অনিশ্চয়তা কাটলো, ইউনূস-মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুক্রবার
Published: 3rd, April 2025 GMT
দুই দফা সুযোগ এসেও এক টেবিলে বসা না হলেও সব অনিশ্চয়তা কাটিয়েয় এবার বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মুখোমুখি বসছেন প্রতিবেশী দুই দেশের নেতা।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, শুক্রবার দুই নেতার এই বৈঠক হবে।
আরো পড়ুন:
বিমসটেকে এক টেবিলে খলিল-দোভাল আলাপচারিতা
সংখ্যালঘু নির্যাতনে ভারতকেই কালো তালিকায় ফেলার সুপারিশ যুক্তরাষ্ট্রে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আট মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের আয়োজন হলো।
শফিকুল আলম বলেন, ব্যাংককে আজ (৩ এপ্রিল) বিমসটেক সম্মেলনের নৈশভোজে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়। তারা কুশলাদি বিনিময় করেছেন।
নৈশভোজে উভয় নেতা বেশ কিছু সময় ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলেছেন, যোগ করেন শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলের আরেকটি পোস্টে ছবি শেয়ার করে জানান, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড.
বিমসটেকের নৈশভোজে একই টেবিলে আলাপরত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান ও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ছবি: প্রেস সচিব
বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে ব্যাংককে অবস্থান করছেন।
এই সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে নয়াদিল্লির কাছে আগ্রহ জানায় ঢাকা। তবে বিষয়টি পরিষ্কার করছিল না নয়াদিল্লি। বিমসটেক সম্মেলেনেও ইউনূস-মোদি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল ছিল।
অবশ্য বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং দুই নেতার বৈঠকের বিষয়ে ইতিবাচক তথ্য দেয়। বৃহস্পতিবার এসে বিষয়টির স্পষ্টতা এলো, বৈঠকে বসছেন ইউনূস ও মোদি।
তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন হয়। সেইদিন ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানালেও সেই থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের শীতলতা বিরাজ করছিল। অবশেষে সম্পর্কের বরফ গললো।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারত- দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে আগামীকাল বৈঠক হবে।”
বুধবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছিলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থাইল্যান্ড সফরের যে সূচি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি, তাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়টি ছিল না।
তার আগে ২৫ মার্চ পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “আমরা যে কোনো দেশের সাথে শীর্ষ পর্যায়ের যে বৈঠক, সেই বৈঠককে আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”
“এবং আমরা আশা করি যে, যদি এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে স্থবিরতা, সেটা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।”
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘স্থবিরতা’ কাটাতে আগেও আগ্রহ দেখিয়েছে ঢাকা। গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি। পরের মাস অক্টোবরে সামোয়াতে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনেও মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারত। কিন্তু দুই নেতার কেউই তাতে যোগ দেননি।
বিমসটেক সম্মেলনে অনিশ্চয়তার সেই মেঘ কেটে শুক্রবার মুখোমুখি বসছেন ইউনূস-মোদি।
২ এপ্রিল শুরু হওয়া বিমসটেক সম্মেলন শেষ হবে ৪ এপ্রিল। সেখানে উভয় নেতা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে পৌঁছান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা এই সম্মেলনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।
বিমসটেক সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা।
ঢাকা/হাসান/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক রব র ইউন স ও ব ষয়ট বসছ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ
দুই মাসের মধ্যে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা’ পরিবর্তন করল সরকার। সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার সংশোধিত বিধিমালা গেজেটে প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ -এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এতে অন্যান্য বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছিল।
এরপর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন সভা, সেমিনার, বিক্ষোভ সমাবেশে সংগীত শিক্ষকের বদলে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেন। সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা না হলে তাঁরা আন্দোলনেরও হুমকি দেন।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকে কেন সংগীত শিক্ষক, বিরোধিতায় কারা, কী বলছেন শিক্ষকেরা২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় চার ধরনের শিক্ষকের কথা বলা ছিল। সেগুলো ছিল প্রধানশিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক (সংগীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)। সংশোধিত বিধিমালায় কেবল প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে।