ইউএসএআইডি বন্ধ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা ঘোষণা
Published: 29th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির কার্যক্রম কার্যকরভাবে বন্ধ করে দিতে গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিক একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, আজ (শুক্রবার) পররাষ্ট্র দপ্তর এবং ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) কংগ্রেসকে তাদের পুনর্গঠনের ইচ্ছা সম্পর্কে অবহিত করেছে, যার মধ্যে চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের মধ্যে ইউএসএআইডির কিছু কর্মকাণ্ড পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
রুবিও আরও বলেছেন, ইউএসএআইডির অবশিষ্ট কার্যক্রম, যেগুলো প্রশাসনের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে।
মার্কো রুবিও আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইউএসএআইডি অনেক আগেই নিজের আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ফলে এ সংস্থার অর্জন খুবই সামান্য এবং ব্যয় অনেক বেশি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পরপর ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক ত্রাণ তহবিল ৯০ দিনের জন্য আটকে দেন।
ওই আদেশের পর ইউএসএআইডির নানা প্রকল্পে নাটকীয়ভাবে কাটছাঁট শুরু হয়, শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তার জন্য সামান্য কিছু ছাড় দেওয়া হয়।
১৯৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি আইন পাসের মাধ্যমে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে ইউএসএআইডির যাত্রা শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুনইউএসএআইডির প্রায় সব কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার পদ বাতিল হবে২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ট্রাম্প প্রশাসন স্বাধীন সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর তাদের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ডেমোক্র্যাট সিনেটররা।
এক বিবৃতিতে ডেমোক্র্যাট সিনেটররা বলেন, পুনর্গঠন করা হলে কেবল ইউএসএআইডির চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করাই অসম্ভব হয়ে পড়বে না; বরং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর যে বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তার কারণে এর মূল লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটবে।
সিনেটররা আরও বলেন, এই প্রস্তাব অবৈধ, বিপজ্জনক ও অপর্যাপ্ত।
ট্রাম্প প্রশাসন বরাদ্দ আটকে দেওয়ার আগে ইউএসএআইডি প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বার্ষিক বাজেটের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশ্বে মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের ৪০ শতাংশের বেশি পরিচালিত হয় ইউএসএআইডির মাধ্যমে।
আরও পড়ুনইউএসএআইডির কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর ট্রাম্পের পরিকল্পনা স্থগিত করলেন মার্কিন বিচারক০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার কয়েক দিন পরই ইউএসএআইডির অধিকাংশ কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল এক স্মারকের মাধ্যমে ইউএসএআইডি কর্মীদের নীতিমালা অনুসারে বাধ্যতামূলক নয়, এমন সব পদ বিলুপ্ত করার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ওই স্মারকে ইউএসএআইডির ভারপ্রাপ্ত প্রধান জেরেমি লুইন আরও বলেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর আগামী কয়েক মাসে ইউএসএআইডির বেশির ভাগ স্বাধীন কার্যক্রম বন্ধ করার পরিকল্পনাও করেছে।
আরও পড়ুনইউএসএআইডির তহবিল স্থগিতে যে সব ক্ষতি হচ্ছে২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লো ইরান
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। রবিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর পর, সোমবার (১৬ জুন) ভোর হতে না হতেই দ্বিতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান।সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে ইরানের এটি দশম আক্রমণ।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সোমবার ভোরে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড সাধারণ ইসরায়েলিদের বোমা শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছে।
তেহরান টাইমস জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফায় সরাসরি আঘাত হানে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও, অনলাইনে প্রচারিত ফুটেজে হাইফায় একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে বলে দেখা গেছে। অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। তেল আবিবের একাধিক স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
রবিবার রাতে ইরান ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমি এবং কিরিয়াত গাটের কৌশলগত স্থানগুলোর পাশাপাশি হাইফার অন্যান্য অঞ্চলগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে ইসরায়েলের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
আগের দিনগুলোতে, ইরান ইসরায়েলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার এবং ১৫০টিরও বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করেছে।
শুক্রবার ভোরে তেহরানের আবাসিক ভবন ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা চালানোর পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
তেহরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন ইরানি সামরিক কর্মকর্তা, ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং ২২০ জনেরও বেশি ইরানি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইরান ইসরায়েলকে ‘অসহায়’ না করা পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ