Samakal:
2025-06-16@09:00:41 GMT

ত্বরিত পদক্ষেপ কাম্য

Published: 27th, March 2025 GMT

ত্বরিত পদক্ষেপ কাম্য

দেশে নূতন করিয়া পক্ষী জ্বর তথা ‘বার্ড ফ্লু’ শনাক্তের খবর যথেষ্ট উদ্বেগজনক। বৃহস্পতিবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, যশোরের সরকারি একটি মুরগির খামারে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হইয়া দুই সহস্রাধিক মুরগির মৃত্যু হইয়াছে। সাত বৎসর পর পুনরায় এই ভাইরাসের সংক্রমণে স্বাভাবিক কারণেই খামারিরা উদ্বিগ্ন। ২০০৭ সালে দেশে প্রথমবার যখন বার্ড ফ্লু দেখা গিয়াছিল, ঐ বৎসর ১০ লক্ষাধিক মুরগি মারিয়া ফেলা হইয়াছিল। আমরা জানি, এই জ্বর মানবদেহেও সংক্রমিত হইতে পারে। যদিও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর অভয় দিয়াছে– এইবারের ফ্লু প্রাথমিক অবস্থায় থাকিবার কারণে মানুষের আক্রান্ত হইবার আশঙ্কা কম। আমরা মনে করি, ইহাতে নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না; বরং ফ্লু প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

স্বস্তির বিষয় হইল, শনাক্তের অব্যবহিত পরই বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রস্তুতি গ্রহণ করিয়াছে সরকার। নাজুক পোলট্রি খামারিদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়াছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সীমান্ত অঞ্চলে সতর্কতা, তৎসহিত কোনো মৃত বা সন্দেহজনক অসুস্থ হাঁস-মুরগি বা পাখি দৃষ্টিগোচর হইলে নমুনা সংগ্রহ করিয়া দ্রুত নিকটবর্তী গবেষণাগারে পরীক্ষা করিবার নির্দেশনা দেওয়া হইয়াছে। 

আমরা মনে করি, বার্ড ফ্লু মোকাবিলায় শুধু নির্দেশনাই যথেষ্ট নহে; উক্ত নির্দেশনা কতখানি প্রতিপালিত হইতেছে, উহার তদারকিও জরুরি। বিশেষত যশোরের আলোচ্য খামারে কীভাবে বার্ড ফ্লুর উদ্ভব হইল, উহার উৎস অনুসন্ধান প্রয়োজন। প্রাণীর মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয় বলিয়া ইহা উচ্চমাত্রার সংক্রামক।

কীটতত্ত্ববিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড.

কবিরুল বাশার সমকালকে বলিয়াছেন, যেহেতু প্রাথমিকভাবে যশোরে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হইয়াছে, তজ্জন্য তথা হইতে দেশের অন্যত্র ডিম বা মুরগি সরবরাহ বন্ধ করিতে হইবে। অঞ্চলভিত্তিক মুরগি পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপরেও তিনি গুরুত্ব আরোপ করিয়াছেন। সেই সঙ্গে শনাক্ত মুরগি পুঁতিয়া ফেলিবার পরামর্শ দিয়াছেন। 
বার্ড ফ্লু শনাক্তে উদ্বিগ্ন প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন বুধবার বিবৃতি দিয়া পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনয়নের তাগিদ দিয়াছে। বার্ড ফ্লুর সম্প্রসারণ ঘটিলে উহার প্রভাব শুধু পোলট্রি শিল্পেই সীমাবদ্ধ থাকিবে না; একই সঙ্গে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলিবে। শুধু তাহাই নহে; মানবকুলে উহার সংক্রমণ আরও ভয়াবহ হইতে পারে। তজ্জন্য প্রাথমিক অবস্থায় থাকা এই বার্ড ফ্লু প্রতিরোধী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ কাম্য। 

আমরা জানি, দেশের প্রান্তিক পোলট্রি খামারিরা সাধারণত সংকটে রহিয়াছে। অভিযোগ, করপোরেট সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিরা সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগির খাদ্য ও ছানা সংগ্রহ করিতে হিমশিম খাইয়া থাকে। খামারিদের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঋণ সহায়তা, ভর্তুকি, তৎসহিত প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া; প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারে সরবরাহের ব্যবস্থা করা, পোলট্রি খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি এবং ‘কন্ট্রাক্ট ফার্মিং’ বন্ধ করিবার ন্যায় দাবিও সংগঠনটি জানাইয়াছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হইয়াছে, তাহার পরই বাংলাদেশে পোলট্রি খামারে উহার সংক্রমণ দেখা গেল। বস্তুত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তরফ হইতে আরও পূর্বেই সীমান্তে সতর্কতা জারি জরুরি ছিল।
যশোর, তৎসহিত দেশের অন্যত্র বার্ড ফ্লুর সম্প্রসারণ ঘটা বিচিত্র নহে। এহেন দুর্বিপাক হইতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের আলোকে ভাইরাসটি নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাকরণের ব্যবস্থা থাকা অত্যাবশ্যক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ ত হইয় হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রান্তিকালে বিসিবির প্রস্তুতির অভাব দেখছেন তামিম

জাতীয় দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরতার প্রতীক তামিম ইকবাল মনে করছেন, সাকিব-মুশফিক-রিয়াদদের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার জন্য আগেভাগে প্রস্তুত ছিল না বিসিবি। এই পরিস্থিতিতে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), টাইগার্স ও ‘এ’ দলের কাঠামোতে আরও বেশি বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘পাঁচজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সরে গেছে, যাদের অভিজ্ঞতা ১৫-১৭ বছরের। তারা হাজারের বেশি ম্যাচ খেলেছে। এই মানের ক্রিকেটারদের বিদায়ে শূন্যতা আসবেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বোর্ড কি এই ক্রান্তিকালের জন্য প্রস্তুত ছিল?’

তামিমের মতে, জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই এখন ৭-১০ বছর ধরে খেলছেন। এই সময়টাতে তাদের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য বিকল্প খেলোয়াড় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলকে যতটা সম্ভব সুযোগ-সুবিধা দিন, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে এইচপি, টাইগার্স ও “এ” দলে বেশি ফোকাস করুন। এই জায়গাগুলোতে ভালো বিনিয়োগ না হলে জাতীয় দল সবসময় ধুঁকতেই থাকবে।’

তবে সামগ্রিকভাবে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আশাবাদী তামিম। তার ভাষায়, ‘আমরা কখনোই তিন সংস্করণে একসঙ্গে ভালো করিনি। এই দলটাকেও যদি সময় দেওয়া হয়, তারা ঘুরে দাঁড়াবে।’

ভবিষ্যৎ তারকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তামিম বেশ কয়েকজনের নাম তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘পেস বিভাগে তাসকিন আছে, নতুন নাহিদ রানা ভালো করছে। তাইজুল চমৎকার স্পিনার। হৃদয়, জাকের আলীরাও সম্ভাবনাময়। এদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ বড় তারকা হয়ে উঠতে পারে।’

সবশেষে তিনি বোর্ডের প্রতি ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস দিন, বোঝান– তারা বোর্ডের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ