দুই দফা সুযোগ এসেও এক টেবিলে বসা না হলেও সব অনিশ্চয়তা কাটিয়েয় এবার বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মুখোমুখি বসছেন প্রতিবেশী দুই দেশের নেতা।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, শুক্রবার দুই নেতার এই বৈঠক হবে।

আরো পড়ুন:

বিমসটেকে এক টেবিলে খলিল-দোভাল আলাপচারিতা

সংখ্যালঘু নির্যাতনে ভারতকেই কালো তালিকায় ফেলার সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আট মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের আয়োজন হলো।

শফিকুল আলম বলেন, ব্যাংককে আজ (৩ এপ্রিল) বিমসটেক সম্মেলনের নৈশভোজে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়। তারা কুশলাদি বিনিময় করেছেন।

নৈশভোজে উভয় নেতা বেশ কিছু সময় ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলেছেন, যোগ করেন শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলের আরেকটি পোস্টে ছবি শেয়ার করে জানান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড.

খলিলুর রহমান ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বিমসটেকের নৈশভোজে এক টেবিলে বসে আলাপ করছেন।

বিমসটেকের নৈশভোজে একই টেবিলে আলাপরত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান ও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ছবি: প্রেস সচিব

বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে ব্যাংককে অবস্থান করছেন।

এই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে আগ্রহ জানায় ঢাকা। তবে বিষয়টি পরিষ্কার করছিল না নয়াদিল্লি। বিমসটেক সম্মেলেনেও ইউনূস-মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল ছিল।

অবশ্য বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং দুই নেতার বৈঠকের বিষয়ে ইতিবাচক তথ্য দেয়। বৃহস্পতিবার এসে বিষয়টির স্পষ্টতা এলো, বৈঠকে বসছেন ইউনূস ও মোদি।

তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন হয়। সেইদিন ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানালেও সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা বিরাজ করছিল। অবশেষে সম্পর্কের বরফ গললো।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত- দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে আগামীকাল বৈঠক হবে।”

বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছিলেন, অধ্যাপক  মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থাইল্যান্ড সফরের যে সূচি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি, তাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়টি ছিল না।

তার আগে ২৫ মার্চ পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “আমরা যে কোনো দেশের সাথে শীর্ষ পর্যায়ের যে বৈঠক, সেই বৈঠককে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”

“এবং আমরা আশা করি যে, যদি এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে স্থবিরতা, সেটা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।”

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘স্থবিরতা’ কাটাতে আগেও আগ্রহ দেখিয়েছে ঢাকা।  গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি। পরের মাস অক্টোবরে সামোয়াতে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনেও মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারত। কিন্তু দুই নেতার কেউই তাতে যোগ দেননি।

বিমসটেক সম্মেলনে অনিশ্চয়তার সেই মেঘ কেটে শুক্রবার মুখোমুখি বসছেন ইউনূস-মোদি।

২ এপ্রিল শুরু হওয়া বিমসটেক সম্মেলন শেষ হবে ৪ এপ্রিল। সেখানে উভয় নেতা ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে পৌঁছান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এই সম্মেলনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

বিমসটেক সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক রব র ইউন স ও ব ষয়ট বসছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ