন। এই সময় ঈদের ছুটি পড়েছে। নয় দিনের ছুটি। মুস্তফা সিলুক বানায়। সে একটা সিলুক দিয়েছে,
: যে চায় সে পায়
যে চায় না সে ও পায়।
কী বল তো?
: কী?
: সরকারি ছুটি।
বোকা বোকা সিলুক।
‘মুস্তফা, তোরে আমি সিলুক সম্রাট উপাধি দিলাম।’
সিলুক সম্রাটের সঙ্গে ঢের ছুটি আমি ‘কাটায়েছি’। হেঁটে হেঁটে দিক বিদিকের রাস্তায়। সিলুক সম্রাটের সঙ্গে জীবনানন্দ দাশের কেন দেখা হয় নাই, চিন্তা করে পাই না।
‘দেখা হইসিল। নিরালা মানুষ।’
‘কে? জীবনানন্দ দাশ না তুই? টাউনের মানুষ তোরে চিনল না মুস্তফা।’
বর্তমানে সদা টলটলায়মান মুস্তফা স্কুল কলেজ লাইফে কবিতা পড়ত–সুরঞ্জনা, ওই খানে যেও নাকো তুমি। চিঠি লিখেছিল সুরঞ্জনাকে। টাউনের সেরা খান্ডারনি সুরঞ্জনা মুস্তফার বাসায় হামলা দিয়েছিল, ‘কোনখানে যাব না রে? আমি কার কাছে যাই?’
–পুরনো সেই দিনের কথা।
সুরঞ্জনা তিন সন্তানের জননী এখন। টাউনে যাবে এই ঈদের ছুটিতে?
আজ বৃহস্পতিবার। ২৭ তারিখ। ঈদের আগে শেষ কর্মমুখর দিন। স্কুল কলেজ আগে ছুটি হয়ে গেছে। আজ থেকে অফিস আদালত ছুটি। মানুষজন দ্যাশের বাড়িতে ছুটবেন। কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে, কেউ পরিবার পরিজনের কাছে।–আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে! জনমদুখী ভাইকে কল দিলাম, ‘জনমদুখী ভাই, কী করেন?’
‘আর কি দাদা!’
‘ঈদে কি করবেন? কোথাও যাবেন?’
‘আরে না-আ! কোথায় যাব?’
হায়রে! জনমদুখী ভাই একটা নিরানন্দ ঈদের ছুটি কাটাবেন! ছেলে মেয়ে থাকে বিদেশে। তারা নিয়ে গেছে তাদের মাকে। দুই বছর আট মাস ছাব্বিশ দিন আগে। ফেরত আর দিচ্ছে না। দুই বছর আট মাস ছাব্বিশ দিন ধরে জনমদুখী ভাই তুলেমূলে একা। কী দুঃখের কথা! জনমদুখী ভাই বই লিখেন।
বইয়ের ফ্ল্যাপে লেখা থাকে, ‘স্ত্রী তার একমাত্র প্রেমিকা।’ ছেলে মেয়ে এই দিকটা বিবেচনা করে দেখবে না? অবিবেচকের দল হয়েছে! প্রেমবিহীন, প্রেমিকাবিহীন জনমদুখী ভাই তবে আনন্দিত থাকবেন কী কী পয়েন্টে? এটা সম্ভব?
সম্ভব। চাবিকাঠি সেই মহিলার হাতে, ছেলে মেয়ে নাতি নাতকুরের সঙ্গে যিনি এখন মহা আনন্দে আছেন বৈদেশে। দয়াবতী মহিলা। নিশ্চয় সেই বন্দোবস্ত করবেন। ঈদের ছুটি বলে কথা।
‘চিন্তা করবেন না, জনমদুখী ভাই।’
ছুটি কী? ছুটি অর্থ?
চলন্তিকা আধুনিক বঙ্গ ভাষার অভিধান দেখলাম।
ছুটি] বন্ধ, দৈনিক কর্মসময়ের অবসান (‘পাঁচটায়–’। পর্বাদির জন্য কর্মের বিরাম (‘পূজার–’); কর্ম হইতে কিছু কালের জন্য অবকাশ গ্রহণ (‘তিন মাসের–’)। কর্ম হইতে নিষ্কৃতি (‘এইবার আমার–’)। (‘–হওয়া, লওয়া, দেওয়া, পাওয়া’)।
এই ছুটিটা ঈদের ছুটি। উৎসবের ছুটি। উৎসবমুখর এই ছুটিতে কম মানুষ কম দুঃখে থাকুক।
যত হাসি তত কান্না
বলে গেছেন রাম শন্না
আর?
যত দুঃখ তত আনন্দ
বলে গেছেন পরমানন্দ
পরমানন্দ কে?
শুন্ডির রাজা।
ছুটি! ছুটি!
এইসব ইতংবিতং লিখে কে আর?
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবকে এখনও দেশের সবচেয়ে বড় তারকা মানেন তামিম
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে মুখ খুলেছেন তামিম ইকবাল। সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারকা খ্যাতি বা ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এই দুই তারকার দূরত্বের পেছনে অন্য কারণ কাজ করেছে। তবে সেই দূরত্ব ঘোচানোর জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেও আক্ষেপ করেছেন তিনি।
তামিম বলেন, ‘অনেকে বলে, কে কার চেয়ে সেরা। কার এনডোর্সমেন্ট বেশি। এগুলো কিছুই আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করেনি। আমি সব সময় বলেছি, বাংলাদেশের স্পোর্টসে সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব। আমি নিজেই যখন এটা বলি, তখন তারকা খ্যাতি সম্পর্কের অবনতির কারণ হতে পারে না।’
তিনি জানান, বিসিবির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হলে সাকিব ও তার মধ্যকার দূরত্ব কমত। ‘তারা আলাদাভাবে কথা বলেছেন, কিন্তু দু’জনকে একসঙ্গে বসিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেননি’, বলেন তামিম।
তামিম আরও বলেন, অধিনায়ক থাকার সময় সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে তিনি নিজেই চেষ্টা করেছেন। যদিও সে চেষ্টা তখন সফল হয়নি, ভবিষ্যতে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা এখনও তিনি দেখেন।
এমনকি নিজের অসুস্থতার সময় সাকিবের সহানুভূতিশীল আচরণের কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করেন তামিম। বলেন, ‘আমার অসুস্থতার সময়ে সাকিব তার ফেসবুকে দোয়ার অনুরোধ করেছিল। তার বাবা-মা হাসপাতালে আমাকে দেখতে গিয়েছেন। আমরা দু’জনই পরিণত। সামনাসামনি হলে এবং নিজেদের মধ্যে কথা হলে সম্পর্ক উন্নত হতে পারে।’
তামিমের এই মন্তব্যেই বোঝা যায়, ব্যক্তিগত বিরোধ থাকলেও তামিম এখনও চান সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্কটা সুস্থতায় ফিরুক।