ঈদে উৎসবের আমেজ ঘরে-বাইরে সব জায়গায়। এই দিনটিতে বাড়িতে অনেক অতিথি আসেন। এই দিনটিতে ঘরের সৌন্দর্য একটু পাল্টে নিতে পারেন। আর তাহলো ঘরের মেঝেতে নতুন একটি গালিচা পেতে দিতে পারেন। প্রকৃতিতে এখন বসন্ত আর গ্রীষ্মের মিশেল প্রভাব। এই সময় হালকা রঙের আরামদায়ক কার্পেট ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। যা চোখকেও আরাম দেবে। রুচির সঙ্গে রং আর মোটিফ বেছে নিতে পারেন। 

ফুল-ছাপের গালিচা: ফুল ছাপের কার্পেট প্রকৃতির সৌন্দর্য দেবে।  ফুলের নকশা আঁকা অথবা জলরঙে ফুলের ছাপ দেওয়া গালিচা ঘরের মেঝেতে বিছিয়ে দিলে দারুণ দেখাবে। রঙের ক্ষেত্রে পিচ, ল্যাভেন্ডার বা পুদিনা সবুজ রঙকে প্রাধান্য দিতে পারেন।

প্যাস্টেল রঙের গালিচা: এই গরমে চোখের আরাম পেতে বেছে নিতে পারেন প্যাস্টেল রঙের গালিচা। এ ছাড়া গোলাপি, হালকা নীল, অথবা ফ্যাকাশে হলুদও চোখে আরাম দেয়। হালকা রঙের গালিচা বিছালে ঘরও বড় মনে হয়। 

আরো পড়ুন:

‘নিপল ডিসচার্জ’ থেকে কি ক্যান্সার হয়?

ঈদের আগে বাড়িতে হেয়ার স্পা করার দুইটি পদ্ধতি 

পাতাবাহার গালিচা: বিভিন্ন রঙের পাতা আঁকা গালিচা দিয়ে বাইরের ঘরকে নজরকাড়া করে তুলুন। ফুলের এবং পাতার সমাহারে পরিবেশ সতেজ দেখাতে পারে।

হালকা পাটের গালিচা: ঘর সাজাতে যারা দেশের পণ্য প্রাধান্য দেন তারা পাটের তৈরি কার্পেট বেছে নিতে পারেন। হাতে বোনা, পরিবেশবান্ধব গালিচা ঘরকে রাখবে প্রাণবন্ত। ঘর দেখাবে খোলামেলা।

ডোরাকাটা এবং জ্যামিতিক গালিচা: ঘরে নতুনত্ব আনতে বিছিয়ে দিতে পারেন ডোরাকাটা বা জ্যামিতিক গালিচা।  এই ধরনের গালিচা প্যাস্টেল রঙের হলে ভালো হয়। এ ছাড়া হালকা সবুজ, হালকা নীল হলেও ভালো লাগবে।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে’

৯ মাস আগে বিধবা লাকি রানী দের (৪০) গোয়ালঘরের তালা কেটে দুর্বৃত্তরা চারটি গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর কানাডাপ্রবাসী এক ব্যক্তি তাঁকে একটি গাভি কিনে দেন। পরে গাভিটি একটি বাছুরের জন্ম দেয়। বাছুরটির বয়স হয়েছিল প্রায় সাত মাস। গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আবারও তাঁর গোয়ালঘরের দরজার তালা লাগানোর শিকল কেটে বাছুরসহ গাভিটি চুরি করে নিয়ে গেছে।

লাকি রানীর বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে। তাঁর স্বামী প্রশান্ত দে প্রায় চার বছর আগে হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। লাকির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রিয়া রানী দে স্থানীয় তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। ছোট মেয়ে রুহি রানী দে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর অকালমৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন লাকি। পাঁচটি গরু লালন-পালন করছিলেন। গরু বিক্রি করে সংসার আর দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাবেন ভেবেছিলেন। একটি গরু বিক্রিও করেন। এরই মধ্যে গত মার্চ মাসে বাকি চারটি গরু চুরি হয়ে যায়।

আজ শনিবার বিকেলে সরেজমিনে লাকির বাড়িতে গেলে তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘুম থেকে জেগে দেখেন, গোয়ালঘরের দরজায় তালা লাগানোর শিকল কাটা। ভেতরে গরু–বাছুর কোনোটাই নেই। জুড়ী থানার পুলিশের এক কর্মকর্তার মুঠোফোনের নম্বর ছিল তাঁর কাছে। ওই নম্বরে কথা বলে তাঁকে ঘটনাটি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাকি রানী বলেন, ‘গাইটা (গাভি) পাইয়া মনে কিছু শান্তি ফিরিয়া আইছিন। একটা বাছুরও পাইলাম। মনে করছিলাম, বাছুরটার বয়স ৯-১০ মাস হইলে বিক্রি করি দিমু। ৫০ হাজার টাকা লোন (ঋণ) করছিলাম বেশ আগে। ২০-২৫ হাজার টাকা পরিশোধের বাকি। বাছুর বিক্রি করে এই টাকাটা পরিশোধ করার চিন্তাভাবনা করছিলাম। চোর আমারে আবার পথে নামাই দিল। কার কপালে বাড়ি মারলাম, কে বারবার এই ক্ষতিটা করে?’

এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি লাকি। তিনি বলেন, ‘আগেরবার চুরির পরেও পুলিশরে জানাইয়া কোনো লাভ হইছে না। খামাখা করিয়া লাভ কিতা হইব? তবে কাইল (শুক্রবার) খবর জানানির পর তারা (পুলিশ) আইয়া খোঁজাখুঁজি করছে, চেষ্টা করছে।’

লাকি বলেন, ‘সংসারের নানা খরচ আছে। মেয়েরার লেখাপড়ায়ও খরচ লাগে। এইটা তো চালানি লাগব। এসএসসি পাসের পর আমার বিয়া হই গেছে। ৩-৪ হাজার টাকা বেতনের একটা চাকরি পাইলে করতাম। কিন্তু এসএসসি পাসে তো চাকরি পাওয়াও কঠিন। কিতা করতাম, কিলা চলতাম—এইটাই খালি ভাবি। ঘরে বেকার বসি থাকলে সংসার চলব কেমনে?’

আরও পড়ুনশূন্য গোয়ালের সামনে কাঁদতে কাঁদতে লাকী রানী বললেন, ‘চোরে মরা মানুষরে মারিয়া গেল’০৩ মার্চ ২০২৫

জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ থানার আরেক এসআই মুজিবুর রহমান লাকি রানীর বাড়িতে যান। খোঁজাখুঁজি করেও চুরি হওয়া গরু ও বাছুরের সন্ধান মেলেনি। তবে তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ