রাজধানীর শাহজাহানপুরে চলছে তাঁতবস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা। এ মেলা ঈদের আনন্দ আরো বাড়িয়েছে। মেলায় পুরুষদের বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, পায়জামা, ফতুয়া, শার্ট ও প্যান্ট; নারীদের থ্রিপিস, সালোয়ার, কামিজ, শাড়ি, ওড়না, গয়না ও প্রধাসন সামগ্রী এবং বাচ্চাদের জামা ও খেলনাসহ বৈচিত্র্যময় পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। আশপাশের এলাকার লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে মেলা দেখতে আসছেন অনেকে।

মেলায় শিশুদের বিনোদনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আছে বিভিন্ন ধরনের রাইড। বিশেষ করে স্লিপার রাইড, নৌকা দোলনা, নাগরদোলা, বোট রাইড, ট্রেন রাইড, ডার্ট গেম, বক্সিং পাঞ্চ গেম, থ্রি-ডি থিয়েটার ও খাবারের দোকানে দর্শরার্থীদের অনেক ভিড় দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে সবাই এসব রাইড উপভোগ করছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর শাহজাজানপুরের রেলওয়ে কলোনি মাঠ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

মাঠের পুরো অংশজুড়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। প্যান্ডেলের চারপাশ ঘিরে স্টল বানানো হয়েছে। মাঠের মাঝখানেও বেশকিছু স্টল আছে। মাঠের একদিকে চরকি ও আরেক দিকে নৌকা দোলনা রয়েছে। এছাড়া ট্রেন, নাগরদোলাসহ নানা রাইড স্থাপন করা হয়েছে। অস্থায়ী অবকাঠামো দিয়ে মেলার প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা হয়েছে। মেলার ভেতরে টাওয়ার ও রঙিন পানির কৃত্রিম ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে। রাতে মেলার সৌন্দর্য আরো বহু গুণ বেড়ে যায়।

বিক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। তবে, মেলায় খাবারের দাম বেশি রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

রাজধানীর শাহজাজানপুর এলাকার রেলওয়ে কলোনি মাঠে ১১ মার্চ শুরু হওয়া এ মেলা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলার দোকানগুলো খোলা থাকছে। মেলায় প্রায় ৩০টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের পোশাক ও পণ্য বিক্রি করছেন উদ্যোক্তারা।

মেলায় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ ও পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করে মেলায় প্রদর্শন করা হয়েছে। তাই, বিভিন্ন পণ্যের দাম তুলনামূলক কম রাখা সম্ভব হচ্ছে। থ্রিপিস, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, ওড়না, শিশুদের পোশাক, ছেলেদের পাঞ্জাবি, পায়জামা ও শার্টসহ নানা ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে মেলায়।

বাহারি ডিজাইন ও রঙের জামদানি ও সুতি শাড়িতে সাজানো স্টলগুলো ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। তাঁতবস্ত্র ছাড়াও মেলায় পাটপণ্যের গৃহসজ্জা সামগ্রী, বিছানার চাদর, শীতলপাটিসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, তুলনামূলক কম দাম, ডিসকাউন্ট এবং সরাসরি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনার সুযোগ থাকায় মেলায় এসে কেউ খালি হাতে ফিরছেন না। 

মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম থাকে। বিকেল থেকেই স্টলে তখন ভিড় বাড়ে।

মেলায় টাঙ্গাইলের তাঁতে শাড়ি ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়, জামদানি শাড়ি ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, সিল্ক শাড়ি ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়, খাদি কাপড়ের শার্ট ও ফতুয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, পাঞ্জাবি ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, থ্রিপিস ৫০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় এবং শিশুদের পোশাক মিলছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কিছু স্টলে গহনাও বিক্রি হচ্ছে।

খিলগাঁও থেকে মেলায় এসে ১ হাজার ৮০০ টাকায় শাড়ি কিনেছেন সাহানা বেগম। ভালো মানের পণ্য কিনতে পেরে খুশি তিনি।

বাসাবো থেকে বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় এসেছেন মোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বিনোদনের জন্য অনেক রাইড আছে। মেলায় ঘুরে তারা খুব মজা পেয়েছে।

মেলায় শাড়ি, থ্রিপিস, সালোয়ার কামিজ বিক্রেতা রূপ টেক্সের দায়িত্বরত মো.

শাজাহান বলেন, ঈদের আগে বেচাকেনা ভালো হয়েছে। এখন তুলনামূলক একটু হচ্ছে। আশা করছি, পহেলা বৈশাখের আগে বেচাকেনা আরো বাড়বে।

ঢাকা/এনটি/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫০০ ট ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ