গাজীপুরে ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি, মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট
Published: 28th, March 2025 GMT
ঈদের বাকি আর তিন দিন। পরিবার সঙ্গে ঈদ পালন করতে শহর ছেড়ে গ্রামের পথে কর্মজীবী মানুষেরা। শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি হয়েছে। এতে বিকেল হতে মহাসড়কে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। ফলে বিভিন্ন পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়।
শিল্পঅধ্যুষিত গাজীপুরে ২১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা। এরমধ্যে ১১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ লাখ লাখ কর্মী। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ১৪৭৯.
এসব কারখানা ছুটি হওয়ার পর শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। অন্যান্য ঈদের থেকে এবার ঈদে তুলনামূলক বেশি ছুটি থাকায় অধিকাংশ মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় দিনভর স্বস্তি নিয়ে ঘরমুখী মানুষ যাতায়াত করলেও আসরের পর থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। চন্দ্রা থেকে তিন দিকে প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার যানজট দেখা দেখা দেয়।
এতে দুর্ভোগে পড়েছে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের শত শত যাত্রীরা। অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশে কয়েকটি পয়েন্ট থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পুলিশের তৎপরতার কারণে সেসব স্থানে ধীরগতিতে যানবাহন চলছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপ কমিশনার আশোক কুমার পাল বলেন, “ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সারাদিন কোথাও কোনো যানজট ছিল না। সন্ধ্যার পর শিল্প কারখানা ছুটি হওয়ায় মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। মানুষ বিভিন্ন পয়েন্টে উঠানাম করায় কিছুটা জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। চাপ থাকলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
নাওজোর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, “মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় জেলা, মেট্রোপলিটন ও হাইওয়ে পুলিশের চার হাজার সদস্য কাজ করছেন। চন্দ্রা এলাকায় সারাদিন যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। তবে সন্ধ্যার পর মানুষ আর অতিরিক্ত যানবাহনের চাপের কারণে তিনদিকেই কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের সারি হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যানজট নিরসনের দায়িত্ব পালন করছে।”
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর এসপি একে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, “শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৬৬ ভাগ কারখানা ছুটি হয়েছে। বাকি কারখানাগুলো শনিবারের মধ্যে ছুটি হয়ে যাবে। এছাড়াও কারখানাগুলো মার্চ মাসের বেতন ৮০ ভাগ ও ৯৫ ভাগ বোনাস পরিশোধ করেছে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য নজট র স ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে বিক্ষোভ করেছেন যমুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মিলগেট এলাকায় প্রথমে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে পরে আঞ্চলিক সড়কে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলে তাঁদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলা হলে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর যমুনা অ্যাপারেলস কারখানায় ২২ এপ্রিল বিশৃঙ্খলাসহ নানা অভিযোগে কারখানার ১১৪ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের সব পাওনা পরিশোধও করা হয়। শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে ২৩, ২৪ ও ২৫ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলে দেওয়া হলে সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। এরপর ওই দিন চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা। এর পর থেকে শ্রমিক অসন্তোষ এড়াতে কারখানা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আজ সকালে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা। প্রথমে তাঁরা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে তাঁরা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, ১০ দিন আগে কারখানার কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক মো. হুমায়ুন দুই দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে হুমায়ুন নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তাঁর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এবং হুমায়ুনকে মারধর ও গুম করার হুমকি দেন। একপর্যায়ে হুমায়ুনকে কারখানার নিচতলার গুদামঘরের বাথরুমে আটকে রাখা হয়। চার ঘণ্টা পর হুমায়ুন মুঠোফোনে সহকর্মীদের খবর দিলে তাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার জেরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১১৪ শ্রমিককে ছাঁটাই করে। শ্রমিক ছাঁটাই, গুমের হুমকি ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। এ সময় কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।