নব্বইয়ের নস্টালজিয়া উসকে দেন প্রিন্স
Published: 29th, March 2025 GMT
সিনেমার গান
ভক্তদের মতে, নব্বইয়ের দশকের অডিও অ্যালবামের রাজপুত্র ছিলেন প্রিন্স মাহমুদ। তাঁর সুরারোপিত প্রায় প্রতিটি গানেই বুঁদ ছিলেন ভক্ত-শ্রোতারা। কিন্তু ওই সময় সিনেমার গানে পাওয়া যায়নি তাঁকে। প্রস্তাব পেলেও করা হয়ে ওঠেনি। কারণ জানতে চাইলে প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘অডিওর গান নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ছবির গানের জন্য বেশি মনোযোগ দিতে হয়। অডিওর ব্যস্ততার কারণে সেই মনোযোগ দিতে পারিনি।’
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দার সংগীতে অভিষেক হয় প্রিন্স মাহমুদের। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে ‘জেলখানার চিঠি’ গানটিতে সুর করেন। এরপর ২০১৫ সালে অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’তে ‘প্রেম ও ঘৃণা’ গানটিও সুর করেন। মাঝে বিরতি শেষে প্রিন্স আবার সিনেমার গানে ফেরেন ২০২৩ সালে। হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার ‘ঈশ্বর’ গানটি মুক্তির পর ব্যাপক সাড়া ফেলে। এটি ছিল মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে তাঁর প্রথম গান। ২০২৪ সালে একই পরিচালকের রাজকুমার ছবির ‘বরবাদ’ ও ‘মা’ গান দুটির কথা, সুর ও সংগীতায়োজন করেন তিনি। এ গান দুটিও আলোচিত হয়।
গান শুনে যেন দর্শক সিনেমা দেখার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন, সেটাই লক্ষ্য থাকে প্রিন্স মাহমুদের। তাঁর ভাষ্যে, ‘হিমেল আশরাফ আমাকে এসে বললেন, ভাইয়া, প্রিয়তমার জন্য আপনাকেই দরকার। আপনি ভালো করতে পারবেন। আর ছবির কাহিনিকার প্রয়াত ফারুক হোসেনের কথা বলেন। ফারুকের প্রথম সিনেমার জন্য জেমস ভাইয়ের গান করেছিলাম। যেটা পরে হয়নি। কাজ করার সময় ফারুক ঠিক এভাবেই বলতেন, ‘ভাইয়া, এই গান আপনি ছাড়া কেউ বানাতে পারবে না। তখন কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়েই তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। খেয়াল করলে দেখবেন, “ঈশ্বর” গানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর সিনেমার গান ঠিক আগের মতো আলোচনায় চলে আসে। একটা সময় গান এমন মায়া ছড়াত যে গানের জন্য মানুষ হলে আসত। এই মায়া ছড়াতে চেয়েছিলাম। ঠিক তা–ই হয়েছে।’
এবারও চাঁদরাতে গান আসবে। সেটাও জংলি সিনেমার। এর মধ্যে বাবা-বাচ্চাকে নিয়ে “মায়াপাখি” নামে একটি গান করেছি। এটি ষাট-সত্তর দশকের আবহের গান। মাহতিম সাকিব গেয়েছেন। অবন্তী সিঁথিও আলাদাভাবে গেয়েছে। বাবা-মা তাঁর বাচ্চাকে বুকে জড়িয়ে যেন গানটি গাইতে পারেন, সেভাবেই তৈরি করেছি। হাবিবের জন্যও ভীষণ মায়াময় গান করেছি। চাঁদরাতে প্রকাশ পেতে পারে এটি।প্রিন্স মাহমুদগান জনপ্রিয়তা পাবে কি না, এ নিয়ে কখনো ভাবেন না তিনি। শ্রোতার মনে এভাবে মায়া জাগাতে পারাকেই সার্থকতা বলে মনে করেন।
‘জংলি’ প্রিন্স মাহমুদ মিউজিক্যাল
২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রিন্স মাহমুদের মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে। প্রায় আট বছর পর জংলি সিনেমার জন্য অ্যালবাম করলেন তিনি। এতে চারটি গানের কথা ও সুর তাঁর করা। এ প্রসঙ্গে এই সুরকার বলেন, ‘ছবির গল্পটা ভালো লেগেছে, পরিচালক এম রাহিম-সিয়াম আহমেদের আগের একটি ছবিতে কাজ করার কথা থাকলেও করা হয়ে ওঠেনি। তাই এবার করলাম। তা ছাড়া তাঁরা আমাকে বললেন, এটা “প্রিন্স মাহমুদের সুরে” হবে। আমরা নব্বই দশকে যেমন আপনার গান পেয়েছি, ওইভাবে আপনাকে ছবিতে পরিচয় করাতে চাই।” গল্প ভালো লাগল। সুন্দর সুন্দর গান ব্যবহারের সুযোগ আছে। তাই রাজি হয়ে যাই। দুটো গানে সেই মায়া ছড়ানো আছে। ভালোলাগার সম্ভাবনা আছে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’