শাহজাহানপুরে কুটির শিল্প মেলায় বাহারি পণ্য, দর্শনার্থীদের ভিড়
Published: 3rd, April 2025 GMT
রাজধানীর শাহজাহানপুরে চলছে তাঁতবস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা। এ মেলা ঈদের আনন্দ আরো বাড়িয়েছে। মেলায় পুরুষদের বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, পায়জামা, ফতুয়া, শার্ট ও প্যান্ট; নারীদের থ্রিপিস, সালোয়ার, কামিজ, শাড়ি, ওড়না, গয়না ও প্রধাসন সামগ্রী এবং বাচ্চাদের জামা ও খেলনাসহ বৈচিত্র্যময় পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। আশপাশের এলাকার লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে মেলা দেখতে আসছেন অনেকে।
মেলায় শিশুদের বিনোদনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আছে বিভিন্ন ধরনের রাইড। বিশেষ করে স্লিপার রাইড, নৌকা দোলনা, নাগরদোলা, বোট রাইড, ট্রেন রাইড, ডার্ট গেম, বক্সিং পাঞ্চ গেম, থ্রি-ডি থিয়েটার ও খাবারের দোকানে দর্শরার্থীদের অনেক ভিড় দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে সবাই এসব রাইড উপভোগ করছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর শাহজাজানপুরের রেলওয়ে কলোনি মাঠ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
মাঠের পুরো অংশজুড়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। প্যান্ডেলের চারপাশ ঘিরে স্টল বানানো হয়েছে। মাঠের মাঝখানেও বেশকিছু স্টল আছে। মাঠের একদিকে চরকি ও আরেক দিকে নৌকা দোলনা রয়েছে। এছাড়া ট্রেন, নাগরদোলাসহ নানা রাইড স্থাপন করা হয়েছে। অস্থায়ী অবকাঠামো দিয়ে মেলার প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হয়েছে। মেলার ভেতরে টাওয়ার ও রঙিন পানির কৃত্রিম ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে। রাতে মেলার সৌন্দর্য আরো বহু গুণ বেড়ে যায়।
বিক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে, মেলায় খাবারের দাম বেশি রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
রাজধানীর শাহজাজানপুর এলাকার রেলওয়ে কলোনি মাঠে ১১ মার্চ শুরু হওয়া এ মেলা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলার দোকানগুলো খোলা থাকছে। মেলায় প্রায় ৩০টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তারা।
মেলায় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ ও পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করে মেলায় প্রদর্শন করা হয়েছে। তাই, বিভিন্ন পণ্যের দাম তুলনামূলক কম রাখা সম্ভব হচ্ছে। থ্রিপিস, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, ওড়না, শিশুদের পোশাক, ছেলেদের পাঞ্জাবি, পায়জামা ও শার্টসহ নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে মেলায়।
বাহারি ডিজাইন ও রঙের জামদানি ও সুতি শাড়িতে সাজানো স্টলগুলো ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। তাঁতবস্ত্র ছাড়াও মেলায় পাটপণ্যের গৃহসজ্জা সামগ্রী, বিছানার চাদর, শীতলপাটিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক কম দাম, ডিসকাউন্ট এবং সরাসরি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনার সুযোগ থাকায় মেলায় এসে কেউ খালি হাতে ফিরছেন না।
মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম থাকে। বিকেল থেকেই স্টলে তখন ভিড় বাড়ে।
মেলায় টাঙ্গাইলের তাঁতে শাড়ি ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়, জামদানি শাড়ি ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, সিল্ক শাড়ি ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, খাদি কাপড়ের শার্ট ও ফতুয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাঞ্জাবি ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, থ্রিপিস ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় এবং শিশুদের পোশাক মিলছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কিছু স্টলে গহনাও বিক্রি হচ্ছে।
খিলগাঁও থেকে মেলায় এসে ১ হাজার ৮০০ টাকায় শাড়ি কিনেছেন সাহানা বেগম। ভালো মানের পণ্য কিনতে পেরে খুশি তিনি।
বাসাবো থেকে বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় এসেছেন মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বিনোদনের জন্য অনেক রাইড আছে। মেলায় ঘুরে তারা খুব মজা পেয়েছে।
মেলায় শাড়ি, থ্রিপিস, সালোয়ার কামিজ বিক্রেতা রূপ টেক্সের দায়িত্বরত মো.
ঢাকা/এনটি/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫০০ ট ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ