সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের ঈদ সামগ্রী বিতর
Published: 29th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে দুই শতাধিক সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ মার্চ) বিকালে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ব সানারপাড় ওসমান গনি রোড এলাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
ঈদ সামগ্রী বিতরণের পূর্বে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, বিএনপির রাজনীতিটাই হলো সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে পরিচালিত হয়। আপনারা যে ভাবে চাইবেন, বিএনপি ওই ভাবেই পরিচালিত হবে।
জিয়াউর রহমান ওই ভাবেই জনগণের কাছ থেকে জানতেন, শুনতেন, কথা বলতেন এবং তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই ভাবে দেশ চালাতেন। খালেদা জিয়াও আপনাদের ভোটে তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন এবং আপনাদের প্রত্যাশা মতই দেশ চালাতেন। বিএনপি হচ্ছে জনগনের দল। জনগন যা চায় বিএনপিও তাই চায়।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে জনগনের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার কেরে নেয়া হয়েছিল। তারা রাতের ভোট দিনে করে জোরপূর্বক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিল। দেশে সীমাহীন লুটপাট এবং দূর্নীতি করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
যারা চেলা-চামুন্ডা ছিল তাদেরও বাড়ি-গাড়ী, অঢেল টাকা পয়সা এমনি বিদেশেও বাড়ী-গাড়ী রয়েছে। যারা আমাদের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার কেরে নিয়েছিল, যারা আমাদের ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়ে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের সবাইর বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো: আসলাম হোসেনের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন আর রশিদ ও মো: কামাল হোসেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের সদস্য আব্দুল করিম, লাল মিয়া, মহানগর যুবদলের সদস্য মাইনুল ইসলাম, নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মারুফ, বিএনপি নেতা মনির হোসেন খান, ফারুক হোসেন, যুবদল নেতা ফারহান আহমেদ রুবেল ও জিহাদুর রহমান শাহীনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ঈদ স দ ধ রগঞ জ থ ন ব এনপ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।